রাজভবনের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ পশ্চিমবঙ্গ সরকার। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
রাজভবনে আটকে থাকা কয়েকটি বিলে অবশেষে সম্মতি দিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। ঘটনাচক্রে, সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণের এক মাস পূরণের আগেই। ওই পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছিল, রাজ্য বিধানসভায় পাশ হওয়া বিল রাজ্যপালদের ঝুলিয়ে রাখা ‘বৈধ’ নয়।
রাজভবন সূত্রের খবর, রাজ্যপালের অনুমোদন পাওয়া বিলগুলির মধ্যে রয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ শহর ও দেশ (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) (সংশোধনী) বিল ২০২৩, পশ্চিমবঙ্গ ভূমি সংস্কার ও প্রজাস্বত্ব ট্রাইব্যুনাল (সংশোধন) বিল ২০২২, পশ্চিমবঙ্গ কর ট্রাইব্যুনাল (সংশোধনী) বিল ২০২২। পাশাপাশি রাজ্যপাল বোস পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় ‘পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু কমিশন (সংশোধন) বিল ২০২৫’ পেশ করার সুপারিশ করেছেন রাজ্য সরকারের কাছে।
প্রসঙ্গত, তামিলনাড়ুর বিধানসভায় পাশ হওয়া ১০টি বিলে সে রাজ্যের রাজ্যপাল সম্মতি না-দেওয়ায় সেগুলি আইনে পরিণত করতে পারছিল না সে রাজ্যের সরকার। রাজ্যপালের ওই ভূমিকার বিরোধিতা করে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল তামিলনাড়ুর ডিএমকে সরকার। গত ৮ এপ্রিল বিচারপতি জেবি পরদিওয়ালা এবং বিচারপতি আর মহাদেবনের বেঞ্চে প্রশ্নের মুখে পড়েন তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল আরএন রবি। শীর্ষ আদালত জানায়, অনন্তকাল ধরে বিধানসভায় পাশ হওয়া বিল ঝুলিয়ে রাখতে পারেন না রাজ্যপাল। সময়সীমা বেঁধে দিয়ে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, তিন মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে হবে রাজ্যপালকে। একটি ভাবে রাষ্ট্রপতিও অনির্দিষ্ট কাল ধরে বিল আটকে রাখতে পারে না বলে জানিয়েছিল শীর্ষ আদালত।
এর পরেই রাজ্য বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় রাজভবনে আটকে থাকা বিলগুলি দ্রুত অনুমোদনের দাবি তুলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘‘এটা নিয়ে আমাদের রাজ্যপালকে আমরা বলেছি বার বার। ২০১৬ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে বিধানসভায় পাশ হওয়া বিলের মধ্যে এমন ২৩টি বিল রয়েছে, যেগুলিতে সম্মতি দেননি রাজ্যপাল। এগুলির মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বিলও রয়েছে। যেমন অপরাজিতা বিল, গণপিটুনি বিল।’’ তিনি জানিয়েছেন, কেন এই বিলগুলিতে রাজ্যপাল সম্মতি দিচ্ছেন না, তা স্পষ্ট নয়। সেই সঙ্গে বিমান আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘‘আমার মনে হয়, মাননীয় রাজ্যপাল সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণকে মাথায় রেখে ঝুলিয়ে রাখা বিলগুলি পাঠিয়ে দেবেন।’’ শেষ পর্যন্ত সেই প্রক্রিয়া শুরু করল রাজভবন।