সৌজন্য! গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
বুধবার রাজ্যপালের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর কাছাকাছি তো নয়ই, প্রথম সারিতেই আসন পাননি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। অনুষ্ঠান বয়কট করেছিল বিজেপি। তার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই বিরোধী দলনেতাকে চা খাওয়ার জন্য বিধানসভা ভবনে নিজের ঘরে ডেকে নিলেন মুখ্যমন্ত্রী!
মিনিট চারেকের সাক্ষাৎ সেরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘আমি চা খেতে ডেকেছিলাম।’’ আর যাঁকে চা খেতে ডেকেছিলেন, সেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, ‘‘সংসদীয় গণতন্ত্রে সৌজন্য থাকবে। তাই সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলাম। তবে কী আলোচনা হয়েছে বলব না। সংসদীয় গণতন্ত্রে সেটা উচিত নয়।’’ তবে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু মুখ্যমন্ত্রীর মমতার ঘরে একা চায়ের আমন্ত্রণ রক্ষা করতে যাননি। তাঁর সঙ্গে গিয়েছিলেন কয়েক জন দলীয় বিধায়কও।
ঘটনাচক্রে, মমতা চা খেতে ডাকলেও সময়ের অভাবে সেই চা-টাই খাওয়া হয়নি শুভেন্দুদের। তবে মমতা-শুভেন্দুর সাম্প্রতিক সম্পর্কের নিরিখে প্রথম জনের দ্বিতীয় জনকে আমন্ত্রণ জানানোই যথেষ্ট কৌতূহলোদ্দীপক!
কেন ডাকলেন মমতা? কেন গেলেন শুভেন্দু? দু’জনের কেউই তা খোলসা করেননি। তবে শাসক এবং বিরোধী শিবিরের দুই যুযুধানের আচম্বিতে সাক্ষাৎ নিয়ে বিভিন্ন তত্ত্ব এবং ব্যাখ্যা রাজ্যের রাজনীতিতে শুরু হয়ে গিয়েছে। যার কোনওটিরই আনুষ্ঠানিক সমর্থন মেলেনি। তবে বিভিন্ন ব্যাখ্যা এবং অনুমান প্রশাসনিক এবং রাজনৈতিক মহলে উড়ছে।
অনেকে বলছেন, সাধারণ ভাবে দেখলে নতুন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে রাজভবনে যা হয়েছে, তা প্রশাসনিক এবং রাজনৈতিক— কোনও দিক দিয়েই ‘শিষ্টাচার’ মেনে হয়নি। প্রশাসনিক দিক দিয়ে দেখতে গেলে, যখন কোথাও কোনও বিধিবদ্ধ আইন থাকে না, তখন ‘প্রথা’ই ‘আইন’ হয়ে যায়। ফলে রাজভবনে সেই প্রথা ভেঙে মুখ্যমন্ত্রী প্রকারান্তরে আইনই ভেঙেছেন। আর রাজনৈতিক দিক দিয়ে দেখতে গেলে নতুন রাজ্যপালের কাছেও ‘সঠিক বার্তা’ যায়নি। কারণ, যা ঘটেছে, তাতে রাজ্যপালের শপথগ্রহণকে ছাপিয়ে গিয়েছে বিরোধী দলনেতার আসন সংক্রান্ত বিতর্ক। এতে নতুন রাজ্যপালের খুশি হলে অবাক হতে হবে। বিশেষত, যিনি জীবনে প্রথম বারের জন্য রাজ্যপাল পদে শপথ নিচ্ছেন। পাশাপাশিই, এই রাজ্যপাল নিজে প্রথা এবং রীতি-রেওয়াজ মেনে চলারই পক্ষপাতী। সে দিক দিয়ে দেখতে গেলেও তাঁর ‘সন্তুষ্ট’ হওয়ার কারণ নেই।
এর পরেও আরও একটি বিষয় আছে— যা ঘটেছে, তার প্রভাব দিল্লির সঙ্গে মমতার সম্পর্কের উপরেও পড়তে পারে। এবং সেই প্রভাব ‘ইতিবাচক’ না-হওয়াই স্বাভাবিক। বিশেষত, সেই সময়ে, যখন রাজ্যের স্বার্থে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা দিল্লির সঙ্গে সম্পর্ক ‘স্বাভাবিক’ করার চেষ্টা করছেন।
সেই প্রেক্ষিতেই অনেকেই মনে করছেন, মুখ্যমন্ত্রী ঠিক করেননি। কিন্তু বিষয়টি তিনি বুঝেছেন এবং বুঝে দ্রুত নিরাময় করেছেন। তাঁদের মতে, শুভেন্দুকে ঘরে চা খেতে ডাকা প্রকাশ্যে না-বললেও প্রকারান্তরে এটা মেনে নেওয়া যে, বিরোধী পক্ষের প্রতি কোথাও একটা শিষ্টাচার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছিল। তার পুনরাবৃত্তি মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি চাইছেন না। যদিও মমতার ঘনিষ্ঠদের একাংশ মনে করছেন, মুখ্যমন্ত্রী একটু বেশি ‘দ্রুত’ ক্ষত নিরাময়ে নেমেছেন। কিন্তু অন্য একাংশের দাবি, যে ‘অপ্রয়োজনীয় তিক্ততা’ তৈরি হয়েছিল, মমতা তা বুঝতে পেরেছেন। তিনি ‘ভুল’ বুঝতে পেরে তা দ্রুততার সঙ্গে সংশোধনে উদ্যোগী হয়েছেন। যা ঘটেছিল, তাকে আড়াল করার চেষ্টা না-করে সামনের দিকে তাকাতে চেয়েছেন। পরিস্থিতি সাপেক্ষে ‘নমনীয়’ হয়েছেন।
অনেকেই এর মধ্যে কেন্দ্র-রাজ্য পারস্পরিক সম্পর্কের সমীকরণও দেখছেন। তাঁদের মতে, অধুনা রাজ্যের স্বার্থেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সম্পর্ক ‘সহজ’ করতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। আগামী ৫ ডিসেম্বর তাঁর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক নির্ধারিত হয়ে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে নতুন রাজ্যপালের শপথে শুভেন্দুকে ঘিরে যা ঘটেছে, তাতে মোদীর ‘ক্ষুণ্ণ’ হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। কারণ, রাজ্যপাল বোস মোদীর ‘পছন্দ’। মোদীর ‘আস্থাভাজন’। আর রাজভবনের ঘটনায় যিনি সবচেয়ে বেশি ‘বিব্রত’ হয়ে থাকতে পারেন, তিনি রাজ্যপাল স্বয়ং। ঘটনাচক্রে, এই রাজ্যপাল নিজেও প্রথা মেনে চলেন। যে প্রথা অনুযায়ী তাঁর শপথে বিরোধী দলনেতার আসন প্রথম সারিতেই হওয়া উচিত। ওই ঘটনায় রাজ্যপালের ‘বিড়ম্বনা’ মোদী ভাল চোখে দেখবেন না বলেই মমতা ‘ক্ষত নিরাময়’ শুরু করলেন বলে অনেকের দাবি। সেই কারণেই তিনি এত দিন শুভেন্দু সম্পর্কে যে ‘কঠোর’ অবস্থান নিয়েছিলেন, তা অনেকটা নমনীয় করলেন।
বস্তুত, রাজ্য প্রশাসনের বড় অংশের বক্তব্য, রাজ্যপাল বোসের আমলে রাজভবনের সঙ্গে নবান্নের কোনও ‘রাজনৈতিক সংঘাত’ হবে না। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘এই সরকারের আমলে যে সমস্ত রাজ্যপাল এসেছেন, তাঁদের সঙ্গে সম্পর্কের নিরিখে এই রাজ্যপালের মতো রাজ্যপাল নবান্ন সম্ভবত পায়নি।’’ ওই আধিকারিকের মতে, রাজ্যপাল বোস আগের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের মতো রাজভবন থেকে রাজনীতি করবেন না। এই রাজ্যপাল ‘স্বচ্ছ এবং দক্ষ’ প্রশাসন চালানোর দিকে নজর দেবেন। তাই তাঁর স্বাচ্ছ্যন্দের বিষয়টিও শাসকদল এবং প্রশাসনের তরফে নিশ্চিত করা উচিত। বিরোধী দলনেতার পদের ‘অমর্যাদা’ করে যা মুখ্যমন্ত্রী সে দিনের শপথে আপাতদৃষ্টিতে করেননি।
ঘটনাচক্রে, কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের বকেয়া অর্থও ধাপে ধাপে পাঠাতে শুরু করেছে। যা তীব্র আর্থিক সঙ্কটে ভুগতে-থাকা রাজ্যকে খানিকটা হলেও অক্সিজেন দেবে। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা প্রধানমন্ত্রীকে কোনও ভাবেই ‘অসহিষ্ণু’ করতে চাইবেন না বলেও অনেকের অভিমত।
