বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হতে চলেছেন মুহাম্মদ ইউনূস। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান করে বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি সেই প্রস্তাব মেনেও নিয়েছেন। তবে ইউনূস এত দিন বাংলাদেশে ছিলেন না। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার তিনি দেশে ফিরবেন। তার পরে গঠিত হবে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার।
সোমবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন শেখ হাসিনা। বোন রেহানাকে নিয়ে বাংলাদেশ ছেড়ে চলে গিয়েছেন তিনি। বর্তমানে রয়েছেন দিল্লিতে। এই পরিস্থিতিতে সোমবার থেকেই বাংলাদেশ সরকারবিহীন। হাসিনা পদত্যাগ করার পর বাংলাদেশের সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান জানিয়ে দেন, অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হবে। সেই সরকারের প্রধান কে হবেন, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত হয় মঙ্গলবার। সরকারের রূপরেখা তৈরি করতে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি শাহবুদ্দিনের সঙ্গে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ১৩ জন সদস্যের একটি দল বৈঠকে বসে। সেখানে ছিলেন তিন সেনাবাহিনীর প্রধান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপকেরা। সেই বৈঠকেই সর্বসম্মতিতে ইউনূসকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ইউনূসের বাংলাদেশে ফেরার কথা। দুবাই হয়ে বাংলাদেশে ফিরবেন তিনি। সরকার না থাকায় বাংলাদেশে অরাজকতা চলছে। মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সেনাবাহিনী এবং ছাত্রনেতাদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, যত দ্রুত সম্ভব অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হবে। মনে করা হচ্ছে, ইউনূস দেশে ফিরলে বৃহস্পতিবারই তিনি সরকারের প্রধান হিসাবে দায়িত্ব নিতে পারেন।
কোটা সংস্কার আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা নেওয়া ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর শীর্ষ সারিতে থাকা ছাত্রনেতারাই প্রথম অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসাবে ইউনূসের নাম প্রস্তাব করেছিলেন। তার পর বৈঠকে সেই সিদ্ধান্তেই সিলমোহর পড়ে। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির প্রেসসচিব জানিয়েছেন, অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের বাকি সদস্যদের নাম চূড়ান্ত করা হবে।
ইউনূস গ্রামীণ ব্যাঙ্কের প্রতিষ্ঠাতা। চার দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের দরিদ্র মানুষকে জামানত ছাড়াই ঋণ দিয়েছেন ইউনূস। এই ব্যাঙ্ক স্থাপনের ভাবনার জন্যই তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছেন। তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশে শান্তি ফিরবে বলে আশা করা হচ্ছে।