আনন্দবাজার অনলাইনে অকপট তৃণা
প্রশ্ন: রিল করলে বেশি কাজ পাওয়া যায়?
তৃণা: সময়ের সঙ্গে তো নিজেকে রোজ বদলাতে হবে। শুধু অভিনয়ে মন দিলে এখন আর হবে না। রিল করি বলে জাতীয় স্তরে বিজ্ঞাপনের কাজে রিল করার প্রস্তাব পাই আমি। আসলে এখন অভিনেতা কী পরছে? নেটমাধ্যমে কী ভাবে আসছে?সব মাথায় রাখতে হবে। দর্শকরা কী ভাবে গ্রহণ করছে আমায়…সেটাই আসল কথা
প্রশ্ন: আপনাকে দর্শকরা কী ভাবে গ্রহণ করেছেন?
তৃণা: আমার মনে হয় প্রত্যকে অভিনেতার আলাদা আলাদা দর্শক থাকেন।
প্রশ্ন: যেমন?
তৃণা: আমাকে দর্শকেরা পছন্দ করেন। হাসি-খুশি, মজার, ‘পুতুল পুতুল’ মেয়ে ভাবেন। এখন এই সময় আমি যদি বিকিনি পরে ঘুরতে থাকি, তা হলে মনে হয় না আমার দর্শক সেটা মেনে নেবেন।
প্রশ্ন: সেটা কি ‘খড়কুটো’ ধারাবাহিকের ‘গুনগুন’ চরিত্রের জন্য?
তৃণা: হতে পারে। ‘গুনগুন’ দর্শকের মনে যে ভাবে বসে আছে বা আমি যে ভাবে স্বাভাবিক জীবনে থাকি, তা থেকেই হয়তো দর্শকের এমন মনে হয়েছে। আমিও আমার দর্শকদের হারাতে চাই না।
প্রশ্ন: একজন অভিনেতা তা হলে ‘গুনগুন’ হয়েই থেকে যাবেন?
তৃণা: না। আমিও অভিনেতা হিসেবে নেতিবাচক চরিত্রে নিজেকে দেখতে চাই। তৃণা একজন সিরিয়াল কিলারের চরিত্র করবে এটাও ভাবি। তবে এখনও সেই সময় আসেনি।
প্রশ্ন: তৃণার যদি বিকিনি পরতে ইচ্ছে হয়?
তৃণা: আমি কী পরব, কী খাবো? এটা সম্পূর্ণ আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার।
প্রশ্ন: অভিনেতাদের জীবনে কি ব্যক্তিগত বলে কিছু থাকে?
তৃণা: রাখতে চাইলেই থাকে। আমি নায়িকা, হতে পারে আমি ‘জনসাধারণের সম্পত্তি’। কিন্তু কাল রাতে আমি কি খেলাম, কার সঙ্গে ছিলাম, এটা আমি নিজে থেকে না জানালে কেউ কিন্তু জানতে পারবে না। আলিয়া ভট্ট যদি না জানাতেন উনি অন্তঃসত্ত্বা তা হলে কিন্তু কেউ জানতেন না। এখনও তো অনুষ্কা শর্মার মেয়ের মুখ দেখিনি আমরা, অথচ করিনার ছেলেদের দেখছি। জীবনের কোন অংশটা কে প্রকাশ করবেন, সেটা তাঁর বিষয়।
প্রশ্ন: অভিনেতারাই তা হলে ব্যক্তি জীবনের ছবি দিচ্ছেন। তা নিয়ে সাংবাদিকরা লিখলে দোষ?
তৃণা: সাংবাদিকরা লেখেন, সমালোচনা করেন। সমালোচনা হবেই। আমাকে প্রায়ই যদি একজন পুরুষের সঙ্গে কফি খেতে দেখা যায়, মানুষ ধরেই নেবে সেই পুরুষের সঙ্গে আমার গভীর সম্পর্ক তৈরি হচ্ছে। কিন্তু আমি যদি ছেলেটির সঙ্গে কফি খেতে যাই, আর চাই, যে সেটা কেউ জানবে না, তার রাস্তাও আছে। আমি সেই কফি খাওয়ার ছবি কোথাও দেব না। নিজস্বী তুলব না। ছবি দিলে তো কথা হবেই। একজন পরিচিত অভিনেত্রী আমায় এসে বলছিলেন, ‘‘আমার প্রেম নিয়ে অকারণ কথা হচ্ছে।’’ কিন্তু আমি খেয়াল করে দেখেছি, এই অভিনেত্রী আচমকাই একজন পুরুষের সঙ্গে রিল বানিয়ে যাচ্ছেন। সেগুলো দেখে লোকে কথা বলবে না? বলবে, কারণ আগে তো সেই অভিনেত্রীকে পুরুষের সঙ্গে রিল বানাতে দেখাই যায়নি। এটা তো তাঁর ক্ষেত্রে স্বাভাবিক। এই দিক নিয়েও ভাবতে হবে। কিছু ক্ষেত্রে অভিনেতারাও সমালোচনার পরিসর তৈরি করে দেন। আর যদি আমাকে নিয়ে নানা কথা হয়, তা হলে কোনটা ভুল আর কোনটা ঠিক সেটা বলার সাহসও রাখতে হবে । মানুষের মন এমনিতেই নেতিবাচক। তারকারা যদি মুখ না খোলে ভুলটাকে লোকে ঠিক হিসেবেই মেনে নেবেন।
প্রশ্ন: আপনি বিবাহিতা। কাজ পেতে অসুবিধে হয়?
তৃণা: আমার হয় না। বিয়ে করলে কি আমাকে ৪৫ বছরের মনে হবে, যে কাজ পাব না! তবে করিনা কপূর থেকে কাজল, বিয়ের পর সকলের কাজ কিন্তু কমে গিয়েছে। ওঁরা এ ভাবেই চেয়েছেন, তাই—ই হয়েছে। আমরা যদি পরিবারের কথা ভাবি, তাহলে আমাকে মেনে নিতে যে, দু’বছর আমার কাজ প্রায় হবেই না। ধরুন দেব-রুক্মিনী। ওঁরা এত দিন ধরে সুন্দর সম্পর্কে আছেন। তা হলে কি ওঁদের কাজ কমেছে? ঠিক এরকম সম্পর্কে আমি আর নীলও আছি। হ্যাঁ, আমাদের খাতায় কলমে সই হয়েছে। ওঁদের এখনও হয়নি। এতে কাজ কমে যাওয়া, বা কাজ না পাওয়ার সঙ্গে তার কোনও সম্পর্ক নেই।
প্রশ্ন: ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে গিয়ে নীল-তৃণার সম্পর্ক কেমন আছে? নীলের মহিলা ভক্তদের কী করে সামলান?
তৃণা: সম্পর্ক থাকলে ঈর্ষা কিন্তু থাকবেই। ঝগড়াও হবে। আমরা কিন্তু একে অপরকে কলেজ থেকেই খুব ভাল চিনি। ও কত দূর অবধি যেতে পারে, আমি জানি! আপনার কী মনে হয়, ইন্ডাস্ট্রিতে নীলের সম্পর্কে নিয়ে আমায় কেউ কিছু বলেনি? নীলের সঙ্গে কোথায়, কবে কী হয়েছে? কেন হয়েছে? সব জানি। তবে ওই সব কথার চেয়ে আমার কাছে আমার সম্পর্ক, স্বামী অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কে কী বলল? কিছু এসে যায় না। আমাদের একে অপরের প্রতি অগাধ বিশ্বাস। আমি মনে করি, সম্পর্ক তৃতীয় ব্যক্তির জন্য ভাঙে না। নিজেদের জন্যই নষ্ট হয়।
প্রশ্ন: কাজের কথায় আসি। সিনেমায় কাজের শুরুতেই অরিন্দম শীল, অঞ্জন দত্ত, সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ করছেন…
তৃণা: আমার ভাগ্য। তবে টেলিভিশন আমায় সব দিয়েছে। আজ আমি যা, তার সবটাই টেলিভিশনের জন্য হয়েছে।
প্রশ্ন: সুস্মিতাকে কেমন লাগছে? ও পরে এসে কিন্তু এগিয়ে যাচ্ছে…
তৃণা: যাক না। এই ইন্ডাস্ট্রিতে আমার ছ’ বছর হল। ও সবে এসছে। খুব ভাল কাজ করছে। আরও করুক। সুস্থ প্রতিযোগিতা তো থাকবেই। শুধু সুস্মিতা কেন? মধুমিতা, স্বস্তিকা সবাই ভাল কাজ করছে। আমি খুব খুশি টেলিভিশন থেকে সিনেমায় নায়িকারা আসছে। শাহরুখ খানও কিন্তু টেলিভিশন থেকেই এসছেন। আর চরিত্রে নয়, এখন সবাই টেলিভিশনের অভিনেতাদের নামে চেনেন। এটাই টেলিভিশনের সাফল্য।
প্রশ্ন: অভিনয়ের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা কী?
তৃণা: আমি শয্যাদৃশ্য করতে পারব না। খুব খোলামেলা দৃশ্যও করব না। আর এই ধরনের কাজের সুযোগ এলেও আমি জানি আমার স্বামী নীলও এটা করবে না।
প্রশ্ন: তাই নীলও করবে না?
তৃণা: না। করবে না। আমি যেমন শয্যাদৃশ্য করব না। নিজেকে সে ভাবে দেখতে চাইব না। তেমনি নীলকেও ওই ভাবে দেখতে পারব না। সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমরা সাম্যে বিশ্বাস করি। ও যা করবে না। আমিও করব না। ব্যস!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy