বিনয় মিশ্রকে গ্রেফতার না করার প্রতিশ্রুতি দিল সিবিআই। নিজস্ব চিত্র।
শর্তসাপেক্ষে দেশে ফিরতে তৈরি গরু এবং কয়লা পাচার কাণ্ডের অভিযুক্ত বিনয় মিশ্র। যদি সিবিআই এবং ইডি আদালতের কাছে প্রতিশ্রুতি দেয় যে তাঁকে গ্রেফতার করা হবে না এবং ভিসা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে, তা হলে দেশে ফিরতে প্রস্তুত তিনি। মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্টে বিচরপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের বেঞ্চে শুনানি-পর্বে এ কথা জানিয়েছেন বিনয়ের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি।
বিনয়ের আইনজীবীর বক্তব্যের জবাবে সিবিআই-এর আইনজীবী ওয়াই জে দস্তুর জানান, দেশে ফিরে তদন্তে সহযোগিতা করা হলে বিনয়কে গ্রেফতার করা হবে না। তিনি বলেন, ‘‘ইডি-র অধিকর্তার সঙ্গে কথা আমার হয়েছে। তারাও লিখিতভাবে ‘কড়া পদক্ষেপ হবে না’ এই মর্মে আশ্বাস দিতে তৈরি।’’ আগামিকাল ফের এই মামলার শুনানি হবে হাই কোর্টে।
সোমবার বিচারপতি ঘোষের বেঞ্চে মামলার শুনানির সময় সিবিআই-এর আইনজীবী দস্তুর বিনয় মিশ্রকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমরা অভিযুক্তের ভার্চুয়াল শুনানিতে রাজি নই। কারণ ভিডিয়ো কনফারেন্সিং-এ শুনানির সময় অভিযুক্তের কাছ থেকে সঠিক উত্তর না-ও পাওয়া যেতে পারে।’’ পাশাপাশি, তিনি বলেন, , ‘‘১২ জুলাই-এর মধ্যে দেশে ফিরে তদন্তে সহযোগিতা করুন বিনয়। সেক্ষেত্রে কোনও রেড কর্নার নোটিস থাকবে না তাঁর বিরুদ্ধে। গ্রেফতারও করা হবে না।’’ কার্যত মঙ্গলবার সেই প্রস্তাবেই সায় দিয়েছেন সিঙ্ঘভি।
বিনয় এখন প্রশাম্ত মহাসাগরের এক দ্বীপরাষ্ট্র ভানুয়াতুতে রয়েছেন বলে সিবিআই সূত্রে খবর। বিনয়ের বিরুদ্ধে রেড কর্নার নোটিস জারির আবেদন জানিয়েছিল ইন্টারপোলের কাছে। কিন্তু তা এখনও কার্যকর হয়নি। এই পরিস্থিতিতে চলতি মাসে কলকাতা হাই কোর্টে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে মামলার শুনানির অনুমতি চেয়েছিলেন গরু ও কয়লা পাচার-কাণ্ডের অভিযুক্ত বিনয়। সেই সঙ্গে অন্তর্বর্তী জামিনের মেয়াদ আরও বাড়ানোর আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি।
মঙ্গলবার শুনানি পর্বে বিচারপতি ঘোষ সিবিআই-এর আইনজীবীকে প্রশ্ন করেন, ‘‘সেন্ট্রাল ভিজিলেন্স কমিশনের অনুমতি ছাড়া কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীকে গ্রেফতার করা যায় কি?’’ বিনয় মামলায় সিবিআই যে তদন্ত করছে তার সূত্রপাত গরু কান্ডে জে ম্যাথ্যু নামে এক বিএসএফের আধিকারিককে গ্রেফতার থেকে। তাঁকে গ্রেফতারের পর গরু পাচার-কাণ্ডে বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করে সিবিআই। যুব তৃণমূলের নেতা বিনয়ের নাম উঠে আসে তারপর। এ ক্ষেত্রে দস্তুরের যুক্তি, সিবিআই তার নিজস্ব সূত্র মারফত খবর পেয়ে তার সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করেছিল। তারই ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় বিএসএফ আধিকারিককে। সিবিআই-এর আইনজীবীর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে বিচারপতি ঘোষ বলেন, ‘‘কিছু কিছু মামলার ক্ষেত্রে আপনারা (সিবিআই) সেন্ট্রাল ভিজিলেন্স কমিশনের অনুমতি নেবেন, আর কিছু কিছু মামলার ক্ষেত্রে নেবেন না ,তা কি হয়?’’