Myanmar Earthquake

ত্রাণে অন্তরায় গৃহযুদ্ধ! ভূমিকম্পের পরে মায়ানমারে খাবার, আশ্রয় ছাড়া দিন কাটাচ্ছেন বহু মানুষ

ভূমিকম্পে মান্দালয়ে প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে শিশুদের একটি স্কুল। শুক্রবার দুপুরে যখন কম্পন হয়, তখন স্কুলটিতে পড়াশোনা চলছিল। ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে ৫০টি শিশু এবং দু’জন শিক্ষকের।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২৫ ১৭:৫১
মান্দালয়ে খোলা আকাশের নীচে চলছে আহতদের চিকিৎসা।

মান্দালয়ে খোলা আকাশের নীচে চলছে আহতদের চিকিৎসা। ছবি: রয়টার্স

ভূমিকম্পের পরে সব দেশের কাছে ত্রাণ পাঠানোর আবেদন জানিয়েছিল মায়ানমারের জুন্টা সরকার। সেই আর্জি শুনে ভারত-সহ বহু দেশ ত্রাণ পাঠিয়েছে। কিন্তু অভিযোগ, বিদ্রোহীদের দখলে থাকা এলাকায় ত্রাণ পাঠাতে দিচ্ছে না জুন্টা সরকার। না খেয়ে রাস্তায় দিন কাটাচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। উদ্ধারকারী সংগঠনগুলির দাবি, ভূমিকম্পে মৃতের সঠিক সংখ্যাও পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ বহু জায়গায় এখনও পৌঁছতেই পারেননি তাদের কর্মীরা। এখন পর্যন্ত মেলা সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, মায়ানমারে ভূমিকম্পে মৃত্যু হয়েছে ২,৭১৯ জনের। সেই সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা।

Advertisement

মঙ্গলবার মায়ানমারের সেনা নেতা মিন আং এইচলাইং জানিয়েছেন, শুক্রবারের ভূমিকম্পে আহত হয়েছে ৪,৫২১ জন। নিখোঁজ ৪৪১ জন। শুক্রবারের ওই ভূমিকম্পে কম্পনের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৭.৭। ভেঙে গিয়েছে হাজার হাজার বাড়ি, প্রাচীন সৌধ, মসজিদ, বৌদ্ধ প্যাগোডা। ফাটল ধরেছে রাস্তা, সেতুতে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন দেশের বড় অংশ। ভূমিকম্পের উৎসস্থল ছিল মান্দালয়ের কাছে। মায়ানমারে ওই শহরই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবিক বিষয়ক দফতর জানিয়েছে, ভূমিকম্পে মান্দালয়ে প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে শিশুদের একটি স্কুল। শুক্রবার দুপুরে যখন কম্পন হয়, তখন স্কুলটিতে পড়াশোনা চলছিল। ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে ৫০টি শিশু এবং দু’জন শিক্ষকের।

রাষ্ট্রপুঞ্জের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, মান্দালয়ের বহু ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় এখনও বিশুদ্ধ পানীয় জল এবং খাবারের অভাব রয়েছে। বহু মানুষ রাস্তায় রাত কাটাচ্ছেন। কারও কারও আবার ঘরবাড়ি ঠিক থাকলেও তাঁরা আতঙ্কে খোলা মাঠে রাত কাটাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক উদ্ধার কমিটি (আইআরসি)-র এক সদস্য। ওই কমিটির তরফে জানানো হয়েছে, মায়ানমারের অনেক জায়গাতেই ত্রাণ পৌঁছে দিতে পারছেন না তাদের কর্মীরা। কারণ বাধা দিচ্ছে জুন্টা সরকার। মূলত বিদ্রোহী অধ্যুষিত এলাকাতেই তারা বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ।

২০২১ সালে সেনা অভ্যুত্থান হয় মায়ানমারে। ক্ষমতায় আসে জুন্টা সরকার। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল’-এর দাবি, যে সব এলাকা জুন্টা সরকারের অধীনে নেই, সেখানে ত্রাণ নিয়ে যেতে বাধা দিচ্ছে তারা। ‘অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল’-এর মায়ানমার বিষয়ক গবেষক জো ফ্রিম্যান জানিয়েছেন, সে দেশের সেনার ক্ষেত্রে এ সব নতুন নয়। তাদের বিরোধীদের দখলে থাকা এলাকায় বার বার ত্রাণ পাঠানোয় বাধা দেয় তারা। বিদ্রোহীদের দাবি, শুধু ত্রাণ বন্ধ করেনি, ভূমিকম্পের পরেও তাদের এলাকায় বিমান থেকে বোমা ফেলেছে জুন্টা সরকার। ফলে সেই সব এলাকায় পরিস্থিতি আরও খারাপ। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি মনে করছে, চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যু হতে পারে ভূমিকম্পে গুরুতর আহতদের। সে ক্ষেত্রে বৃদ্ধি পারে মৃত্যুর সংখ্যা।

Advertisement
আরও পড়ুন