Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

উইপ্রোর সম্প্রসারণ পুরনো ক্যাম্পাসেই

বিশেষ আর্থিক অঞ্চলের জটে আপাতত রাজ্যে স্থগিত ইনফোসিস প্রকল্প। সরাসরি না-জানালেও দ্বিতীয় ক্যাম্পাস তৈরির পরিকল্পনা হিমঘরে ঠেলে দিল উইপ্রোও। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, সম্প্রতি উইপ্রো- কর্তা আজিম প্রেমজি কলকাতায় নিজের কর্মীদের জানিয়েছেন, সম্প্রসারণ বর্তমান ক্যাম্পাসেই হবে। জায়গা সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানসূত্র হিসেবে নতুন ‘টাওয়ার’ বা উঁচু বহুতল তৈরি করা হবে। তাতে ক্যাম্পাসের খোলামেলা সৌন্দর্যের সঙ্গে সমঝোতা করতে হলেও উপায় নেই। কারণ, এই ক্যাম্পাস থেকে ব্যবসার পরিমাণ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। ফলে সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করতেই হবে বলে সংস্থা সূত্রের খবর।

গার্গী গুহঠাকুরতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৪ ০৪:২৩
Share: Save:

বিশেষ আর্থিক অঞ্চলের জটে আপাতত রাজ্যে স্থগিত ইনফোসিস প্রকল্প। সরাসরি না-জানালেও দ্বিতীয় ক্যাম্পাস তৈরির পরিকল্পনা হিমঘরে ঠেলে দিল উইপ্রোও। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, সম্প্রতি উইপ্রো- কর্তা আজিম প্রেমজি কলকাতায় নিজের কর্মীদের জানিয়েছেন, সম্প্রসারণ বর্তমান ক্যাম্পাসেই হবে। জায়গা সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানসূত্র হিসেবে নতুন ‘টাওয়ার’ বা উঁচু বহুতল তৈরি করা হবে। তাতে ক্যাম্পাসের খোলামেলা সৌন্দর্যের সঙ্গে সমঝোতা করতে হলেও উপায় নেই। কারণ, এই ক্যাম্পাস থেকে ব্যবসার পরিমাণ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। ফলে সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করতেই হবে বলে সংস্থা সূত্রের খবর।

২০০৪-এ সল্টলেক সেক্টর ফাইভে বিশেষ আর্থিক অঞ্চল তৈরির ব্যাপারে সবুজ সঙ্কেত পায় উইপ্রো। ২০০৫-এ ১৪.৫ একর জমিতে চালু হয় দেশের প্রথম তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষ আর্থিক অঞ্চল বা সেজ। আপাতত সল্টলেক সেক্টর ফাইভে উইপ্রোর ক্যাম্পাসে ৮০০০ কর্মী কাজ করেন। সংস্থার নির্ধারিত পরিকল্পনা অনুযায়ী এই সংখ্যা ২০১৫-এর মধ্যে দ্বিগুণ হওয়ার কথা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, উইপ্রোতে একর প্রতি ৩০০ থেকে ৪০০ কর্মী নেওয়ার চল রয়েছে। রাজারহাটে ৫০ একরের উপর জমিতে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসে প্রায় ২০ হাজার কর্মীর কাজের জায়গা তৈরির পরিকল্পনা ছিল।

কিন্তু সেজ বিতর্কে এখনও থমকে ৫০ একর জমি জুড়ে উইপ্রোর প্রস্তাবিত দ্বিতীয় ক্যাম্পাস। যে-সমস্যার জেরে আটকে ইনফোসিস প্রকল্পও। রাজ্য সরকারের সেজ বিরোধিতা নিয়ে সরাসরি মুখ খোলেনি উইপ্রো। তবে ২০১২ সালে বণিকসভা সিআইআই-এর অনুষ্ঠানে এসেও বর্তমান ক্যাম্পাসের উপর নির্ভর করেই সম্প্রসারণের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন প্রেমজি।

দীর্ঘ টানাপড়েনের পরে উইপ্রোর দ্বিতীয় ক্যাম্পাস গড়ে তোলার জন্য জমি বরাদ্দ করতে পেরেছিল বিগত সরকার। ২০০৯ সালের ডিসেম্বর মাসের গোড়ায় রাজারহাটে দ্বিতীয় ক্যাম্পাস তৈরির জন্য জমি দেখে গিয়েছিলেন প্রেমজি। তখনই তিনি জানিয়েছিলেন ১৮ মাসের মধ্যে প্রকল্প তৈরির কাজ শুরু হবে।

এর পরে ২০১০ সালে বছরের প্রথম দিনেই জমির দাম বাবদ প্রথম কিস্তির চেক জমা দেয় উইপ্রো। চেকের অঙ্ক ১৮ কোটি ৯০ লক্ষ ৬২ হাজার ৫০০ টাকা। কাঠা প্রতি আড়াই লক্ষ টাকা দরে ৫০ একর জমি লিজে দিতে চেয়েছিল রাজ্য সরকার। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, জমির দাম ধরা হয় ৭৫ কোটি টাকা। বাকি ৬২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা পরিষেবা কর ও অন্যান্য খাতে হিডকোকে দিতে হত। নির্ধারিত পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০১১ সালের জুন মাস নাগাদ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে যাওয়ার কথা ছিল।

এর পরে শুরু হয় বিকল্প জমির খোঁজ। ২০১২-র ফেব্রুয়ারিতে রাজ্যের সঙ্গে বৈঠক করেন সংস্থা কর্তৃপক্ষ। প্রাক্তন শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে রাজারহাটের জমি নিয়ে আলোচনা করেন উইপ্রোর দুই কর্তা, পার্থসারথি গুহ পাত্র ও বিজয় অগ্রবাল। সে দিন উইপ্রোর সঙ্গে সংক্ষিপ্ত বৈঠকের পরে পার্থবাবু জানিয়েছিলেন, ওই জমির বদলে ঘোষিত বিশেষ আর্থিক অঞ্চলে বিকল্প জমি চাইছে সংস্থা। উইপ্রোর এই চাহিদা মেটানো যে সহজ নয়, তাও জানিয়েছিলেন তিনি। তবে লগ্নি হাতছাড়া যাতে না-হয়, সে জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করতে রাজ্য যাবতীয় চেষ্টা চালাবে বলে আশ্বাস ছিল।

রাজারহাটে বরাদ্দ জমির বদলে ঘোষিত বিশেষ আর্থিক অঞ্চলে জমি দেখানো হয় উইপ্রোকে। যে কারণে বানতলায় কলকাতা আই টি পার্কে জমি দেখানো হয় কর্তৃপক্ষকে। সেখানে অবশ্য ৫০ একর জমির সংস্থান নেই। সংস্থা সূত্রের খবর, রাজ্য সরকারের তরফে ১৫ থেকে ২০ একর জমি দেওয়ার প্রস্তাব ছিল। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে জমি পছন্দ হয়নি সংস্থার। ইনফোসিসের মতোই উইপ্রোও বিশেষ আর্থিক অঞ্চলের তকমা চায়। কারণ সেজের জন্য বরাদ্দ আর্থিক ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা ছাড়া প্রতিযোগিতার বাজারে কাজ করতে রাজি নয় তারা।

অন্য বিষয়গুলি:

wipro campus gargi guhathakurta sez
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy