লয়েড অস্টিন ছবি: রয়টার্স।
ডোনাল্ড ট্রাম্প জমানার ভারত সংক্রান্ত সামরিক নীতিতে বড়সড় কোনও পরিবর্তন আনবেন না আমেরিকার নয়া প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সে দেশের পরবর্তী প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন এই ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘ভারতকে আমরা ‘গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা সহযোগী’ হিসেবেই বিবেচনা করব। দ্বিপাক্ষিক সামরিক সহযোগিতা দৃঢ় করার লক্ষ্যে কাজ চালিয়ে যাব।’’
আমেরিকার সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল অস্টিন মঙ্গলবার সেনেট সদস্যদের সভায় জানান, নয়াদিল্লির সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা বাড়ানোর পদক্ষেপ হিসেবে ‘কোয়াড’ (অস্ট্রেলিয়া এবং জাপানকে সঙ্গে নিয়ে ভারত-আমেরিকার সামরিক জোট)-এর মতো আরও আন্তর্রাষ্ট্রীয় অক্ষ গঠন করার চেষ্টা করবেন তাঁরা।
পাশাপাশি, ওয়াশিংটনের পাকিস্তান সম্পর্কিত নীতিও মোটের উপর একই থাকবে বলে একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন তিনি। পাকিস্তান সরকার লস্কর-ই-তইবা, জয়েশ-ই-মহম্মদের মত ভারত-বিরোধী জঙ্গিগোষ্ঠীগুলির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেছে বলেও ‘সার্টিফিকেট’ দিয়েছেন তিনি।
প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ভারত-আমেরিকা কৌশলগত অংশীদারিত্বের প্রক্রিয়া সূচনা হয়েছিল প্রায় দু’দশক আগে। প্রেসিডেন্ট জুনিয়র বুশের জমানায়। পরবর্তী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে পরস্পরের সামরিক ঘাঁটি ব্যবহারের মতো গুরুত্বপূর্ণ চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছিল নয়াদিল্লি এবং ওয়াশিংটন। ট্রাম্পের আমলে প্রতিরক্ষা সহযোগিতার ক্ষেত্র আরও প্রসারিত হয়।
চিন যে ভাবে পাকিস্তানকে সঙ্গে নিয়ে ভারত বিরোধী বৃত্ত গড়ে তুলতে সক্রিয়, তাতে পাল্টা সামরিক জোট ভারতেরও প্রয়োজন। আর তা উপলব্ধি করেই জাপান এবং অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে হাত মিলিয়ে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় চিনের সামরিক প্রভাব খর্ব করার চেষ্টা শুরু হয়। আমেরিকার পরবর্তী প্রতিরক্ষা সচিবের বার্তা, আগামী দিনেও এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।
তবে বাইডেন জমানার সূচনা পর্বেই ইসলামাবাদ প্রসঙ্গে ‘নমনীয়তা’র ইঙ্গিত নয়াদিল্লিকে কিছুটা চাপে ফেলল বলেই কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের অনুমান। ট্রাম্প সরকার ২০১৮ সালে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইসলামাবাদের ‘সদিচ্ছা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। পাকিস্তানকে সামরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রেও কয়েকটি বিধিনিষেধ বলবৎ করেছিল। বাইডেন সরকার এ ক্ষেত্রে কী পদক্ষেপ নেয়, তা নিয়ে জল্পনা তৈরি করেছে অস্টিনের মন্তব্য।