রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। — ফাইল চিত্র।
মঙ্গলবার বিদেশ সফরে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু সোমবার রাজভরন সূত্রে জানা গিয়েছে, আমেরিকা সফর বাতিল করেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সোমবার রাজভবনের তরফে এ কথা জানানো হয়েছে। ডেঙ্গি এবং রাজ্যের বেহাল আর্থিক পরিস্থিতির কারণেই তাঁর এই সিদ্ধান্ত বলে রাজভবন জানিয়েছে। বলা হয়েছে, রাজ্যপাল সরকারি কর্মসূচিতে বিদেশ সফরে গেলে তাঁর প্রভাব পড়ত রাজ্য সরকারের কোষাগারে। কিন্তু রাজ্যপাল তা চাননি বলেই সফর বাতিল করেছেন।
আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ১ অক্টোবর আমেরিকার রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে আয়োজিত বিশ্ব সংস্কৃতি উৎসবে যোগদানের জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রাক্তন মহাসচিব বান কি মুন রাজ্যপাল বোসকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন বলে রাজভবনের তরফে জানানো হয়। বিশ্ব সংস্কৃতি বিষয়ক আন্তর্জাতিক কমিটির প্রধান হিসাবে মুন ‘ভারতের সাংস্কৃতিক রাজধানী’ কলকাতার বাসিন্দা তথা পশ্চিমবঙ্গের প্রথম নাগরিককে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল রাজভবনে।
প্রসঙ্গত, রাজভবনের তরফে বোসের বিদেশ সফর নিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে রবিবার পর্যন্ত কিছু ঘোষণা না করা হলেও সরকারের একটি সূত্রে জানা গিয়েছিল, যে সরকারি কর্মসূচির পাশাপাশি আমেরিকায় একটি সাহিত্য সম্মেলনেও অংশ নিতে পারেন রাজ্যপাল। আমেরিকায় বসবাসকারী ভারতীয়দের সঙ্গেও তাঁর সাক্ষাৎ হওয়ার কথা ছিল। আমেরিকার একাধিক শহরে তাঁর কর্মসূচি ছিল। সে সব মিটিয়ে ৭ অক্টোবর কলকাতায় ফেরার কথা ছিল বোসের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ‘আর্থিক কারণ’ দেখিয়ে সফর বাতিল করে দিলেন তিনি।
রাজ্যপালের প্রস্তাবিত সফরে আমেরিকার কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের কথাও ছিল। কিন্তু সোমবার রাজভবন জানিয়েছে, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ভার্চুয়াল মাধ্যমে সেই বৈঠক হবে। বিদেশ সফর বাতিলের কারণ হিসাবে রাজভবনের তরফে ‘বেহাল আর্থিক দশা’র যে কারণ দেখানো হয়েছে, তাতে রাজ্যপাল-নবান্ন সংঘাত আরও তীব্র হতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ। প্রসঙ্গত, রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তিকালীন উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে তিনি উচ্চশিক্ষা দফতরের সঙ্গে আলোচনা করেননি বলেই অভিযোগ নবান্নের। তা নিয়ে অনেক জলঘোলা হয়েছে।
রবিবার ছুটির দিনেও তিনি রাজ্যের সব উপাচার্যকে নিয়ে বৈঠকে বসছেন। সেখানে সকলকে উপস্থিত থাকতে আগেই নির্দেশ পাঠিয়েছেন তিনি। অন্য দিকে, সম্প্রতি ধূপগুড়ি উপবনির্বাচনে জয়ী তৃণমূলের নির্মলচন্দ্র রায় এখনও বিধায়ক হিসাবে শপথ নিতে পারেননি। তা নিয়ে রাজভবনের সঙ্গে সংঘাতের আবহ তৈরি হয়েছে। নির্মলচন্দ্রকে শপথবাক্য পাঠ করানোর জন্য রাজভবনের তরফে প্রস্তুতি নেওয়া হলেও তা শেষ পর্যন্ত হয়নি। পরিষদীয় দফতরের অভিযোগ ছিল, রাজ্যকে এড়িয়ে একক ভাবে বিধায়ককে শপথবাক্য পাঠ করানোর আয়োজন করেছিলেন রাজ্যপাল। কিন্তু পরিষদীয় দফতর সায় না দেওয়ায় সেই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান করা সম্ভব হয়নি রাজভবনের তরফে।