(বাঁ দিকে) ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং জাস্টিন ট্রুডো (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
মেক্সিকোর পর এ বার কানাডাকেও আপাতত স্বস্তি দিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কানাডার উপরেও এখনই কার্যকর হচ্ছে না ট্রাম্পের শুল্কনীতি। কানাডার পণ্যের উপর ২৫ শতাংশ হারে শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্ত আপাতত ৩০ দিনের জন্য স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমেরিকা। এর আগে সোমবার রাতে মেক্সিকোর পণ্যের উপরেও শুল্ক বসানোর সিদ্ধান্ত ৩০ দিনের জন্য স্থগিত রেখেছেন ট্রাম্প।
গত শনিবার কানাডা, মেক্সিকো এবং চিনা পণ্যের উপর শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্ত নেন ট্রাম্প। চিনা পণ্যে ১০ শতাংশ শুল্ক এবং বাকি দুই দেশের পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্কের ঘোষণা করেন। মঙ্গলবার থেকেই তা কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। তবে শেষ মুহূর্তে কানাডা এবং মেক্সিকোর পণ্যের উপর শুল্ক স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিলেন ট্রাম্প। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে সোমবার রাতে দুই দফায় আলোচনা হয় ট্রাম্পের। তার পরেই দুই রাষ্ট্রনেতা সমাজমাধ্যমে জানান, আপাতত ৩০ দিনের জন্য শুল্ক বসানোর সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখা হয়েছে। মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শেনবামের সঙ্গেও সোমবার রাতে আলোচনা হয়েছে ট্রাম্পের।
কানাডার উপর ট্রাম্পের শুল্ক চাপানোর নেপথ্যে অন্যতম বড় কারণ ছিল ফেন্টানাইল। এই মাদকটি ব্যথার উপশমের ক্ষেত্রে মরফিনের তুলনায় বহু গুণ শক্তিশালী। ট্রাম্পের অভিযোগ ছিল, কানাডা হয়ে এই মাদক আমেরিকায় প্রবেশ করছে। ট্রুডো যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, আমেরিকায় যত ফেন্টানাইল রয়েছে, তার মাত্র এক শতাংশই কানাডা থেকে গিয়েছে। সোমবার ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর ফোনালাপেও উঠে এসেছে ফেন্টানাইলের প্রসঙ্গ। তিনি ট্রাম্পকে আশ্বস্ত করেছেন, ফেন্টানাইল আমেরিকায় প্রবেশ করা রুখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে কানাডা। সীমান্তে নজরদারিও আরও বৃদ্ধি করা হবে বলে জানিয়েছেন ট্রুডো। এর পরেই এখনই শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে আসেন ট্রাম্প।
পরে সমাজমাধ্যমে ট্রুডো জানান, ফোনে ট্রাম্পের সঙ্গে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। সীমান্তে পরিকাঠামো এবং নজরদারি বৃদ্ধির জন্য ১৩০ কোটি ডলার খরচ করার পরিকল্পনা নিয়েছে কানাডা। নতুন হেলিকপ্টার, প্রযুক্তি এবং অন্য পরিকাঠামো উন্নয়ন হবে। ফেন্টানাইল কানাডা থেকে আমেরিকায় যাওয়া আটকাতে নজরদারি আরও বৃদ্ধি করা হবে এবং এ বিষয়ে আমেরিকার সঙ্গে যৌথ সহযোগিতায় কাজ করা হবে।
ট্রুডোর সমাজমাধ্যমে পোস্টের পর ট্রাম্পও অনুরূপ একটি পোস্ট করেন। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জানান, সীমান্তে নজরদারির জন্য প্রায় ১০ হাজার কর্মী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কানাডা। ফেন্টানাইল, আর্থিক তছরুপ এবং সংগঠিত অপরাধ রুখতে কানাডা এবং আমেরিকা একটি যৌথবাহিনী ‘জয়েন্ট স্ট্রাইক ফোর্স’ গঠনের বিষয়েও সহত হয়েছে। ট্রাম্প আরও জানান, কানাডা থেকে আমেরিকায় ফেন্টানাইল প্রবেশ রুখতে ওয়াশিংটনের তরফেও প্রয়োজনীয় আর্থিক লগ্নি করা হচ্ছে। ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমেরিকার তরফেও ২০ কোটি ডলার খরচের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সমাজমাধ্যমে ট্রাম্প লিখেছেন, “এতে সবার জন্যই ভাল হল।’’