বন্দি ইউঘুর মুসলিমরা। ছবি: রয়টার্স।
চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনিপিংয়ের সরকার আগেই ‘সন্দেহজনক’ হিসেবে চিহ্নিত করেছিল তাঁদের। প্রত্যর্পণের জন্য বার বার চাপ দিচ্ছিল তাইল্যান্ড সরকারকে। শেষ পর্যন্ত সেই চাপে নতি স্বীকার করে গত এক দশক ধরে ব্যাঙ্ককে নজরবন্দি থাকা উইঘুর মুসলিমদের চিনে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হল।
বিবিসিতে প্রকাশিত খবর জানাচ্ছে, ২০১৫ সালের পর এ বারই তাইল্যান্ড প্রথম উইঘুর অভিবাসীদের চিনে ফেরত পাঠাল। মানবাধিকার সংস্থাগুলির আপত্তি উপেক্ষা করে ইতিমধ্যেই অন্তত ৪০ জন উইঘুরকে চিনে ফেরত পাঠিয়েছে তাইল্যান্ড সরকার। চিনে তাঁরা নির্যাতনের শিকার হতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
চল্লিশের দশকে স্বাধীন রাষ্ট্র পূর্ব তুর্কিস্তান দখল করে শিনজিয়াং প্রদেশ তৈরি করেছিলেন একদলীয় চিনের কমিউনিস্ট শাসক মাও জে দং। তার পর উইঘুর মুসলিমরা প্রতিরোধের লড়াই শুরু করেন। সেই সঙ্গে শুরু হয় চিনা সেনার অত্যাচারও। পাশাপাশি, মূল চিনা ভূখণ্ড থেকে প্রধানত হান জনজাতির লোকেদের নিয়ে এসে শিনজিয়াংয়ে জনসংখ্যার ভারসাম্য বদলে দেওয়ার চেষ্টাও শুরু হয়। গত ছ’দশকে লাল ফৌজের অত্যাচারে শিনজিয়াংয়ে লক্ষাধিক মুসলিম ভূমিপুত্র নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ।
গত কয়েক বছর ধরেই অভিযোগ উঠেছে, উইঘুর এবং তুর্কিভাষী ১০ লক্ষেরও বেশি ইসলাম ধর্মাবলম্বীকে শিনজিয়াংয়ের বিভিন্ন বন্দিশিবিরে (ডিটেনশন ক্যাম্পে) রাখা হয়েছে। বলপূর্বক তাঁদের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান ত্যাগ করতে বাধ্য করা হচ্ছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কমিশনের একাধিক রিপোর্টেও উইঘুরদের বন্দি করার অভিযোগে নিশানা করা হয়েছে চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সরকারকে। কয়েক বছর আগে পশ্চিমি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন জানানো হয়েছিল, আন্তর্জাতিক চোরাবাজারে বিক্রি হওয়া কিডনি, লিভার-সহ বিভিন্ন মানব অঙ্গপ্রত্যঙ্গের বড় অংশের মালিক চিনের বন্দিশিবিরে আটক হতভাগ্য উইঘুর মুসলিমরা! জোর করে তাদের অঙ্গ কেটে বিক্রি করছে বেজিং!