Mother teresa

Missionaries of Charity: মাদার টেরিজার সংস্থার সব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করল কেন্দ্র, মুখে কুলুপ মাদার হাউজের

কোন তদন্তের প্রয়োজনে এমন সিদ্ধান্ত, তা জানা না গেলেও সম্প্রতি গুজরাতে একটি বিতর্কে জড়ায় টেরিজার সংস্থা। ইতিমধ্যেই সমালোচনা করেছেন মমতা।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২১ ১৫:২২
বিপাকে পড়েও চুপ মাদার হাউজ।

বিপাকে পড়েও চুপ মাদার হাউজ। প্রতীকী চিত্র

মাদার টেরিজা প্রতিষ্ঠিত মিশনারিজ অব চ্যারিটির সব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিল কেন্দ্র। সূত্রের খবর, তদন্তের কথা বলেই সবক’টি অ্যাকাউন্টের আর্থিক লেনদেন বন্ধ করার কথা জানানো হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। যদিও কলকাতায় মাদার হাউজের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে এই খবর নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাওয়া হয়নি। আনন্দবাজার অনলাইনের পক্ষে ফোন করা হলে অপর প্রান্ত থেকে বারংবার বলা হয়, ‘‘আমরা এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’’ খবরের সত্যাসত্য জানতে চাইলেও মন্তব্য না করার কথা বলা হয়। তবে কেন্দ্রের পদক্ষেপ নিয়ে ইতিমধ্যেই টুইট করে সমালোচনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মিশনারিজ অব চ্যারিটির খবর সামনে আসার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি টুইটারে লেখেন, ‘বড়দিনের উৎসবের মধ্যে মাদার টেরিজার মিশনারিজ অব চ্যারিটির সব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট কেন্দ্রীয় সরকার বন্ধ করে দিয়েছে শুনে আমি বিস্মিত।’ এখনও পর্যন্ত এই খবর সম্পর্কে কলকাতার মাদার হাউজ কোনও মন্তব্য না করলেও মমতা টুইটারে লিখেছেন, ‘মিশনারিজ অব চ্যারিটির ২২ হাজার রোগী এবং কর্মীরা খাবার এবং ওষুধ পাচ্ছেন না। আইন সবার উপরে হলেও মানবিক কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যাওয়া ঠিক নয়।’

Advertisement

কোন তদন্তের প্রয়োজনে এমন সিদ্ধান্ত তা জানা না গেলেও সম্প্রতি গুজরাতে একটি বিতর্কে জড়ায় টেরিজার সংস্থা। ধর্মান্তরণের অভিযোগে মোদীর রাজ্যে মিশনারিজ অব চ্যারিটির বিরুদ্ধে এফআইআর-ও দায়ের হয়। গুজরাতের বডোদরা শহরে ওই সংগঠনের যে হোম রয়েছে, তার বিরুদ্ধে ধর্মান্তরণ ছাড়াও হিন্দু ধর্মের ভাবাবেগে আঘাত করা হয় এমন কাজও ওই হোমে হয়ে থাকে বলে অভিযোগ ওঠে। তবে যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করা হয় সংগঠনের তরফে। তাদের দাবি, ওই হোমে কোনও ভাবেই জোর করে কারও ধর্মান্তরণ করা হয়নি। এই অভিযোগ ওঠার পরেও কলকাতায় মাদার হাউসে যোগাযোগ করা হলে, আধিকারিকরা জানান, এ নিয়ে তাঁরা কিছু বলতে চান না।

পঞ্জাবের এক তরুণীকে জোর করে এক খ্রিস্টান যুবকের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে বডোদরার ওই হোমের বিরুদ্ধে। স্থানীয় পুলিশ কমিশনার সমশের সিংহ জানিয়েছেন, ওই অভিযোগের ভিত্তিতে আলাদা করে তদন্ত চলছে। আর জেলা সামাজিক নিরাপত্তা বিষয়ক আধিকারিক ময়ঙ্ক ত্রিবেদীর অভিযোগ, ওই হোমে হিন্দু ধর্মের ভাবাবেগে আঘাত করা হয়েছে এবং হোমের অল্পবয়সি মেয়েদের খ্রিস্টান ধর্মে দীক্ষিত হওয়ার জন্য প্রলুব্ধ করা হয়ে থাকে। গুজরাতের ধর্মীয় স্বাধীনতা আইন, ২০০৩-এর আওতায় মকরপুরা থানায় এই মর্মে অভিযোগ দায়ের করেছেন ময়ঙ্ক। তাঁর বক্তব্য, গত ৯ ডিসেম্বর জেলার শিশু কল্যাণ কমিটির চেয়ারম্যানের সঙ্গে ওই হোমে গিয়েছিলেন তিনি। এফআইআরে তিনি বলেছেন, সেখানে তিনি দেখেছেন, হোমের মেয়েদের জোর করে খ্রিস্টানদের ধর্মীয় গ্রন্থ পড়ানো হয়, তাদের গলায় ক্রস পরতে বলা হয় এবং তাদের খ্রিস্টানদের প্রার্থনায় অংশ নিতেও বলা হয়। ময়ঙ্কের আরও অভিযোগ, হিন্দু মেয়েদের আমিষ খাবারও খেতে দেওয়া হয় ওই হোমে। তাঁর বক্তব্য, এ ভাবেই প্রকারান্তরে মিশনারিজ অব চ্যারিটি কর্তৃপক্ষ হোমের মেয়েদের জোর করে ধর্মান্তরণের পথে নিয়ে যাচ্ছেন। ময়ঙ্ক জানিয়েছেন, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ওই সংগঠন নিয়মিত হিন্দু ধর্মের ভাবাবেগে আঘাত করেছে। পুলিশ ময়ঙ্কের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে।

সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই কেন্দ্রের এই পদক্ষেপ কি না, তা অবশ্য জানা যায়নি। প্রসঙ্গত, ১৯৫০ সালে কলকাতায় মাদার টেরিজা মিশনারিজ অব চ্যারিটি স্থাপন করেন। কলকাতার পাশাপাশি ভারতে এবং দেশের বাইরেও বহু জায়গায় সক্রিয় চ্যারিটি। ভারতে ২৪৩টি হোম রয়েছে সংস্থার। কলকাতায় প্রধান কার্যলয় সরকারিভাবে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যাওয়া নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে না চাওয়া হলেও সংস্থার এক সদস্য বলেন, ‘‘গোটা দেশে এবং বিদেশে অনেক সেবামূলক কাজের সঙ্গে আমরা যুক্ত। হাজার হাজার অসুস্থ মানুষের সেবা চলে। কিন্তু এর ফলে সেই রোগীদের খাবর থেকে ওষুধ সরবারহ সমস্যার মুখে পড়বে।’’

আরও পড়ুন
Advertisement