দ্বিতীয়ত, রাজ্যের প্রশাসনিক মহলের একাংশের অনুমান, বিজেপির শীর্ষমহল থেকে রাজ্যের রাজনৈতিক শীর্ষমহলে রাজ্যের বিরোধী দলনেতার পদকে ‘মর্যাদা’ দেওয়ার বার্তা পাঠানো হলেও হয়ে থাকতে পারে। বলা হয়ে থাকতে পারে, রাজনীতি রাজনীতির জায়গায় থাকুক। কিন্তু পরিষদীয় পদের সম্মান বজায় থাকুক। সেই জন্যই মুখ্যমন্ত্রী তাঁর অবস্থান বদলেছেন। তবে এই দাবির কোনও আনুষ্ঠানিক সমর্থন বিজেপির তরফেও মেলেনি।
তৃতীয়ত, রাজভবনের শপথ অনুষ্ঠানে যে ঘটনা ঘটেছিল, তাতে মমতার রাজনৈতিক ‘লাভ’ হয়েছিল কি না, না কি তিনি আসলে ‘সেমসাইড গোল’ করেছিলেন, তা নিয়ে প্রশাসনিক মহলে বিবিধ অভিমত তৈরি হয়েছে। রাজ্যপালের শপথে বিরোধী দলনেতার আসন প্রথম সারিতে নেই— এমন ঘটনা এ রাজ্যের ইতিহাসে আগে কখনও ঘটেছে কি না, কেউ মনে করতে পারছেন না। আধিকারিকদের একাংশের মতে, বিরোধী দলনেতাকে প্রথম সারিতে আসন না দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী দীর্ঘ দিনের ‘প্রথা’ ভেঙেছেন। ভেঙেছেন দীর্ঘ দিন ধরে চলে-আসা প্রোটোকল। রাজশাসনে যে প্রথা বহু দিন ধরে চলে আসছে, তা আইনেরই সমমর্যাদা পায়। এমনিতে যদিও আইনের মর্যাদাই সবচেয়ে বেশি। কিন্তু রাজশাসনে সব কিছু আইন করে করা সম্ভবও নয়। তাই ‘নীতি-রীতি-রেওয়াজ’ তৈরি করা হয়েছে। সেটাই প্রোটোকল। কোনও সময়ে তা লিখিত আকারে থাকে। আবার কখনও কখনও তা মৌখিক পর্যায়েই থাকে। রাষ্ট্রশাসনে যে ‘সহবত’ প্রত্যাশিত, সেটাই প্রোটোকল হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষত, যা প্রাচীন কাল থেকে চলে আসছে। কিন্তু সেটা কখনও ‘আইন’ হিসেবে প্রণীত হয় না। কিন্তু তার ব্যত্যয় হলে তা নজরে পড়ে। ‘দৃষ্টিকটু’ বলেও মনে হয়। তা নিয়ে আলোচনা এবং বিতর্ক শুরু হয়। যা এ ক্ষেত্রেও হয়েছে।
ঘটনাপ্রবাহ বলছে, এই নতুন রাজ্যপালের আমলে মমতা রাজভবনের সঙ্গে নতুন সম্পর্ক স্থাপন করতে চেয়েছেন। রাজ্যপালকে তাঁর পছন্দের মিষ্টি পাঠিয়ে আগে থেকেই স্বাগত জানিয়ে বোঝাতে চেয়েছেন, ধনখড়-যুগ অতীত। শুরুটা মিষ্টি দিয়ে হলেও শেষটা ‘মধুরেণ’ হয়নি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অনুষ্ঠান বয়কট করায়। শপথের চেয়ে শপথ ঘিরে বিতর্ক বড় হয়ে গিয়েছে। যে ঘটনা মুখ্যমন্ত্রী মমতা সম্পর্কে রাজ্যপালের মনে কোনও ধারণা তৈরি করে দিয়ে থাকতে পারে। যা খুব ‘অনুকূল’ না-হলেও কেউ বিস্মিত হবেন না। তার পরবর্তী সময়ে এ রাজ্যে বিরোধীরা যে তাদের ‘প্রাপ্য মর্যাদা’ পায়, সেটিও নতুন রাজ্যপালের নজরে প্রতিষ্ঠা করাটা মমতার কাছে জরুরি ছিল।
প্রকাশ্যে না-বললেও অনেকেই মনে করেন, বিরোধী দলনেতা সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রীর একটা ‘ব্যক্তিগত’ অপছন্দের জায়গা রয়েছে। সেটি তৈরি হয়েছে বিরোধী দলনেতার পদে শুভেন্দু আছেন বলেই। কারণ, তাঁর কাছে মমতার নন্দীগ্রামে পরাজয়ের ইতিহাস রয়েছে। ‘কম্পার্টমেন্টাল মুখ্যমন্ত্রী’ বলে সেই ক্ষতে সুযোগ পেলেই আঘাত করেছেন শুভেন্দু। তা ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে মমতাকে ‘ব্যক্তিগত’ আক্রমণও করেছেন। আক্রমণ করেছেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। তাঁকে শুভেন্দু ‘কয়লা ভাইপো’, ‘তোলাবাজ ভাইপো’ ইত্যাদি বলে লাগাতার সম্বোধন করেছেন। অভিষেকের পিতৃপরিচয় নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তৃণমূলকে ‘দল নয়, প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি’ বলেছেন। যার সপাট জবাব মমতা এবং অভিষেক দু’জনেই দিয়েছেন। কিন্তু সেই পারস্পরিক আক্রমণ অনেক সময়েই রাজনীতির সীমা ছাড়িয়েছে। এমনকি, অভিষেকের ঘনিষ্ঠেরা শুভেন্দুর ‘যৌন পছন্দ’ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন প্রকাশ্যে।
সেই সূত্রেই অনেকের ধারণা, বিরোধী দলনেতার নাম ‘শুভেন্দু অধিকারী’ না হলে বিষয়টি ওই পর্যায়ে যেত না। কারণ, মমতার প্রথম দু’টি মেয়াদের শাসনকালে তৎকালীন বিরোধী দলনেতাদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক এতটা খারাপ ছিল না। বিধানসভা বা জনসভা অথবা নির্বাচনী সভায় রাজনৈতিক আক্রমণ ছিল। কিন্তু ব্যক্তি আক্রমণ ছিল না। যেমন মমতা বিরোধী দলে থাকার সময়েও তৎকালীন বিরোধী দলনেতার সঙ্গে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল। পথ খোলা ছিল রাজনীতিতে পরিচিত ‘ট্র্যাক-টু’ কূটনীতিরও।
কিন্তু শুভেন্দু বিরোধী দলনেতা হওয়ার পর থেকেই সেই ঐতিহ্য এবং পরম্পরা আর দেখা যায়নি। বস্তুত, শুক্রবার রাজ্য বিধানসভায় যে দৃশ্য দেখা গিয়েছে, তা মমতার তৃতীয় বারের শাসনকালে নজিরবিহীন! শুভেন্দুর বক্তৃতায় বাধা দিতে তৃণমূল বিধায়কদের বারণ করছেন মমতা, শুভেন্দুকে অতীতে ‘ভাই’ সম্বোধন করার কথা বলেছেন, শুভেন্দুর পিতা প্রবীণ রাজনীতিক শিশির অধিকারীকে সম্মান করার কথা সর্বসমক্ষে বলেছেন এবং এবং তদুপরি শুভেন্দুকে নিজের কক্ষে চায়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। এ দৃশ্য দেখা তো দূরস্থান, কল্পনাও করেনি এই বিধানসভা।
তবে পাশাপাশিই রাজনৈতিক বক্তৃতায় একে অপরকে ছেড়ে কথা বলেননি মমতা-শুভেন্দু। সেখানে শুভেন্দু শাসকদলকে আক্রমণের সূত্রে রাজ্য সরকারকে বিঁধে বলেছেন, ‘‘অফ দ্য পার্টি, বাই দ্য পার্টি, ফর দ্য পার্টি।’’ আবার তার জবাবে মমতা বলেছেন, ‘‘অফ দ্য এজেন্সি, বাই দ্য এজেন্সি, ফর দ্য এজেন্সি!’’
যা থেকে অনেকে আশা করছেন, ভবিষ্যতে দু’পক্ষের আক্রমণ ‘রাজনীতি’-র মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। তবে একই সঙ্গে সেটি নিশ্চিত ভাবেও কেউ বলতে পারছেন না। কারণ, ইতিমধ্যেই বিজেপি ব্যাখ্যা করতে শুরু করেছে, রাজ্য সরকার এখন ‘বেকায়দায়’। কেন্দ্রীয় প্রকল্পের হিসাব দিতে না পারায় প্রচুর টাকা আটকে রয়েছে। ভূরি ভূরি দুর্নীতির অভিযোগে শাসকদল বিপাকে। এই অবস্থায় বাঁচার পথ খুঁজতেই শুভেন্দুর মাধ্যমে বিজেপি তথা কেন্দ্রের কাছাকাছি আসতে চাইছেন মমতা।
এখন প্রশ্ন— মমতা ‘সৌজন্য’ দেখানোর পরে শুভেন্দু কি ব্যক্তিগত আক্রমণের পথ থেকে সরবেন? তিনি কি তাঁর আক্রমণ শুধু রাজনীতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখবেন? অভিষেকই বা কী করবেন? তিনি এবং তাঁর ঘনিষ্ঠেরা মুখ্যমন্ত্রী-বিরোধী দলনেতার এই নতুন সমীকরণ কী ভাবে দেখবেন? কৌতূহল তৈরি হয়েছে তা নিয়েও। আগামী কিছু দিনে সেই কৌতূহলের নিরসন হয় কি না, তা দেখতে নজর রাখবে প্রশাসনিক এবং রাজনৈতিক বৃত্ত।