(বাঁ দিকে) রেশন ‘দুর্নীতি’তে ধৃত জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তাঁর কন্যা প্রিয়দর্শিনী মল্লিক (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
হাসপাতাল থেকে কন্যাকে চিঠি লিখেছিলেন রেশন ‘দুর্নীতি’কাণ্ডে ধৃত মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ওরফে বালু, আগেই এ কথা জানিয়েছিল ইডি। এ বার জানা গেল সেই চিঠিতে কী লেখা ছিল। ইডি সূত্রে খবর, টাকার লেনদেন প্রসঙ্গেই কয়েকটি কথা কন্যা প্রিয়দর্শিনী মল্লিককে চিঠিতে জানিয়েছিলেন বালু। সেখানে উল্লেখ করা ছিল এই মামলায় ধৃত বনগাঁর প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য ওরফে ‘ডাকু’র নামও।
গত শুক্রবার শঙ্করের বনগাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালায় ইডি। তাঁকে মধ্যরাতে গ্রেফতার করা হয়। পরের দিন আদালতে ইডি জানায়, হাসপাতালে জ্যোতিপ্রিয়ের সঙ্গে চিঠির মাধ্যমে যোগাযোগ রেখেছিলেন ‘ডাকু’। একটি চিঠি ইডির হাতে এসেছে। সেখানে বাংলা এবং ইংরেজিতে বেশ কিছু কথা লেখা রয়েছে। ওই চিঠি কন্যাকে দিচ্ছিলেন ধৃত মন্ত্রী। এর পর থেকেই চিঠিতে কী লেখা ছিল, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়।
ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, চিঠিতে অল্প কথায় কিছু তথ্য এবং নির্দেশ লিখেছিলেন জ্যোতিপ্রিয়। কন্যাকে জানিয়েছিলেন কোথায়, কার কাছে, কত টাকা রয়েছে। রেশন ‘দুর্নীতি’র সঙ্গে ওই টাকার যোগ রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। সেই সূত্রেই চিঠিতে ‘ডাকু’র নাম এসে থাকতে পারে। তবে শঙ্কর ছাড়াও আরও কয়েক জনের নাম চিঠিতে ছিল বলে জানা গিয়েছে ইডি সূত্রে।
ইডি আদালতেই জানিয়েছিল, একাধিক ফরেক্স সংস্থা বা বিদেশি মুদ্রা কেনাবেচার সংস্থার মাধ্যমে ২০ হাজার কোটি টাকা বিদেশে লেনদেন করেছেন শঙ্কর। ওই টাকা প্রথমে বিদেশি মুদ্রায় (মূলত ডলার) পরিবর্তন করে তার পর পাঠানো হয়েছে দুবাইতে। তার মধ্যে অন্তত ৯ থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা জ্যোতিপ্রিয়ের বলে দাবি করে ইডি। মনে করা হচ্ছে, সেই টাকার কথাই কন্যাকে চিঠিতে বলতে চেয়েছিলেন ধৃত মন্ত্রী।
রেশন ‘দুর্নীতি’কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়ার পর অসুস্থ হয়ে এখন এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন জ্যোতিপ্রিয়। সেখানে নিযুক্ত নিরাপত্তারক্ষীদের মাধ্যমে চিঠি চালাচালির কথা ইডি জানতে পারে এবং ওই চিঠি হাতে পায়। ইডি সূত্রে খবর, চিঠির হস্তাক্ষর পরীক্ষা করতে পারে কেন্দ্রীয় সংস্থা। একইসঙ্গে হাসপাতালে কী ভাবে কাগজ, কলম পেলেন ধৃত মন্ত্রী, তা-ও তদন্তকারীদের ভাবাচ্ছে। যেখানে তাঁকে রাখা হয়েছে, সেখানকার নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হচ্ছে বলে খবর।
ইডি জানিয়েছে, গত ১৯ ডিসেম্বর জ্যোতিপ্রিয়কে জেরা করা হয়েছিল। সেই সময় তিনি কন্যাকে লেখা চিঠির কথা স্বীকার করেছিলেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে তিনি তা অস্বীকার করবেন কি না, তার নিশ্চয়তা নেই। সেই কারণেই হস্তাক্ষর পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।