চিন্তিত: ব্যাঙ্কে কেলেঙ্কারি আর চাষিদের ক্ষোভ। আগামী বছর ভোট পরীক্ষার আগে দু’য়ের ধাক্কায় যেন কিছুটা বেসামাল মোদী। ফাইল চিত্র
প্রায় ২ লক্ষ ৪২ হাজার কোটি টাকা। মোদী জমানায় গত সাড়ে তিন বছরে ওই বিপুল অঙ্ক নিজেদের হিসেবের খাতা থেকে মুছে ফেলতে হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিকে!
মঙ্গলবার সংসদে এ কথা জানিয়েছে অরুণ জেটলির অর্থ মন্ত্রকই। যার মানে, এই বিশাল অঙ্কের ঋণ আর শোধ হওয়ার তেমন আশা দেখছে না রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি। কিন্তু কার কাছে কত পাওনা কিংবা কাদের ঋণ ব্যাঙ্কের হিসেবের খাতা থেকে বাদ দিতে হয়েছে— সেই তথ্য সংসদে দিতে রাজি হয়নি অর্থ মন্ত্রক। যুক্তি, আইনে ওই তথ্য গোপনীয়।
এই পরিসংখ্যান সামনে আসতেই কেন্দ্রকে তুলোধোনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘এটা কি বড় কেলেঙ্কারি নয়?’’
তাঁর অভিযোগ, ‘‘চাষিরা ঋণের বোঝায় চোখের জল ফেলছেন। আত্মহত্যা করছেন। তাঁদের ঋণ মকুবের আর্জি নিয়ে কেন্দ্র মাথা ঘামাচ্ছে না। অথচ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অনাদায়ী ঋণ থেকে ২,৪১,৯১১ কোটি টাকা বাদ দেওয়া হচ্ছে!’’ উল্লেখ্য, এই তথ্য এ দিন সামনে এসেছে রাজ্যসভায় সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের তোলা প্রশ্নের উত্তরে। যিনি এখন সেখানে অলিখিত ভাবে তৃণমূল শিবিরেরই সৈনিক।
অর্থ প্রতিমন্ত্রী শিবপ্রতাপ শুক্লের অবশ্য যুক্তি, অনুৎপাদক সম্পদের তালিকা থেকে মুছে ফেলা মানে ঋণ মাফ করা নয়। খেলাপিরা ধার শোধ করতে একই ভাবে দায়বদ্ধ থাকবেন। ঋণ আদায়ের চেষ্টাও চলবে। কিন্তু রিজার্ভ ব্যাঙ্কের আইন অনুযায়ীই কে কত টাকা ঋণ নিয়েছেন, তা প্রকাশ করা যাবে না। মমতার যদিও দাবি, কাদের ঋণ মাফ হয়েছে, তার পুরো তালিকা প্রকাশ করতে হবে। তবে আর এক প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্র জানিয়েছে, ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণের ভাবনা এখন নেই।
প্রশ্ন যেখানে
• ঋণ মকুব আর শোধ না হওয়ায় কোনও ধার খাতা থেকে মুছে ফেলা এক নয়। কিন্তু বিরোধীদের জিজ্ঞাসা, সরকার যেখানে কৃষি ঋণ মকুব নিয়ে এত কড়া, সেখানে ধার মোছা নিয়ে নজরদারি এত শিথিল কেন?
• রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে সিংহভাগ অংশীদারি তো কেন্দ্রের। তা হলে ধার মোছা নিয়ে অবস্থান এত নরম কেন?
বাতিলের খাতায়
• যে ধার আদায়ের আর প্রায় কোনও সম্ভাবনা নেই, ব্যাঙ্কের হিসেবের খাতা থেকে তা মুছে ফেলাকে বলে ‘লোন রাইট অফ’। গত কয়েক বছরে ওই অঙ্ক বেড়েছে হুড়মুড়িয়ে।
• ২০১২-’১৩ সালে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির মুছে ফেলা ঋণের অঙ্ক ছিল ২৭,৩২১ কোটি টাকা। ২০১৬-’১৭ সালে তা দাড়িয়েছে ৮১,৬৮৩ কোটি টাকায়। প্রায় তিন গুণ।
• ২০১৪-’১৫ থেকে শুরু করে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মুছে ফেলা মোট ঋণের অঙ্ক প্রায় ২ লক্ষ ৪২ হাজার কোটি টাকা!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy