মার্কিন সাংবাদিক পিটার থিও কার্টিস। ছবি: এপি।
মুক্তি পেলেন মার্কিন সাংবাদিক পিটার থিও কার্টিস। রবিবার সকালে সিরিয়ার নুসরা ফ্রন্টের জঙ্গিরা তাঁকে রাষ্ট্রপুঞ্জের হাতে তুলে দেয়। তাঁর মুক্তিতে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
সিরিয়ায় কাজ করার সময়ে ২০১২-এ পিটার অপহৃত হন। মার্কিন নাগরিক হলেও তিনি দীর্ঘ দিন ইয়েমেন-এ বাস করছিলেন। ম্যাসাচুসেটস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তুলনামূলক সাহিত্যে পিএইচডি-র পর প্রথমে শিক্ষকতার কাজ করলেও পরে তিনি সাংবাদিকতার দিকে ঝোঁকেন। পশ্চিমী বিশ্বে জেহাদি ইসলামের প্রতি আকৃষ্টদের নিয়ে কাজ শুরু করেন। এই বিষয়ে কয়েকটি বইও লিখেছেন। কাজের জন্যই তিনি ইয়েমেনে থাকছিলেন। ইয়েমেনের বিভিন্ন ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইসলাম নিয়ে পড়াশোনাও করেছিলেন। সেখানকার একটি স্থানীয় সংবাদপত্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি।
সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পরে তিনি পশ্চিমী বিদ্রোহীদের নিয়ে কাজ করতে সিরিয়ায় যান। সেখানেই ২০১২-এ তাঁকে অপহরণ করা হয়। গত সপ্তাহে ইসলামিক স্টেট-এর (আইএস) জঙ্গিরা সাংবাদিক জেমস ফোলির মুণ্ডচ্ছেদ করার পরে পিটারের জীবন নিয়ে তাঁর পরিবার এবং মার্কিন প্রশাসনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল। অবশেষ পিটার মুক্তি পাওয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামা আনন্দ ও স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। সিরিয়ার অপহৃত বাকি সাংবাদিকদের পাশে থাকার জন্য সবার কাছে তিনি আবেদন করেছেন। পিটারের পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁর মুক্তির জন্য মার্কিন ও কাতার প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান হয়েছে।
তাবকো বিমানবন্দর দখল নিল আইএস জঙ্গিরা। ছবি: রয়টার্স।
পিটারের মুক্তির পিছনে কাতার সরকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে বলে জানা গিয়েছে। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে সুন্নি বিদ্রোহীদের সংগঠিত করতে কাতার ও সৌদি আরবের সরকার কাজ করেছিল। ফলে কাতারের সঙ্গে বিদ্রোহীদের ভালই যোগাযোগ ছিল। জানা গিয়েছে, পিটারকে অপহরণ করেছিল নুসরা ফ্রন্টের জঙ্গিরা। এই জঙ্গিদের সঙ্গে আল-কায়দার যোগাযোগও আছে। তবে কাতারের মধ্যস্থতার তারা পিটারকে ছেড়ে দিতে রাজি হয়। রাষ্ট্রপুঞ্জ জানিয়েছে, সিরিয়ার গোল্ডেন হাইটের কুনেইট্রার আল-রাফিদ গ্রামে রাষ্ট্রপুঞ্জের শান্তিরক্ষী বাহিনীর হাতে তাঁকে তুলে দেওয়া হয়। তার পরে পিটারের শারীরিক পরীক্ষা হয়। এর পরে তাঁকে মার্কিন প্রশাসনের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে বলে রাষ্ট্রপুঞ্জ জানিয়েছে। হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুসান রাইস জানিয়েছেন, পিটারকে সিরিয়া থেকে বের করে আনা হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে তিনি পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন।
এ দিকে, ইরাকের পাশাপাশি সিরিয়াও নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখল আইএস জঙ্গিরা। সোমবার তারা সিরিয়ার তাবকো বিমানবন্দর দখল করে নিয়েছে বলে দাবি করেছে। সিরিয়ার সরকারি টেলিভিশন খবরটির সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছে। সেখানে তাবকো বিমানবন্দর থেকে সিরিয়ার সেনা সরিয়ে নেওয়ার সংবাদ প্রচার করা হয়েছে। তাবকো বিমানবন্দরটি সিরিয়ার রাক্কা প্রদেশের মধ্যে পড়ে। এই প্রদেশটি বরাবরই আইএস-এর শক্ত ঘাঁটি। মূলত এখান থেকেই আইএস-এর উদ্ভব। এই বিমানবন্দরটি এই অঞ্চলে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাসার আল-আসাদের শেষ ঘাঁটি ছিল। এখান থেকে আইএস জঙ্গিদের উপরে বিমান হানা চালানো হত। তাই দীর্ঘ দিন বিমানবন্দরটি দখলের চেষ্টা চালাচ্ছিলেন আইএস জঙ্গিরা। এই সংঘর্ষে দু’পক্ষের বহু প্রাণহানির খবর রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy