শাহজাহান শেখকে নিজাম প্যালেসে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। — নিজস্ব চিত্র।
দু’দিনের টালবাহানার পর অবশেষে সন্দেশখালিকাণ্ডের অন্যতম মূল অভিযুক্ত শাহজাহান শেখকে হাতে পেয়েছে সিবিআই। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভবানী ভবনে সিআইডির হেফাজত থেকে শাহজাহানকে নিয়ে নিজাম প্যালেসে গিয়েছে তারা। শাহজাহানকে কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতে তুলে দিয়ে গোটা পর্বের ব্যাখ্যা করল রাজ্য গোয়েন্দা বিভাগ। বুধবার রাতে ভবানী ভবন থেকে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে।
বিবৃতিতে সিআইডি জানিয়েছে, কলকাতা হাই কোর্ট মঙ্গলবার দুপুর ৩টে নাগাদ সন্দেশখালিকাণ্ডে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়। তা আদালতের ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয় সাড়ে ৩টেয়। ওই নির্দেশে বলা হয়েছিল, শাহজাহানকে বিকেল সাড়ে ৪টের মধ্যে সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিতে হবে। এর পর মঙ্গলবার সাড়ে ৩টেতেই রাজ্যের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। শীর্ষ আদালত জানায়, জরুরি বিষয় উপস্থাপন করার জন্য আদালতের যে নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে, তা মেনে মামলা করতে হবে। এই মাঝের সময়ে সিবিআই আধিকারিকেরা ভবানী ভবনের সামনে শাহজাহানকে নিয়ে যাওয়ার জন্য উপস্থিত হন। তাঁদের জানানো হয়, হাই কোর্টের নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করছে রাজ্য সরকার। তাই ওই নির্দেশ তৎক্ষণাৎ কার্যকর করা যাচ্ছে না।
সিআইডি জানিয়েছে, আইনজীবী সিঙ্ঘভি ওই দিন রাত দেড়টায় ভার্চুয়াল মাধ্যমে নির্ধারিত নিয়ম মেনে মামলা করেন সুপ্রিম কোর্টে। এর পর বুধবার ইডি কলকাতা হাই কোর্টে রাজ্যের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করে। বেলা ১টার সময়ে ওই মামলার শুনানির সময় নির্দিষ্ট করা হয়। সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যের মামলাটির নিষ্পত্তি হয়নি জেনেও কলকাতা হাই কোর্ট ইডির মামলার প্রেক্ষিতে শাহজাহানকে বিকেল ৪টে ১৫-র মধ্যে সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। আদালতের সেই নির্দেশকে সম্মান জানিয়েছে সিআইডি। শাহজাহানকে তুলে দেওয়া হয়েছে সিবিআইয়ের হাতে। আগামী দিনে এই সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী তারা এগোবে।
গত ২৯ ফেব্রুয়ারি শাহজাহানকে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশ। তার পর থেকে তৃণমূলের সাসপেন্ড হওয়া ওই নেতার ঠিকানা ছিল ভবানী ভবন। রেশন ‘দুর্নীতি’কাণ্ডে শাহজাহানের নাম জড়িয়েছে। তাঁর বাড়িতে ওই সূত্রেই তল্লাশি চালাতে গিয়েছিল ইডি। সন্দেশখালি থেকে শাহজাহানের অনুগামীদের হাতে মার খেয়ে ফিরতে হয় ইডি আধিকারিকদের। এর পর শাহজাহান-সহ একাধিক স্থানীয় তৃণমূল নেতার গ্রেফতারি চেয়ে সন্দেশখালিতে বিক্ষোভ শুরু হয়। রাস্তায় নামেন মহিলারা। অভিযোগ, গ্রামে জমি জবরদখল থেকে শুরু করে অত্যাচার চালান শাহজাহানেরা। ৫৫ দিন ‘নিখোঁজ’ থাকার পর পুলিশ শাহজাহানকে ধরে মিনাখাঁ থেকে। আদালতের নির্দেশে সেই সন্দেশখালিকাণ্ডের তদন্ত এ বার করবে সিবিআই।