ফাইল চিত্র।
পেশিদ্যোতক
2 পারস্পরিক শুভেচ্ছা বিনিময়ে ‘জয় শ্রীরাম’-এর উদ্ভব ঠিক কবে হয়েছিল জানি না। এমন কি হতে পারে, রামমন্দির নির্মাণ পরিকল্পের সঙ্গে এর একটা যোগ ছিল? ‘জয় শ্রীরাম’ প্রায় একটা ঐক্যসূত্রের কাজ করছিল? অর্থাৎ তুমি যদি আমার ‘জয় শ্রীরাম’-এ সাড়া না দাও তা হলে বুঝতে হবে তুমি রামমন্দির চাও না? এই অনুমান সত্য কি না জানি না, কিন্তু এখন এই উক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে পেশিদ্যোতক— দেখতে চাই তুমি আমার দলে আছো কি না। আর যদি সংখ্যালঘু হও, তা হলে যত ক্ষণ না বলছ, নিস্তার নেই। ধর্মের দোহাই দিয়ো না, সংবিধান যা-ই বলুক না কেন, আমরাই সংখ্যাগুরু। অতএব।
সমস্যাটা বোধ হয় রামকে নিয়ে নয়। ‘রাম রাম’ যে এক সময় প্রায় সাধারণ স্বাগতবচন ছিল, তা কি আমরা ভুলে গিয়েছি? এখনও কি তা হিন্দি বলয়ের গ্রামেগঞ্জে নেই? এবং পশ্চিমবঙ্গেও তো আমরা অ-বাংলাভাষীর কাছে এমন সম্বোধনে অনভ্যস্ত ছিলাম না। ‘সংস্কৃতি’ ব্যাপারটা বড় দুর্মর, কাঠ নিরীশ্বরবাদীর মুখ দিয়েও তো হঠাৎ হঠাৎ ‘হা আল্লা’ বা ‘হা ভগবান’ বেরিয়ে পড়ে। আর অদূরস্থ গ্রাম থেকে যাঁরা ভিক্ষা করতে আসেন, তাঁদের মুখেও অনেক সময় ‘হরে কৃষ্ণ হরে রাম/ রাম রাম হরে হরে’ শুনি।
অমিয় দেব কলকাতা-৯১
অন্য দিকেও
2 মুসলিম হয়ে রামচরিতমানস এবং গীতা পাঠ করার জন্য উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ে এক প্রৌঢ়কে মারধর করা হল (‘গীতা পড়ায় মার’, ৬-৭)। যিনি মুসলিম হয়ে হিন্দুদের ধর্মগ্রন্থ পাঠ করছেন, তাঁর মানসিকতাকে সাধুবাদ জানাই। আর যে মুসলিমরা এই উদার প্রৌঢ়কে প্রহার করেছে তারা অবশ্যই ঘৃণ্য, যেমন ঘৃণ্য আমাদের রাজ্যে বা দেশে যে হিন্দুরা জোর করে বাসে-ট্রেনে কোনও অসহায় মুসলিমকে ‘জয় শ্রীরাম’ বলতে বাধ্য করছে।
এক জন মুসলিম হয়ে আমি গীতা পড়েছি, আমার বাড়িতে বাংলা তর্জমায় রামায়ণ, মহাভারত আছে, ‘উদ্বোধন’ পত্রিকাও নিয়মিত পড়ি, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছি চণ্ডীমঙ্গল, ধর্মমঙ্গল, মনসামঙ্গল। দেখেছি, আমাদের রাজ্যের মাদ্রাসা বোর্ডের সিলেবাসে মেঘনাদবধ কাব্য, চণ্ডীমঙ্গল কাব্যের অংশ পাঠ্য। আসলে ইসলাম ধর্মে জ্ঞান অর্জন ‘ফরজ’, অবশ্যপালনীয় কর্তব্য।
এতে নিজের ধর্মের কোনও ক্ষতি হয় না, বরং সঙ্কীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বেরিয়ে আসা যায়, হৃদয় হয়ে ওঠে সর্বধর্মের মিলনক্ষেত্র।
ফিরোজ আলি কাঞ্চন গলসি, বর্ধমান
শুধু হিন্দুর?
