মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। —ফাইল চিত্র।
জেলাভিত্তিক খনিজ তহবিল (মিনারেল ফান্ড) অডিটের সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। শনিবার বেশিরভাগ দফতর এবং সব জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। সূত্রের দাবি, ওই বৈঠকে এই সিদ্ধান্তের পাশাপাশি আয়বৃদ্ধির চেষ্টা চালানোর বার্তা দেওয়া হয়েছে। আগামী গরম এবং বর্ষাকে মাথায় রেখে প্রস্তুতি শুরুর নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। সঙ্গে, চালু সব প্রকল্পের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।
প্রশাসনিক সূত্র জানাচ্ছে, বালি, পাথর ইত্যাদি খনিজ-খাতে প্রতি বছর বিপুল রাজস্ব জমা হয় রাজ্যের মাইন-মিনারেল কর্পোরেশনের তহবিলে। খাদান থাকা জেলাগুলি তার কিছু অংশ সংশ্লিষ্ট জেলা খনিজ তহবিলে পায়। নবান্নের সিদ্ধান্ত—প্রতি মাসে সেই তহবিলের রিপোর্ট দিতে হবে। পাশাপাশি, হবে ওই তহবিলের অডিটও। অভিজ্ঞ আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, রাজ্যের কোষাগারের বর্তমান অবস্থার নিরিখে এই সিদ্ধান্ত বেশ অর্থবহ। কারণ, অতীতে অডিটের ব্যাপারে তেমন ভাবনাচিন্তা লক্ষ্য করা যায়নি। এই সূত্রেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বালির অবৈধ খাদান ঠেকাতে পদক্ষেপ করতে হবে। পাঁচ হেক্টর এবং তার কম বালি খাদানগুলিকে বাধ্যতামূলক ভাবে নিলামের আওতায় আনা হচ্ছে। নজরদারিতে জেলাস্তরের কিছু আধিকারিককে পৃথক ভাবে ক্ষমতা দেওয়ার ভাবনাচিন্তাও রয়েছে। রাজস্ব বৃদ্ধির দিক থেকে আবগারি, পরিবহণ ইত্যাদি ক্ষেত্রগুলির উপরেও জোর দেওয়ার বার্তা পেয়েছেন জেলা-কর্তারা। জেলার বিভিন্ন স্তরে সরকারের যে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলি এখন সচল নেই, সেই সমীক্ষা করতে বলা হয়েছে দ্রুত। অনেকের ধারণা, সেই সব অ্যাকাউন্টে সম্মিলিত ভাবে ভাল অঙ্কের অর্থ জমে থাকা স্বাভাবিক। তা কাজে লাগাতে চায় সরকার।
আগামী বর্ষার আগেই বাঁধ এলাকাগুলির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার নির্দেশের পাশাপাশি, বর্ষা এবং গরমের (তাপপ্রবাহ) পরিস্থিতি সামাল দিতে ৫ জুন থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সর্বক্ষণের কন্ট্রোলরুম চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রাক বর্ষায় ১২৩৮ কিলোমিটার খাল সংস্কার হয়েছে এ পর্যন্ত। আরও ৭১৯টি প্রকল্পের জন্য ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে সেচ দফতরে। আগামী সপ্তাহ থেকে সেই কাজ শুরুর নির্দেশ রয়েছে। সূত্রের দাবি, শিল্প-সহায়তার কথা মাথায় রেখে জমির মিউটেশন, চরিত্র বদলের কাজে বাড়তি জোর দেওয়া এবং অবৈধ ভাবে জলাভূমি ভরাট ঠেকাতে কঠোর পদক্ষেপ করবে প্রশাসন। সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য উপযুক্ত জমি চিহ্নিত করতে বলেছে নবান্ন।
এ ছাড়াও, কৃষিপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ক্ষমতায়ন, স্কুল পড়ুয়াদের পোশাক, বাজি-ক্লাস্টার তৈরি, শিল্পতালুকের জমি চিহ্নিত, প্রকল্পের সরাসরি নজরদারি, মুখ্যমন্ত্রীকে অভিযোগ জানানোর মাধ্যমকে আরও সক্রিয় করতে বলা হয়েছে। গ্রামীণ সড়ক এবং আবাসের কাজে গতি বাড়ানোর পাশাপাশি, মুর্শিদাবাদ-কাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হবে ওই প্রকল্প থেকেই।