মৌলবাদীদের হাত দেখছেন অনুরাগীরা
Pori Moni

গ্রেফতারি পরোয়ানা পরীমনির বিরুদ্ধে, হাত কি মৌলবাদের

অভিনেত্রী নিজেও এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, আদালতে যাওয়ার বিষয়ে তাঁর কোনও আপত্তি নেই। আগেও ছিল না। এমনকি যখন তিনি সন্তানসম্ভবা, তখনও অন্য একটি মামলায় আদালতে হাজিরা দিয়েছেন।

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:১৯
পরীমনি।

পরীমনি। —ফাইল চিত্র।

বছর তিনেক আগে এক ব্যবসায়ীকে মারধর, খুনের চেষ্টা এবং হুমকি দেওয়ার অভিযোগে দায়ের করা একটি পুরনো মামলায় বাংলাদেশের অভিনেত্রী পরীমনির বিরুদ্ধে আজ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করল ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। পরীমনির আইনজীবী জানিয়েছেন, মামলার শুনানি চলছিল। অসুস্থতার জন্য পরীমনি আদালতে হাজির হতে পারেননি। অভিনেত্রী নিজেও এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, আদালতে যাওয়ার বিষয়ে তাঁর কোনও আপত্তি নেই। আগেও ছিল না। এমনকি যখন তিনি সন্তানসম্ভবা, তখনও অন্য একটি মামলায় আদালতে হাজিরা দিয়েছেন। এ দিন তিনি এতটাই অসুস্থ ছিলেন যে, বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ানোর শক্তি ছিল না। ফলে হাজিরা দিতে পারেননি। তিনি সময় চেয়ে আবেদন করলেও রবিবার আদালত অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে।

Advertisement

বেশ কয়েক বছর আগে মাদকচক্রে নাম জড়ানোয় বিপাকে পড়েছিলেন পরীমনি। ২৭ দিন জেলেও থাকতে হয়েছিল তাঁকে। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, ২০২২ সালে ঢাকা আদালতে অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করেন নাসির উদ্দিন মাহমুদ নামের এক ব্যবসায়ী। তাঁর অভিযোগ, ২০২১ সালের জুনে পরীমনি ও তাঁর সঙ্গীরা ঢাকার বোট ক্লাবে ঢুকে মদ্যপান করেন। ক্লাব থেকে বেরোনোর সময়ে ওই ব্যবসায়ীর কাছে বিনামূল্যে মদের বোতল চান অভিনেত্রী। তা না দেওয়ায় নাসির উদ্দিনের উপরে অভিনেত্রী চড়াও হন এবং কাচের গ্লাস ছুড়ে মারেন বলে অভিযোগ। এই ঘটনাকে হত্যার চেষ্টা বলে অভিযোগ দায়ের করেন নাসির।

এই মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির প্রসঙ্গে অন্য গন্ধ পাচ্ছেন পরীমনির অনুরাগীরা। তাঁদের মতে, কট্টর মৌলবাদীদের অপছন্দের তালিকায় থাকা পরীমনির সাম্প্রতিক মন্তব্য ও কর্মকাণ্ডের জেরেই অভিনেত্রীকে ‘রাজরোষে’ পড়তে হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত কয়েক দিন ধরে টাঙ্গাইলের কালিহাতি উপজেলায় একটি প্রসাধন সামগ্রীর শোরুম উদ্বোধনের খবর ফেসবুকে প্রচার করছিলেন পরীমনি। জানিয়েছিলেন, তিনি নিজে উপস্থিত থেকে ওই শোরুমের উদ্বোধন করবেন। কিন্তু অনুষ্ঠানের আগে পরীমনির উপস্থিতি নিয়ে প্রবল আপত্তি জানায় হেফাজতে ইসলাম-সহ বেশ কয়েকটি কট্টর মৌলবাদী সংগঠন। প্রবল চাপের মুখে আয়োজকেরা অনুষ্ঠানটি স্থগিত করে দেয়। বিষয়টি নিয়ে কাল রাতে সমাজমাধ্যমে ক্ষোভ উগরে দেন অভিনেত্রী। তিনি লেখেন, ‘এত চুপ করে থাকা যায় নাকি!!! পরাধীন মনে হচ্ছে। শিল্পীদের এতো বাধা কেন আসবে? ...এমন স্বাধীন দেশে নিরাপদ নই কেন আমরা! ... ধর্মের দোহাই দিয়ে কী প্রমাণ করতে চলেছেন তারা? কি বলার আছে আর। এ দেশে সিনেমা, বিনোদন সব বন্ধ করে দেয়া হোক তাহলে! তাহলে কি আমরা ধরে নেব, আমরা ইমোশনালি ব‍্যবহার হয়েছিলাম তখন। নাকি এখন হচ্ছি? কোনটা। এই দায়ভার কিন্তু আমাদের সবার নিতে হবে’ (বানান অপরিবর্তিত)। অভিনেত্রী লিখেছেন, তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তিনি উল্লেখ করেন, এর আগে অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী এবং কণ্ঠশিল্পী পরশীও এমন হেনস্থার শিকার হয়েছেন।

বাংলাদেশের সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠক সাদ রহমান ফেসবুকে এই গ্রেফতারির পরোয়ানার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, অন্তর্বর্তী সরকার মৌলবাদীদেরই সমস্ত শক্তির উৎস বলে মনে করে। ফলে প্রভাবশালী কেউ সরকারের শক্তিকে চ্যালেঞ্জ করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পরীমনির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা সেই বার্তাই দিয়েছে বলে মত তাঁর।

Advertisement
আরও পড়ুন