2 ‘‘সবাই ‘রাম’ বলবে?’’ (৮-৭) শীর্ষক চিঠিটি পড়লাম। ভগবান শ্রীরাম বা ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান শুধুমাত্র হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের নয়। এই দেবতা এবং এই জয়ধ্বনি সমগ্র ভারতের অন্তরাত্মার সঙ্গে জড়িত। এটা সেই ভারতবর্ষ, যেখানে বিখ্যাত সানাই বাদক বিসমিল্লা খান বারাণসীর ঘাটে বসে সানাই বাজাতে বাজাতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের প্রত্যক্ষ রূপ অনুভব করেন। তথাকথিত সেকুলার রাজনৈতিক দলগুলোর নেতানেত্রী যখন ইফতার পার্টিতে যান কিংবা প্রকাশ্যে মুসলিম তোষণের কথা বলেন, তখনও তো তা হলে হিন্দু ভাবাবেগে আঘাত লাগার সম্ভাবনা আছে, নয় কি? সেই সমস্ত দলেও হিন্দু নেতানেত্রী কিংবা কর্মীদের মধ্যে অসহায়তা বা অবিশ্বাসের পরিবেশ সৃষ্টি হতে পারে। তাই মনে রাখা উচিত, কোনও ধর্মীয় ভাবনাই এতটা ঠুনকো হতে পারে না, যেখানে অন্য ধর্মের ভগবানের নাম করলে বা স্লোগান দিলে, অবিশ্বাস ও অমর্যাদার বাতাবরণ তৈরি হতে পারে।
কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায় হালতু
কিছু প্রশ্ন
2 নুসরত মুসলিম হয়েও হিন্দু বিবাহিতা নারীর অভিজ্ঞান ধারণ করলে এবং হিন্দু উৎসবে অংশ নিলে তাঁর প্রশংসা করে বলা হচ্ছে তিনি যথার্থ ধর্মনিরপেক্ষ, তা হলে মমতা হিন্দু হয়ে মাথা কাপড়ে ঢেকে মুসলিমদের উৎসবে অংশ নিলে কেন সেটাকে বলা হচ্ছে মুসলিম তোষণ? নুসরত সংখ্যালঘু হয়েও সংখ্যাগুরুর মতো আচরণ করলে তা প্রশংসার যোগ্য, আর মমতা সংখ্যাগুরু হয়েও সংখ্যালঘুর সঙ্গে একাত্ম বোধ করলে তা প্রশংসার যোগ্য নয়? দু’জনকেই সমান প্রশংসা করুন, কারণ দু’জনেই ধর্মীয় ভেদাভেদকে গুরুত্ব না দিয়ে মানুষকে গুরুত্ব দিচ্ছেন।
সঞ্জয় দাস কলকাতা-৬৮
ব্যবস্থা হয়েছে
2 ‘‘স্বামীর লাগাতার ‘অত্যাচারে’ পুলিশে বৃদ্ধা’’ (২৪-৬) শীর্ষক প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, নিগৃহীতা মহিলা অণিমা বসু, রাজ্যের মহিলা কমিশনে অভিযোগ জানালেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ তথ্য ভুল। তাঁর অভিযোগ পেয়ে মহিলা কমিশন ৪-৬ তারিখে ডেপুটি পুলিশ কমিশনারকে (ইএসডি) নির্দেশ দিয়েছে, তদন্ত করতে ও রিপোর্ট জমা দিতে। ফলে কমিশনের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ মিথ্যা।
লীনা গঙ্গোপাধ্যায় চেয়ারপার্সন, পশ্চিমবঙ্গ মহিলা কমিশন
প্রতিবেদকের উত্তর: খবরটিতে যা লেখা হয়েছে তা ওই বৃদ্ধার বয়ান এবং অভিযোগের ভিত্তিতে। সেখানেই তিনি জানান, ১৫-৫ তারিখে মহিলা কমিশনের কাছে লিখিত অভিযোগ জানালেও, কমিশন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। থানাতেও বার বার অভিযোগ জানিয়ে কোনও সুরাহা না মেলাতেই তিনি সংবাদপত্রের অফিসে এসে সব কাগজপত্র দেখিয়ে যান। সেই মতো খবর নিয়েই এই প্রতিবেদনটি লেখা।
খবর প্রকাশিত হওয়ার পরের দিনই (২৫-৬) প্রতিবেদক ওই বৃদ্ধার কাছ থেকে জানতে পারেন, খবরের জেরে পুলিশ ফোন করে তাঁর কাছে কাগজপত্র চেয়ে পাঠিয়েছে। এর পরই থানায় ফোন করে জানতে পারা যায়, তাঁরা মহিলা কমিশন থেকে কোনও রিপোর্ট দেওয়ার জন্য চিঠি পাননি। তদন্তকারী অফিসারও কিছু জানেন না এ বিষয়ে। এখানে একটি বিষয় জানাতে চাই। বৃদ্ধার নাম অণিমা বসু নয়। অণিমা বিশ্বাস। আর তিনি থাকেন কলকাতা পুলিশের সেন্ট্রাল ডিভিশনের মুচিপাড়া থানা এলাকায়। অথচ কমিশনের চিঠিতে লেখা, রিপোর্ট পাঠাতে বলা হয়েছে কলকাতা পুলিশের ইএসডি ডিভিশনে। মুচিপাড়া থানা ওই ডিভিশনের আওতায় পড়ে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy