অসুস্থ হয়ে পড়লেন অবস্থানরত চাকরিহারা শিক্ষিকা। ছবি: সারমিন বেগম।
চাকরিহারা শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, ১৭,২০৬ জনের যে তালিকা বিকাশ ভবন দিয়েছে, তার মধ্যে ১৫,৪০৩ জন যোগ্য। কিন্তু তাতে তাঁরা ‘আংশিক সন্তুষ্ট।’ কারণ, ‘মিরর ইমেজ’ প্রকাশ হয়নি। কেন হচ্ছে না, তার ব্যাখ্যা চাওয়া হবে মন্ত্রীর কাছে। অন্য দিকে, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কাছ থেকে তাঁরা জানতে চাইবেন, কেন ১৭ হাজারের মধ্যে যাঁরা অযোগ্য, তাঁদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হচ্ছে না।
আলোচনায় জট কাটল না। এসএসসি দফতরে তাঁদের ঘেরাও কর্মসূচি চলবে বলে জানিয়ে দিলেন চাকরিহারা শিক্ষকদের প্রতিনিধিরা। একই সঙ্গে তাঁরা জানান, শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করবেন। সেই সঙ্গে অযোগ্যদের বহিষ্কারের দাবি নিয়ে হাই কোর্টে যাবেন তাঁরা। চাকরিহারা শিক্ষক চিন্ময় মণ্ডল বলেন, ‘‘স্কুলে এখন আমরা যাচ্ছি না। এই অবস্থান এবং আন্দোলন চলবে।’’
এসএসসি-র চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠক করতে আগে চাকরিহারা ১০ শিক্ষক আচার্য সদনে ঢোকেন। এ বার ওই বৈঠকে গেলেন গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি-র চার জন করে মোট আট জন প্রতিনিধি। বিক্ষোভকারীদের তরফে জানানো হয়েছে, আলোচনায় যা-ই বলা হোক না কেন, যোগ্যদের তালিকা না পাওয়া পর্যন্ত তাঁদের আন্দোলন চলবে।
অসুস্থ চাকরিহারা শিক্ষিকার নাম সুচিত্রা মল্লিক। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। অন্য দিকে, গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি-র একজন করে চাকরিহারা অসুস্থ বলে খবর।
চাকরিহারা এক শিক্ষিকা অসুস্থ হয়ে পড়লেন এসএসসি ভবনের সামনে। ওই বিক্ষোভকারীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য পুলিশকে আবেদন করলেন সহযোদ্ধারা। পরে অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা হয়।
স্কুল শিক্ষা কমিশনারের তরফ থেকে চিঠি গেল ডিস্ট্রিক্ট ইনস্পেক্টরদের (ডিআই) কাছে চিঠি। সেই চিঠিতে বলা হয়েছে ‘যোগ্য’ শিক্ষকদের তালিকা প্রকাশ করবেন ডিআইরা।চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ১৭ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়া অনুযায়ী যাঁরা যোগ্য, তাঁরা আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত শিক্ষকতা করতে পারবেন। জানা যাচ্ছে, যাঁরা অযোগ্য বলে চিহ্নিত নন, তাঁদের বেতন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে স্কুল শিক্ষা কমিশনার।
সোমবার ঘণ্টা পাঁচেক পরে এসএসসি দফতর থেকে বেরিয়ে চাকরিহারা শিক্ষকদের প্রতিনিধিরা জানান, ইতিবাচক কোনও সাড়া পাননি কমিশনের চেয়ারম্যানের কাছ থেকে। তার পর থেকে ঘেরাও হয়ে রয়েছেন চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার। মঙ্গলবার বিকেলে বিক্ষোভরত চাকরিহারাদের সঙ্গে আবার বৈঠকে বসার কথা এসএসসি চেয়ারম্যানের। সোমবার বৈঠকে গিয়েছিলেন জনা চোদ্দো প্রতিনিধি। মঙ্গলবার ছ’জন প্রতিনিধি বৈঠকে যাচ্ছেন বলে চাকরিহারা শিক্ষকদের সূত্রে খবর।
যে চাকরিহারা শিক্ষকদের এসএসসি পরীক্ষার সময় ওএমআর শিটে ‘সমস্যা’ ছিল, তাঁদের একটি তালিকা তৈরি হবে। তা ছাড়া ‘সম্পূর্ণ অযোগ্যদের’ নামের তালিকা তৈরি হবে। এই তিন ভাগে ভাগ করে তালিকা যাবে শিক্ষা দফতরের কাছে। এসএসসি সূত্রে এমনটাই খবর।
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে বৈঠকের পর এসএসসি জানাল, তাদের তরফে তৈরি করা তালিকা বুধবারের মধ্যে পাঠানো হবে স্কুল শিক্ষা দফতরে। তবে সেই তালিকা তিনটি ফেজ়-এ (পর্যায়ে) পাঠানো হবে। এসএসসি-র এক কর্তার কথায়, ‘‘একেবারে নিষ্কলঙ্ক বা বৈধ শিক্ষক যাঁরা, যাঁদের পরীক্ষা-সহ কোনও প্রক্রিয়াতেই কোনও সমস্যা নেই, তাঁদের নামের তালিকা তৈরি হবে।’’
তালিকা দেখার জন্য স্কুল সার্ভিস কমিশনের দফতরে ডেকে পাঠানো হয়েছে আন্দোলনরত শিক্ষকদের কয়েক জনকে। সেই বিষয়ে এক চাকরিহারা শিক্ষক বলেন, “ওই তালিকায় কারচুপি হলে তালিকা প্রত্যাহার করিয়ে আসব।” আর এক চাকরিহারা শিক্ষক প্রতিনিধি রাকেশ আলম বলেন, “তালিকা নিয়ে মনে হয় সন্দেহের অবকাশ তৈরি হয়েছে।”