অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘সেবাশ্রয়’ নিয়ে মুখ খুললেন রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘সেবাশ্রয়’ নিয়ে বিতর্ক বা আপত্তির কোনও জায়গা নেই। স্পষ্ট জানালেন রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা। সোমবার অভিষেকের উদ্যোগ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, তিনিও বিধায়ক হিসাবে বিভিন্ন জায়গায় স্বাস্থ্য বা রক্তদান শিবির করেন।
অভিষেক তাঁর সংসদীয় এলাকা ডায়মন্ড হারবারে স্বাস্থ্য শিবিরের আয়োজন করেছেন। যার পোশাকি নাম ‘সেবাশ্রয়’। নতুন বছরের শুরু থেকেই ডায়মন্ড হারবারের বিভিন্ন জায়গায় চলছে ‘সেবাশ্রয়’ ক্যাম্প। অনেকেই এ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। সরকারি পরিষেবায় কি অভিষেকের আস্থা নেই? যদিও এ নিয়ে প্রকাশ্যেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক নিজের মত স্পষ্ট করেছেন। তবে তার পরও বিতর্ক থামেনি। দলের অন্দরেই যে অভিষেকের স্বাস্থ্যক্যাম্প নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে, তা অনেক তৃণমূল নেতাই ঘরোয়া আলোচনায় মানছেন। কেউ কেউ আবার প্রকাশ্যেই ‘বিরোধিতা’ করছেন। তবে রাজ্যের মন্ত্রী শশী নিজে অভিষেকের উদ্যোগে কোনও বিতর্ক আছে বলে মনে করছেন না।
সোমবার ‘সেবাশ্রয়’ প্রসঙ্গে শশী বলেন, ‘‘বিতর্ক কী তৈরি হয়েছে আমার জানা নেই।’’ তার পরই তাঁর সংযোজন, ‘‘আমরাও বিধায়ক। আমরাও বিভিন্ন জায়গায় স্বাস্থ্য পরিষেবা দিই, রক্তদান শিবির এমন নানা কিছু করতে থাকি। অভিষেকও সেবাশ্রয় করেছিলেন। সেখানে বিতর্কের জায়গা নেই।’’
দিন কয়েক আগেই অভিষেকের ‘সেবাশ্রয়’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, অভিষেক ‘ব্যক্তিগত’ উদ্যোগে স্বাস্থ্যক্যাম্প করছেন। তার সঙ্গে সরকারের কোনও সম্পর্ক নেই। অভিষেকের প্রচেষ্টাকে ‘ভাল উদ্যোগ’ বলে ধন্যবাদ জানিয়েও তার সাফল্য নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন বিমান।
সম্প্রতি মেদিনীপুর মেডিক্যালে প্রসূতিমৃত্যু, নিম্ন মানের স্যালাইন দেওয়ার অভিযোগকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়েছে রাজ্যে। তার জেরে স্বাভাবিক ভাবেই রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সেই আবহে অভিষেকের উদ্যোগ নিয়ে অনেকের প্রশ্ন ছিল, রাজ্য সরকারের তরফেই তো বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হয়। একাধিক স্বাস্থ্য প্রকল্পও রয়েছে রাজ্যের। তবে কি নিজের কেন্দ্রে আলাদা করে শিবির বসিয়ে ‘সমান্তরাল’ কোনও স্বাস্থ্যব্যবস্থা চালু করতে চান তৃণমূল ‘সেনাপতি’? ইতিমধ্যে তার জবাবও দিয়েছেন অভিষেক। তিনি স্পষ্ট জানান, রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর সঙ্গে তাঁর সেবাশ্রয়ের তুলনা করা ঠিক নয়। বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার তার মতো যথেষ্ট করেছে। আমি আমার মতো করে চেষ্টা করেছি।’’ কিন্তু তার পরও থামেনি বিতর্ক। তবে অভিষেকের ‘সেবাশ্রয়’ নিয়ে বিমানেরা সংশয় প্রকাশ করলেও শশীরা আপত্তি দেখছেন না।