Mountain Expeditions

ধৌলাগিরিতে মেজর, জোড়া শৃঙ্গে আরোহীরা

ইতিহাস বলছে, ১৯৫৫ সালে রয়্যাল ব্রিটিশ সেনার দল শিকরবেহ্‌ শৃঙ্গে প্রথম অভিযান চালায়। এর পরে জাপান, ইতালি, ভারত এমনকি বাংলা থেকে অভিযান হলেও শীর্ষ আজও নাগালের বাইরে।

Advertisement
স্বাতী মল্লিক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৯:০৫
An image of expedition

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

প্রথম আট হাজারি পথে গিয়েই এভারেস্ট-লোৎসে জোড়া আরোহণ করেছিলেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর বাঙালি মেজর। সেই হিমালয়ের টানেই এ বার ধৌলাগিরি (৮১৬৭ মিটার) অভিযান করছেন বাঙালি মেজর চিরাগ চট্টোপাধ্যায়। অন্য দিকে, গত বছর কাশ্মীরের ব্রহ্মা শৃঙ্গে অভিযান চালিয়ে ইতিহাস সৃষ্টিকারী আরোহীরা এ বার হিমাচলের এমন দু’টি শৃঙ্গে অভিযান চালাতে চলেছেন, যা আজ পর্যন্ত অধরা! পর্বতারোহী রুদ্রপ্রসাদ হালদারের নেতৃত্বে তাঁরা অভিযান করবেন হিমাচলের শিকরবেহ্‌ (৬২০০ মিটার) এবং গুপ্ত পর্বতে
(৬১৫৯ মিটার)।

Advertisement

নৈহাটির বাসিন্দা, বছর পঁয়ত্রিশের চিরাগ ব্যক্তিগত উদ্যোগেই গত বছর এভারেস্টে যান। এ বার বিশ্বের সপ্তম উচ্চতম শৃঙ্গে অভিযানের আগে তিনি বলছেন, ‘‘কাঞ্চনজঙ্ঘা বা অন্নপূর্ণায় যাব বলে ভেবেছিলাম। কিন্তু আমার বন্ধুর ধৌলাগিরি বাদে নেপালের বাকি আট হাজারি শৃঙ্গগুলি করা হয়ে গিয়েছে। তাই বন্ধুর অনুরোধেই ওর সঙ্গে ধৌলাগিরি যাচ্ছি।’’ চিরাগ জানাচ্ছেন, ধৌলাগিরিতে মার্চ-এপ্রিলে ঠান্ডা বেশি থাকলে তুষারধসের আশঙ্কা কম থাকে। তাই বর্তমানে ধৌলাগিরি অভিযানের এটাই প্রশস্ত সময়। আগামী ১৫ মার্চ দিল্লি থেকে রওনা দেবেন তিনি।

অন্য দিকে, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশে কর্মরত রুদ্রপ্রসাদের নেতৃত্বে ৪৩ বছর পরে ব্রহ্মা শৃঙ্গজয় করেছিলেন নয় বাঙালি। ২০২২ সালেও সাফল্য এসেছিল হিমাচলের ইন্দ্রাসনে। সেই দল আগামী মে-জুনে অভিযান চালাবে হিমাচলের স্বল্প পরিচিত ও ঝুঁকিপূর্ণ শিকরবেহ এবং গুপ্ত পর্বতে। এ পথে রুদ্রপ্রসাদের সঙ্গী সপ্তশৃঙ্গজয়ী সত্যরূপ সিদ্ধান্ত, ব্রহ্মাজয়ী রুদ্রপ্রসাদ চক্রবর্তী, নৈতিক নস্কর, দেবাশিস মজুমদার, উদ্দীপন হালদার, তুহিন ভট্টাচার্য, চয়ন চট্টোপাধ্যায় এবং নয়া সদস্য দীপাশ্রী পাল, নন্দিশ কালিমানি।

ইতিহাস বলছে, ১৯৫৫ সালে রয়্যাল ব্রিটিশ সেনার দল শিকরবেহ্‌ শৃঙ্গে প্রথম অভিযান চালায়। এর পরে জাপান, ইতালি, ভারত এমনকি বাংলা থেকে অভিযান হলেও শীর্ষ আজও নাগালের বাইরে। আর এই শৃঙ্গের আড়ালে ঢাকা পড়েই লোকচক্ষুর অন্তরালে রয়ে গিয়েছে গুপ্ত পর্বত। তার ‘গুপ্ত পথে’ এখনও কোনও পর্বতারোহীর পা পড়েছে কি না সন্দেহ!

হিমাচলের অন্যতম অতি-কঠিন শৃঙ্গের একটি হলেও এতদিন কেন অধরা শিকরবেহ্? রুদ্রপ্রসাদ জানালেন, চন্দ্র নদীর গা থেকে পাহাড়টি আচমকা খাড়া উঠে যাওয়ায় এর ঢাল অত্যধিক। সেই রুটে প্রায় ১৫,৫০০ ফুটের আগে বেসক্যাম্প তৈরির জায়গা নেই। এলাকার ম্যাপও খুঁটিয়ে করা নয়। ‘‘আস্ত রাহু-কেতু হিমবাহের অস্তিত্বই নেই ম্যাপে! অন্য পথ দিয়ে আরোহণ করলে বেসক্যাম্পে পৌঁছতে পাস পেরোতে হবে। ফলে সব দিক থেকে শিকরবেহের প্রতিবন্ধকতা অনেকটাই বেশি।’’ —বলছেন দলনেতা। তাই ভিন্ন পথে এগোনোর পরিকল্পনা রয়েছে অভিযাত্রীদের। খরচ প্রায় ১৭ লক্ষ। সত্যরূপের কথায়, ‘‘ম্যাপ দেখে স্থির হয়েছে, শিকরবেহের দক্ষিণ-পশ্চিম গিরিশিরা ধরে এগোব। বেসক্যাম্প হবে ৪১০০ মিটার উচ্চতায়, রাহু-কেতু হিমবাহের উপরে। ক্যাম্প ১-এর পরে ৫০০ মিটারেরও বেশি খাড়া পাথুরে অংশ টপকে, রিজে পৌঁছে সামিটের দিকে এগোতে হবে। আর গুপ্ত পর্বতে এর দক্ষিণগাত্র দিয়ে ওঠার চেষ্টা হবে।’’

আরও পড়ুন
Advertisement