নিশীথ প্রামাণিক
নীলবাড়ির দখল পেলে মন্ত্রিসভার তরুণ মুখ হতে পারতেন কোচবিহারের সাংসদ। কিন্তু সে স্বপ্ন সম্ভব হয়নি। রাজ্য মন্ত্রিসভার ‘সম্ভাব্য মুখ’ হিসেবেই পাঁচ সাংসদকে বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী করেছিল বিজেপি। এর মধ্যে চার লোকসভার সাংসদ ছিলেন— কোচবিহারের নিশীথ প্রামাণিক, রানাঘাটের জগন্নাথ সরকার, হুগলির লকেট চট্টোপাধ্যায় এবং আসানসোলের বাবুল সুপ্রিয়। এ ছাড়াও প্রার্থী হয়েছিলেন রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত। এর মধ্যে জয় পান শুধু দু’জন। দিনহাটা ও শান্তিপুর আসন থেকে নিশীথ এবং জগন্নাথ।
সাংসদ পদ ধরে রাখতে দু’জনেই অবশ্য বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন। এ বার নিশীথ চলে গেলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায়। তবে নিশীথের জয় ছিল একেবারেই নাটকীয়। ২ মে ভোট গণনার দিনদেখা যায় তিনি এই এগোচ্ছেন তো পরক্ষণেই পিছোচ্ছেন। শেষ পর্যন্ত মাত্রই ৫৭ ভোটে জয় পান তিনি। তবে তাঁর জেতা কোচবিহার লোকসভা আসনের অন্তর্গত বিধানসভা আসনের ফলে বেশ ভাল নিশীথের রিপোর্ট কার্ড। লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে কোচবিহারে পাঁচটি বিধানসভায় এগিয়ে ছিল বিজেপি। সেখানে এ বার জিতেছে ছ’টিতে। অতিরিক্ত জয়টি এসেছে সিআরপিএফের বুলেট-দীর্ণ শীতলখুচি আসনে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা বা রাজ্য বিজেপি-র সাংগঠনিক রদবদলে যে সাংসদদের রিপোর্ট কার্ড বিবেচ্য হবে, তা আগেই জানিয়েছিল আনন্দবাজার অনলাইন। সেখানেই বলা হয়েছিল, উত্তরবঙ্গের দুই সাংসদ আলিপুরদুয়ারের জন বার্লা ও নিশীথ মন্ত্রী হতে পারেন। একই ভাবে বলা হয়েছিল, দক্ষিণবঙ্গে পুরস্কৃত হওয়ার সম্ভাবনা বাঁকুড়ার সাংসদ সুভাষ সরকার এবং বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের। বুধবার দেখা গেল, সেই চারজনই মোদী মন্ত্রিসভায় জায়গা পেলেন।
তবে শুধু রিপোর্ট কার্ডের দৌলতেই নয়, রাজবংশী নিশীথের মন্ত্রিসভায় জায়গা পাওয়ার পিছনে ভোটব্যাঙ্কের হিসেবও কাজ করেছে বলে মনে করছেন রাজ্য বিজেপি-র নেতাদের অনেকে। তাঁরা বলছেন, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনেও রাজবংশী ভোটকে নিজেদের দখলেই রাখতে চায় বিজেপি। আর সেই কারণেই উত্তরবঙ্গের আবেগ মাথায় রেখে নিশীথের মন্ত্রিত্বে উত্তরণ।ভোটপর্বে তাঁর প্রচার এবং পরিশ্রম নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন অমিত শাহ। বিভিন্ন বৈঠকে তিনি উত্তরবঙ্গের রাজবংশী জনজাতির প্রতিনিধি হিসেবে নিশীথকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন।