Israel-Palestine Conflict

যুদ্ধবিরতি আরও দু’দিন বাড়ল, বন্দি-বিনিময় চলছে

ইজ়রায়েলের সেনার তরফে জানানো হয়েছে, হামাসের হাতে বন্দি ১১ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা রেড ক্রসের হাতে এই ১১ জনকে তুলে দেওয়া হয়। ইজ়রায়েলি ভূখণ্ডের দিকে রওনা হয়েছেন তাঁরা।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:৫১
An image of Israel-Palestine Conflict

ধ্ববংসস্তূপেই খেলাঘর। দক্ষিণ গাজ়ার খান ইউনিসে প্যালেস্টাইনি শিশুরা। সোমবার। ছবি: রয়টার্স।

দু’দিন বাড়ল হামাস ও ইজ়রায়েলের যুদ্ধবিরতি। চার দিনের বিরতি আজই শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আজ সকালে ইজ়রায়েল জানায়, তারা এই বিরতি আরও দীর্ঘায়িত করতে ইচ্ছুক। হামাসকে সেই প্রস্তাবও দেয় তারা। তবে শর্ত হল, আরও ইজ়রায়েলি বন্দিকে মুক্তি দিতে হবে। তাতে সম্মতি প্রকাশ করেছে হামাস। দিনের শেষে হামাস ঘোষণা করেছে, দু’দিন বাড়ানো হয়েছে যুদ্ধবিরতি।

Advertisement

ভারতীয় সময় আজ গভীর রাতে শুরু হয় চতুর্থ দফার বন্দি-বিনিময়। ইজ়রায়েলের সেনার তরফে জানানো হয়েছে, হামাসের হাতে বন্দি ১১ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে আজ। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা রেড ক্রসের হাতে এই ১১ জনকে তুলে দেওয়া হয়। আজই ইজ়রায়েলি ভূখণ্ডের দিকে রওনা হয়েছেন তাঁরা। তবে গভীর রাত পর্যন্ত ইজ়রায়েলের তরফে কোনও প্যালেস্টাইনি বন্দি-মুক্তির খবর পাওয়া যায়নি। যদিও ইজ়রায়েল সরকারের কাছে বন্দিদের নামের তালিকা পাঠিয়ে রেখেছে হামাস।

বিরতির প্রথম দিনটা সফল হতেই আমেরিকা-ফ্রান্স বলতে শুরু করেছিল, এই যুদ্ধবিরতি আরও বাড়ানো প্রয়োজন। আজ বিরতির শেষ দিন মিশর, কাতার ও আমেরিকা বৈঠক করে একত্রিত ভাবে জানিয়েছে, তারা সকলেই চায় যুদ্ধ আরও বেশ কিছু দিন বন্ধ থাকুক। রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেসও এ বিষয়ে জোর দিয়েছেন। এতে শুরু থেকেই আপত্তি ছিল না হামাসের। তবে তাদের দাবি ছিল, আরও চার দিন যুদ্ধ বন্ধ রাখা হোক। কিন্তু ইজ়রায়েল চায়, বিষয়টা এক দিন-এক দিন করে বাড়াতে। এ নিয়ে এবং বন্দি বিনিময় প্রসঙ্গে দিনভর দর কষাকষি চলে। শেষে আরও দু’দিন যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়।

ঘরে-বাইরে চাপে ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। শনি-রবি তেল আভিভ, জেরুসালেমে দীর্ঘ মিছিল হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের একাংশের দাবি, অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে নেতানিয়াহুকে। হামাসের ডেরা থেকে ইজ়রায়েলি বন্দিদের সকলকে ফিরিয়ে আনার বিষয়েও ক্রমাগত চাপ বাড়ছে। বন্দিদের পরিবার, সাধারণ মানুষ ভিড় করছেন নেতানিয়াহুর মূল প্রতিদন্দ্বী বেনি গ্যান্তজ়ের চারপাশে। আশঙ্কা, ৭ অক্টোবরের হামাসের হামলা রুখতে ব্যর্থ হওয়ার মাসুল গুণতে হতে পারে ৭৪ বছর বয়সি রাষ্ট্রপ্রধানকে। এক দিকে, রাজনৈতিক অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই, অন্য দিকে হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ। এ অবস্থায়, যুদ্ধ বিশেষজ্ঞদের অনুমান ছিলই, পরিস্থিতি খুব প্রতিকূল না হলে যুদ্ধবিরতি বাড়বে। বন্দি-বিনিময়ও চলবে। আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ‘‘এটাই আমাদের লক্ষ্য। যুদ্ধবিরতি আরও চলুক। তাতে আরও অনেক বন্দি মুক্তি পাবেন। গাজ়ায় আরও বেশি পরিমাণ ত্রাণসামগ্রীও ঢুকতে পারবে।’’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘‘আমার মনে হয়, এই অঞ্চলের সব শাসকই চাইবেন, সমস্যার শেষ হোক। সব বন্দিরা মুক্তি পাক। ... তা ছাড়া গাজ়া আর হামাসের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নেই।’’ এ পর্যন্ত হামাস মোট ৫০ জন ইজ়রায়েলিকে মুক্তি দিল। ইজ়রায়েল আপাতত ১১৭ জন প্যালেস্টাইনিকে জেল থেকে ছেড়েছে।

তবে এক দিকে যেমন বন্দি-মুক্তি চলছে, অন্য দিকে নতুন করে প্যালেস্টাইনিদের গ্রেফতারও চলছে। গত এক রাতে ৬০-এরও বেশি প্যালেস্টাইনিকে গ্রেফতার করা হয়েছে ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে। রাষ্ট্রপুঞ্জের একটি সংস্থা জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে অন্তত ২১৫ জন প্যালেস্টাইনিকে হত্যা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫৫টি শিশু। এ ছাড়াও, আরও ৮ জন খুন হয়েছেন ইজ়রায়েলি দখলদারদের হাতে। অভিযোগ, ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের বিভিন্ন প্রান্তে ইজ়রায়েল সরকার অল্প অর্থে জমি দিচ্ছে ইজ়রায়েলিদের। তারা এসে প্যালেস্টাইনিদের উচ্ছেদ করে দিয়ে নিজেদের ঘর-বাড়ি তৈরি করছেন। ফলে মাঝে মধ্যেই দু’দলের সংঘর্ষ লেগে থাকে। খুন-জখমের খবরও প্রায়শই মেলে। গাজ়ায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এ ধরনের ঘটনা আরও বেড়েছে।

আরও পড়ুন
Advertisement