(বাঁ দিকে) ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। (ডান দিকে)। ছবি: পিটিআই।
বিতর্কের কেন্দ্রে এ বার রাশিয়ার কুর্স্ক এলাকা। গত বছরের অগস্ট থেকে যে এলাকা পুরোপুরি অধিগ্রহণ করে রেখেছিল ইউক্রেনের সেনা। সেই কুর্স্কেই ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর একটা বড় অংশকে রাশিয়ার সেনা সম্প্রতি ঘিরে ফেলেছে বলে জানিয়েছিলেন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কুর্স্কের বেশ কয়েকটি গ্রাম ইউক্রেনের দখল থেকে রাশিয়া নিজেদের দখলে নিয়ে নিয়েছে বলেও জানাচ্ছে দেশ-বিদেশের সংবাদমাধ্যম। এই অবস্থায় ইউক্রেনের সেনাদের যাতে মেরে ফেলা না হয়, সমাজমাধ্যমে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কাছে সেই আর্জিও জানান ট্রাম্প। কিন্তু ট্রাম্পের সেই দাবি আজ কার্যত উড়িয়ে দিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। উল্টে জ়েলেনস্কি আজ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তাঁদের বাহিনীর সদস্যেরা আদৌ রুশ বাহিনীর হাতে ‘বন্দি’ হয়ে নেই। বা তাঁদের ঘিরে ফেলার কোনও ঘটনাও ঘটেনি। অর্থাৎ ট্রাম্প যে দাবি করে আসছেন, তা সত্যি নয়।
ট্রাম্প নিজের সমাজমাধ্যম প্ল্যাটফর্মে জানিয়েছিলেন, কুর্স্কে ইউক্রেনের বাহিনীকে যে কোনও মুহূর্তে মেরে ফেলতে পারে রাশিয়ার বাহিনী। রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে সংঘর্ষ-বিরতি চুক্তি নিয়ে আলোচনা পর্বে এত মানুষের মৃত্যু তিনি চান না বলেও দাবি করেছিলেন ট্রাম্প। সেই মতো পুতিনের কাছ থেকে ইউক্রেনের সেনাদের না মারার প্রতিশ্রুতিও চান তিনি। পুতিন অবশ্য ট্রাম্পের সেই অনুরোধ মেনে জানান, ইউক্রেনের বাহিনীকে তাঁরা তখনই ছেড়ে দিতে পারেন, যদি রুশ বাহিনীর কাছে ইউক্রেনীয় বাহিনী আত্মসমর্পণ করে। অস্ত্র-সহ আত্মসমর্পণ না করলে ইউক্রেনীয় বাহিনীর সঙ্গে তাঁরা যে খুব একটা ভাল কিছু করবেন না, সে কথাও স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন পুতিন। তাঁর আরও দাবি ছিল, কুর্স্কের গোটা এলাকা দখলের পর থেকে সেখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে নানা ভাবে খারাপ আচরণ করেছে ইউক্রেনের বাহিনী। তবে রুশ বাহিনী তাদের দেশের সেনাবাহিনীকে ঘিরে ফেলেছে বলে প্রথম থেকেই মানতে চায়নি ইউক্রেনের বিদেশ মন্ত্রক। একই কথা জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট জ়েলেনস্কিও। তবে তিনি স্বীকার করেছেন যে, কুর্স্কে তাঁদের বাহিনীর অবস্থা এখন ততটাও ‘ভাল নয়’। কিন্তু ট্রাম্পের দাবিও পুরোপুরি ঠিক নয় বলে জানিয়েছেন জ়েলেনস্কি। কুর্স্কের কিছু এলাকায় আজ ইউক্রেন ড্রোন হামলা চালিয়েছে বলেও জানা যাচ্ছে। তবে হতাহতের খবর স্পষ্ট নয়।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুখোশ পরে আমেরিকা ও রাশিয়া-বিরোধী বিক্ষোভ ইউক্রেনীয়দের। শনিবার কিভে, আমেরিকান দূতাবাসের সামনে। ছবি: রয়টার্স।
এর মধ্যেই যুদ্ধ-পরবর্তী ইউক্রেনের পরিস্থিতি নিয়ে আজ ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশের প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক সেরেছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়র স্টার্মার। ভার্চুয়াল সেই বৈঠকে স্টার্মার রাশিয়াকে প্রায় হুঁশিয়ারির সুরেই জানিয়েছেন, ইউরোপের রাষ্ট্রপ্রধানেরা অনির্দিষ্ট কালের জন্য অপেক্ষা করতে পারবেন না। তাই দু’দেশের সংঘর্ষ-বিরতি চুক্তি বাস্তবায়িত হলে ইউক্রেনের পক্ষে তা কতটা গ্রহণযোগ্য হবে, সে নিয়ে স্পষ্ট ধারণা পেতে চাইছেন তাঁরা। আগামী বৃহস্পতিবার ইউরোপের দেশগুলি ইউক্রেনকে দেওয়া সামরিক সাহায্য নিয়েও নতুন সিদ্ধান্তে আসতে চলেছে বলে জানিয়েছেন স্টার্মার।