—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থান ঘটিয়ে গণতন্ত্রিক আন্দোলনের নেত্রী আউং সান সু চির দল ‘ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি’র নেতৃত্বাধীন সরকারকে উৎখাত করেছিল মায়ানমার সেনা। শুরু হয়েছিল সামরিক জুন্টার শাসন। গত দু’বছর সেই ক্ষমতা দখলের ‘উৎসব’ পালন করা হলেও, এ বার তা হল না। উল্টে, তিন বছর আগে সেনার ক্ষমতা দখলের বর্ষপূর্তিতে বিদ্রোহী জোট ‘ব্রাদারহুড অ্যালায়্যান্স’ দাবি করল, এই মুহূর্তে মায়ানমারের ৬০ শতাংশ এলাকা তাদেরই নিয়ন্ত্রণে।
গত নভেম্বর থেকে সে দেশের তিন বিদ্রোহী গোষ্ঠী— ‘তাঙ ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি’ (টিএনএলএ), ‘আরাকান আর্মি’ (এএ) এবং ‘মায়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মি’ (এমএনডিএএ)-র নয়া জোট ‘ব্রাদারহুড অ্যালায়্যান্স’ সামরিক জুন্টা সরকারের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে। ওই অভিযানের পোশাকি নাম ‘অপারেশন ১০২৭’। পরবর্তী সময়ে জুন্টা-বিরোধী যুদ্ধে শামিল হয় ‘চিন ন্যাশনাল আর্মি’ (সিএনএ) এবং চায়নাল্যান্ড ডিফেন্স ফোর্স (সিডিএফ), ‘কাচিন লিবারেশন ডিফেন্স ফোর্স’ (কেএলডিএফ), পিপল’স ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ)।
মায়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী শক্তির স্বঘোষিত সরকার ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’, জুন্টা বিরোধী রাজনৈতিক দল ‘শান স্টেট প্রোগ্রেস পার্টি’ বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। থাইল্যান্ডে নির্বাসিত মায়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নাগরিকদের পরিচালিত সংবাদমাধ্যম ‘ইরাবতী’ খোলাখুলি ‘ব্রাদারহুড অ্যালায়্যান্স’-এর পক্ষে প্রচার করছে। বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মদতপুষ্ট রাজনৈতিক গোষ্ঠী ‘দ্য ইউনাইটেড ওয়া স্টেট পার্টি’ (ইউডব্লিউএসপি) ইতিমধ্যেই কয়েকটি প্রদেশে সমান্তরাল সরকার চালানোও শুরু করে দিয়েছে।
বস্তুত, রাজধানী নেপিডো, প্রধান শহর ইয়াঙ্গন এবং আরও কিছু বড় জনপদ-শিল্পাঞ্চলেই এখন সেনার গতিবিধি সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে বলে খবর। কিন্তু এখনও বিদ্রোহীরা দেশ দখল করতে পারবে না বলেই মনে করছেন সামরিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁদের যুক্তি, দেশের বড় জনপদগুলিতে মূলত সংখ্যাগুরু বামার জনগোষ্ঠীর বাস। তাঁদের বড় অংশ জুন্টার সমর্থক। প্রভাবশালী বৌদ্ধ ভিক্ষুরাও এখনও জুন্টার পাশে রয়েছেন। অন্য দিকে, মূলত প্রান্তিক এলাকার জনজাতি গোষ্ঠীগুলি রয়েছে বিদ্রোহীদের জোটে।