আবার হানা ইজরায়েলের। গাজা। ছবি: এপি
আশঙ্কাই সত্যি হল। শান্তি স্থায়ী হল না। ২৪ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি শেষ হতে না হতেই ইজরায়েলে রকেট আছড়ে পড়ল। পাল্টা বিমান হানা চালাল ইজরায়েল। এই হামলায় এখনও পর্যন্ত ১০ বছরের এক বালকের মৃত্যু সংবাদ পাওয়া গিয়েছে। প্রয়োজনে হামাসকে ক্ষমতা থেকে সরাতে আবার স্থলপথে অভিযান চালান হতে পারে বলে ইজরায়েল হুমকি দিয়েছে। এরই মধ্যে গত তিন দিন ধরে ধ্বংসস্তূপে অনুসন্ধান চালানোর পরে গাজায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৯৪০। এর মধ্যে অধিকাংশই সাধারণ নাগরিক।
শুক্রবার ভারতীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টায় গাজায় ৭২ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি শেষ হয়। এর পরেই গাজা থেকে ইজরায়েল লক্ষ করে রকেট ছোড়া হয়। ইজরায়েলি সেনা তাদের টুইটার অ্যাকাউন্টে জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পরে এখন পর্যন্ত গাজা থেকে ৩৫টি রকেট ছোড়া হয়েছে। এর মধ্যে ইজরায়েলের আশকালোনের আকাশে ক্ষেপণাস্ত্রধ্বংসী ‘আয়রন ডোম’ ব্যবস্থা দু’টি রকেটকে ধ্বংস করে। বাকিগুলি ফাঁকা জায়গায় পড়েছে। এর মধ্যে একটির আঘাতে এক সাধারণ নাগরিক ও এক ইজরায়েলি সেনা আহত হয়েছেন। হামাস এই আক্রমণের কথা স্বীকার না করলেও অন্য প্যালেস্তাইন সংগঠন ইসলামিক জেহাদ এই হামলার কথা স্বীকার করেছে।
বৃহস্পতিবার মিশরের কায়রোতে আলাদা করে বিবদমান দু’পক্ষের সঙ্গে আলোচনা চালান মিশরের প্রতিনিধিরা। হামাস, ফাতা এবং ইসলামিক জিহাদের সম্মিলিত প্রতিনিধি দল মিশরের গোয়েন্দা বিভাগের অফিসে আলোচনায় বসে। কিন্তু দীর্ঘ ছ’ঘণ্টা আলোচনার পরেও কোনও রফাসূত্র পাওয়া যায়নি বলে হামাস সূত্রে খবর। কারণ, হামাসের প্রধান দু’টি দাবিই মানতে নারাজ ইজরায়েল। দীর্ঘ সাত বছর ধরে জল ও স্থলপথে চলা ইজরায়েলি অবরোধ তোলার দাবিতে অনড় হামাস। কিন্তু ইজরায়েলের আশঙ্কা, এই অবরোধ তুলে নিলে হামাস তা অস্ত্রসংগ্রহের কাজে লাগাবে। একই সঙ্গে হামাসের কথা মতো প্যালেস্তিনীয় বন্দিদেরও ছাড়তে নারাজ ইজরায়েল। তা ছাড়া মিশরও তাদের রাফা সীমান্ত গাজার জন্য খুলে দিতে রাজি হয়নি। মিশরে আল-সিসি সরকার ক্ষমতায় আসার আগে এই সীমান্তটিই ছিল গাজার সঙ্গে বহির্বিশ্বের যোগাযোগের একমাত্র রাস্তা। এই সীমান্তটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গাজার জনজীবন ও অর্থব্যবস্থায় প্রবল চাপ পড়েছে। অন্য দিকে, ইজরায়েল গাজার নিরস্ত্রীকরণের দাবি তুলেছে। তা বাতিল করে দিয়েছে হামাস।
প্যালিস্তাইনের প্রতিনিধি দলটি এখন কায়রোতে আছে। সেখানে আরও আলোচনা চলবে বলে জানান হয়েছে। কিন্তু ইজরায়েলের প্রতিনিধি দল ফিরে গিয়েছে। এ ভাবে আলোচনায় কোনও রফাসূত্র পাওয়া না গেলে গাজা থেকে হামাসকে উৎখাত করতে আবার অভিযান চালানো হতে পারে বলে ইজরায়েলের স্ট্র্যাটেজিক অ্যাফেয়ার্স-মন্ত্রী য়ুভাল স্টেইনিৎজ হুমকি দিয়েছেন। এ দিকে মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল অভিযোগ করেছে, ইজরায়েলের অভিযানে কয়েকটি ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আইন ভাঙা হয়েছে। এ সব ক্ষেত্রে তদন্তের দাবি তুলেছে সংগঠনটি।
গাজার সাধারণ বাসিন্দাদের স্বস্তি স্থায়ী হল না। চার সপ্তাহ পরে অনেকেই সবেমাত্র বাড়ি ফিরেছেন। অনেকের বাড়ি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হলেও জীবন গুছিয়ে নিতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু নতুন করে হামলা শুরু হওয়ায় আবার তাঁদের আশ্রয় শিবিরমুখী হতে হচ্ছে। এতে রাগ ও ক্ষোভের পাশাপাশি হতাশাও ছড়িয়ে পড়ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy