Nepal

নেপাল: প্রচণ্ডকে সমর্থন দেউবার, সুবিধা নয়াদিল্লির

বিদেশ মন্ত্রক অবশ্য গতানুগতিক ভাবেই জানাচ্ছে, অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ভারত নাক গলায় না। তা নেপালের মতো অতি ঘনিষ্ঠ এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী দেশ হলেও নয়।

Advertisement
অগ্নি রায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:০২
নেপালের প্রধানমন্ত্রীপুষ্পকমল দহল ওরফে প্রচণ্ড।

নেপালের প্রধানমন্ত্রীপুষ্পকমল দহল ওরফে প্রচণ্ড। — ফাইল চিত্র।

সিপিএন (এমসি) নেতা পুষ্পকমল দহল ওরফে প্রচণ্ডকে প্রধানমন্ত্রিত্বের ভাগ দেবেন না বলে নেপালি কংগ্রেসের শের বাহাদুর দেউবার সরকার ভাঙল। কিন্তু চলতি সপ্তাহের আস্থা ভোটে সেই প্রচণ্ডকে প্রধানমন্ত্রী পদে সমর্থন করল দেউবার দল। কূটনৈতিক সূত্রে জানা যাচ্ছে, এই সমর্থন কৌশলগত। প্রকৃতপক্ষে নেপালে এখন যে সরকার তৈরি হল, তা জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে। ফলে চিন-ঘনিষ্ঠ সিপিএন (ইউএমএল) নেতা কে পি শর্মা ওলির যে ‘কিং মেকার’ ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছিল, সেটাকেও কিছুটা লঘু করে দেওয়া সম্ভব হল বলে মনে করা হচ্ছে। যাতে প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সরাসরি লাভ ভারতের।

বিদেশ মন্ত্রক অবশ্য গতানুগতিক ভাবেই জানাচ্ছে, অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ভারত নাক গলায় না। তা নেপালের মতো অতি ঘনিষ্ঠ এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী দেশ হলেও নয়। যদিও কূটনৈতিক মহলের একাংশের বক্তব্য, শের বাহাদুর দেউবার সঙ্গে রাজনৈতিক সম্পর্ক যথেষ্ট ভাল সাউথ ব্লকের। শুধু মোদী সরকার নয়, কংগ্রেস ক্ষমতাসীন থাকার সময়েও দলগত ভাবে কংগ্রেস এবং নেপালি কংগ্রেসের মধ্যে নিয়মিত আদানপ্রদান চলতই। ফলে দেউবা আস্থাভোটে প্রচণ্ডকে সমর্থন করে ভারতকে কিছুটা সুবিধে করে দিতে চাইবেন এবং ভারত সেই পরামর্শ দিয়ে থাকতে পারে, এমনটা উড়িয়ে দিচ্ছেন না কূটনৈতিক মহলের একাংশ।

Advertisement

এখন যে সরকার তৈরি হল তাতে যেহেতু দেউবার-ও সিলমোহর রইল, ফলে ওলির উপরে নির্ভরশীলতা অনেকটাই কমে গেল প্রচণ্ডের। মতের অমিল হলেই সরকার ফেলে দেওয়ার ক্ষমতা থাকছে না ওলির। আর এই সিদ্ধান্তের ফলাফলও দেখা গিয়েছে হাতে-নাতে।

পুষ্পকমল দহল এবং ওলি যখন সরকার গড়লেন, ভারতের নাম না করে বাঁকা মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছিল ওলিকে। স্পষ্টতই তিনি যে চিনের হাতে তামাক খেতে বেশি আগ্রহী সেটা স্পষ্ট হয়ে যায় দু’টি বিষয়ে। প্রথমত, তিনি বলেন, কিছু পদক্ষেপ বাইরে থেকে করা হচ্ছে যাতে নেপালের সার্বভৌমত্ব নষ্ট হয়। ইঙ্গিত স্পষ্ট, ভারতকে গোড়াতেই কড়া বার্তা দিয়ে নতুন ইনিংস শুরু করতে চাইলেন তিনি। দ্বিতীয়ত, জোট সরকারের যে ন্যূনতম অভিন্ন কর্মসূচি তৈরি হয়, তাতে ভারতকে নিশানা করা হলেও চিনকে ছাড় দেওয়া হয়। বলা হয়, ‘বেআইনি ভাবে দখল করে রাখা’ নেপালের ভূভাগ (লিম্পিয়াধুরা, লিপুলেখ গিরিপথ এবং কালাপানি অঞ্চলকে নেপালের অংশ হিসেবে সংসদে প্রস্তাব পাশ করিয়েছিল ওলির সরকার) ফেরানোর জন্য আলোচনা শুরু করা হবে নয়াদিল্লির সঙ্গে। চিনের সঙ্গে নেপালের সীমান্ত নিয়ে বিতর্কের উল্লেখ কিন্তু রাখা হয়নি ওই জোট কর্মসূচিতে।

কিন্তু দেখা গেল আস্থা ভোটের পরে প্রচণ্ড যে বক্তৃতা দিলেন, সেখানে নয়াদিল্লি এবং বেজিংয়ের মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য রক্ষা করার কথাই বলা হল। সূত্রের খবর, প্রচণ্ডের এই বিবৃতিতে ওলির সায় ছিল না। তিনি তা গিলতে বাধ্য হয়েছেন, দেউবা সমর্থনের হাত প্রচণ্ডের দিকে বাড়িয়ে দেওয়ার ফলে।

আরও পড়ুন
Advertisement