Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

মানুষই জবাব দেবেন, বিশ্বাস মদনের গলায়

অন্য দিনের তুলনায় সোমবার খানিক আগেই ঘুম থেকে উঠেছেন। নিরাপত্তার ঘেরাটোপে দিনভর উৎকণ্ঠা, পায়চারি, তার মধ্যে নেবুলাইজার ও অক্সিজেন নেওয়া হয়ে গিয়েছে।

অত্রি মিত্র
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:৩৬
Share: Save:

অন্য দিনের তুলনায় সোমবার খানিক আগেই ঘুম থেকে উঠেছেন। নিরাপত্তার ঘেরাটোপে দিনভর উৎকণ্ঠা, পায়চারি, তার মধ্যে নেবুলাইজার ও অক্সিজেন নেওয়া হয়ে গিয়েছে। দিনের শেষে অবশ্য সহ-বন্দিদের কাছে মুচকি হেসে মদন মিত্র বলে দিলেন, ‘‘সিপিএম আর নির্বাচন কমিশন অনেক চেষ্টা করেছে। কিন্তু চিন্তার কারণ নেই। জনগণের উপরে আমার বিশ্বাস আছে।’’

মদন মিত্রের যা-ই বিশ্বাস থাকুক, তা নিয়ে এ দিন মাথা ঘামায়নি কারা দফতর। বরং তাদের দিনভর চিন্তা ছিল, মদন মিত্রকে কেন্দ্র করে আলিপুর জেলে নতুন করে যেন কোনও অশান্তি না হয়। তাই আর পাঁচটা দিনের থেকে আলিপুর জেলের চেহারাটা সোমবার ছিল অনেকটাই আলাদা। বাইরের গেট থেকেই রক্ষীদের কড়া পাহারা। ভিতরের ফাঁকা জায়গায় অনাবশ্যক গাড়ির পার্কিং এ দিন নিষিদ্ধ ছিল। বন্দিদের সঙ্গে দেখা করতে আসা আত্মীয় ছাড়া বাইরের কারও প্রবেশ বারণ। আত্মীয়দের সচিত্র পরিচয়পত্র দেখালেই ভিতরে যাওয়ার ছাড়পত্র মিলছে। সংবাদমাধ্যমকে ঢুকতে দেওয়ার তো প্রশ্নই নেই। তবে কামারহাটির ভোট থাকায় এ দিন জেলের বাইরে মদন অনুগামীদের ভিড় ছিল না।

মদন মিত্রের পরিবার সূত্রে দাবি করা হয়েছে, শুধু জেলের বাইরে নয়, নিরাপত্তার ঘোরাটোপ ছিল জেলের ভিতরেও। এক ডেপুটি জেলারের নেতৃত্বে কারারক্ষীদের একটি দল দিনভর কড়া নজরদারি চালিয়েছে মদন মিত্রের চারপাশে। মদনের ঘনিষ্ঠ নেতাদের বক্তব্য, ‘‘দাদাকে এ দিন বাথরুমেও এক জন রক্ষী পাহারা দিয়েছে।’’

যদিও কারা দফতর সূত্রে এমন নজরদারির কথা অস্বীকার করা হয়েছে। কারা দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘কোনও নজরদারিই ছিল না। উল্টে মদন মিত্রের যাতে কোনও অসুবিধে না হয়, তা নিশ্চিত করতে তৃণমূলের সংগঠন করে এমন তিন-চার জন কারারক্ষীকেই তাঁর সঙ্গে রাখা হয়েছিল।’’ তবে দিনভর বাইরের জগতের সঙ্গে কার্যত যোগাযোগ ছিলই না মদনের।

আলিপুর জেলের এক রক্ষীর কথায়, ‘‘পরশু রাত থেকে মদনদার শরীরটা বেশ খারাপ যাচ্ছে। শ্বাসকষ্ট রয়েছে। তার মধ্যে ভোটের টেনশনে নতুন করে অসুস্থ হওয়ার ভয় পেয়েছিলাম আমরা। সে সব কিছু অবশ্য হয়নি।’’ ওই রক্ষী বললেন, ‘‘দিনভর প্রচুর জল ও সরবত খাওয়ানো হয়েছে মদনদাকে। তবে বেশ উৎকণ্ঠায় সারা দিন কাটিয়েছেন তিনি। বারবারই কামারহাটির খবর জানতে চেয়েছেন।’’

আর মদন কী বলেছেন?

ওই কারারক্ষী জানান, আলিপুর জেলের মন্দির ওয়ার্ডে বসে সিপিএমকেই দিনভর দুষেছেন মদন। বলেছেন, ‘‘আমি বেরোলেই ওদের ভোট উল্টে যাবে। এই ভয়ে আমাকে বাইরে বেরোতে দেয়নি। ভোটটাও দিতে দিল না।’’ তাঁর দাবি, ‘‘আফতাব আনসারির উপরেও এত কড়াকড়ি করা হয় না, যা আমার উপরে করা হয়েছে। মানুষই এর জবাব দেবেন।’’

রক্ষীদের কাছ থেকে টেলিভিশনে চলা কামারহাটির নানা খবর শুনেছেন। তা নিয়ে অবশ্য খুব একটা টেনশনের ছাপ পড়েনি পোড়খাওয়া নেতার মুখে। বারবার শুধু একটা কথাই বলেছেন, ‘‘মানুষ আমাকে ফেরাবেন না!’’

অন্য বিষয়গুলি:

assembly election 2016 madan mitra
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy