(বাঁ দিকে) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
ডোনান্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণায় খুশি নন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার। শুধু তা-ই নয়, ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতিও ভাবনায় রেখেছে তাঁকে। এই আবহে সোমবার বড় ঘোষণা করতে পারেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। ‘দ্য টাইমস’-এই প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোমবারের ভাষণে বিশ্বায়নের যুগ শেষ বলে ঘোষণা করতে পারেন তিনি।
ব্রিটেনের উপর ১০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। অনেকের মতে, এই ঘোষণা বিশ্ব বাজারকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছে। ট্রাম্পের শুল্কনীতি কী ভাবে মোকাবিলা করা যায়, সেই পথই খুঁজছে বিশ্ব। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, দেশের ব্যবসাকে ‘শুল্ক-ঝড়’ থেকে রক্ষা করার জন্য নতুন শিল্পনীতি ব্যবহার করতে প্রস্তুত। পাশাপাশি, মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে একটি অর্থনৈতিক চুক্তির চেষ্টাও চালিয়ে যাবেন তিনি। স্টার্মারের মতে, ‘‘আমরা বিশ্বাস করি না যে, বাণিজ্যযুদ্ধই সমস্যা সমাধানের একমাত্র পথ।’’
ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের ঘোষণার পরই বিশ্ব বাজার টালমাটাল হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শেয়ার বাজারে ধস নামে। বাদ যায়নি আমেরিকার ওয়াল স্ট্রিটও। বিশেষত, গাড়ি এবং ফার্মা শেয়ারেই বেশি প্রভাব পড়েছে। প্রত্যেকটি দেশই নিজের মতো করে এই শুল্ক সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজছে। স্টার্মার মনে করেন, ট্রাম্পের ঘোষণার ফলে বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পাবে। তবে অনেকেই ট্রাম্পের শুল্কনীতিকে ‘শাপে বর’ দেখছেন। মনে করেন, বিভিন্ন দেশ তাদের অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের উপর জোর দেবে। একই সঙ্গে অর্থনৈতিক সংস্কারের পথেও হাঁটবে।
ইতিমধ্যেই ব্রিটেনের অন্যতম গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থা জাগুয়ার ল্যান্ড রোভার জানিয়ে দিয়েছে, তারা এখন আর আমেরিকায় গাড়ি পাঠাবে না। অন্তত এক মাসের জন্য গাড়ি রফতানির স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। তাদের মতে, মার্কিন প্রেসিডেন্টের ‘পাল্টা শুল্ক’ আরোপের সিদ্ধান্ত কী ভাবে মোকাবিলা করা যায়, সেই পথই এখন বার করতে হবে। বিষয়টি বিবেচনা করে দেখার পর আমেরিকায় গাড়ি রফতানির ব্যাপারে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
দ্বিতীয় বার মার্কিন প্রেসিডেন্টের কুর্সিতে বসার পর থেকেই আমেরিকার শুল্ক নীতি বদলে ফেলেছেন ট্রাম্প। তিনি জানিয়েছেন, যে সমস্ত দেশ আমেরিকার পণ্য থেকে যত শুল্ক নিয়ে থাকে, তাদের উপরেও পাল্টা তত শুল্কই চাপানো হবে। এ বিষয়ে আমেরিকার স্বার্থের কথাই শুধু মাথায় রাখবে ট্রাম্প প্রশাসন। ট্রাম্পের নতুন নীতিতে প্রায় প্রতিটি দেশের উপরেই ন্যূনতম ১০ শতাংশ হারে শুল্ক চাপানো হয়েছে।