Udayan Guha

অবৈধ জমি-ব্যবসা নিয়ে উদয়নের পোস্টে বিতর্ক

মন্ত্রীর নাম ব্যবহার করার তালিকায় কারা রয়েছে, কেনই বা তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয় না, তা নিয়ে গুঞ্জন ছড়িয়েছে।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ০১ মে ২০২৪ ০৮:০১
udayan guha

উদয়ন গুহ। — ফাইল চিত্র।

জমির অবৈধ কারবারের অভিযোগ আগেও উঠেছে কোচবিহারের দিনহাটায়। অভিযোগ, শাসক-দলের ছত্রছায়ায় থেকেই জমির অবৈধ কারবার চলছে কোচবিহারের ওই সীমান্ত- শহরে। তাতে নাম জড়িয়েছে মন্ত্রী উদয়ন গুহের একাধিক অনুগামীরও। সে অভিযোগেরই কার্যত শিলমোহর দিলেন উদয়ন। মঙ্গলবার সমাজমাধ্যমে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী লিখেছেন— ‘‘জমি সংক্রান্ত কোনও সমস্যায় আমার কোনও মাথাব্যথা নেই। যারা আমার নাম ব্যবহার করে, তারা নিজের স্বার্থে করে।’’

Advertisement

মন্ত্রীর নাম ব্যবহার করার তালিকায় কারা রয়েছে, কেনই বা তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয় না, তা নিয়ে গুঞ্জন ছড়িয়েছে। মন্ত্রী অবশ্য পরে বলেন, ‘‘সবাই যে এতে জড়িত এমন নয়। কিন্তু আমার কাছে খবর রয়েছে, আমার নাম উল্লেখ করে বা ভাঙিয়ে জমির ব্যবসা করার চেষ্টা হচ্ছে। তাই সতর্ক করেছি। আর সবাইকে জানিয়েও দেওয়া যে, এমন কথা কেউ বললে বিশ্বাস করবেন না। যিনি বিশ্বাস করছেন, দায়িত্ব তাঁর নিজের।’’ দলের তরফে কেন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না, সে প্রশ্নে উদয়নের দাবি, ‘‘নির্দিষ্ট করে কেউ আমাকে বা দলের কাছে অভিযোগ করলে, ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

উদয়নের ওই ‘পোস্ট’ নিয়ে আক্রমণ করেছে বিজেপি। বিজেপির কোচবিহার জেলার সাধারণ সম্পাদক বিরাজ বসু বলেন, ‘‘কারা বেআইনি জমির কারবার করছে, তা শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীরা জানবেন না, এটা কেউ বিশ্বাস করবে না। আসলে ওই কারবারের কমিশন বিভিন্ন জায়গায় যায়। ধীরে ধীরে সব প্রকাশ্যে আসছে।’’ তৃণমূলের অবশ্য পাল্টা দাবি, দিনহাটায় বিজেপির যে নেতারা রয়েছেন, তাঁদের অনেকেই বেআইনি জমির কারবার ‘জড়িত’। সে কথা স্বীকার করার সাহস বিজেপির নেই।

তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছু দিন আগে দিনহাটার বোর্ডিংপাড়া এলাকায় একটি জায়গা বিক্রি হয়। এই জায়গা বিক্রি নিয়ে তৃণমূলের দিনহাটা শহর ব্লক কমিটির এক নেতার নাম সামনে এসেছে। যিনি উদয়নের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলেও পরিচিত। সে ‘প্রভাব’ খাটিয়ে তিনি ওই জমি কিনেছেন বলে অভিযোগ। এর আগে, দিনহাটার স্টেশন রোড এলাকায় মুচির মাঠ বলে একটি জায়গাও মন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে জোর করে কেনার চেষ্টা করার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের একাধিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী তা জানতে পেরে সরব হন। শুধু তা-ই নয়, মন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে ব্লক ভূমি সংস্কার দফতরের অফিসেও শাসক দলের কিছু নেতা-কর্মী বেআইনি ভাবে জমির কাগজপত্র তৈরির চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছিল। মন্ত্রী নিজেই ভূমি সংস্কার অফিসে গিয়ে তা নিয়ে সতর্ক করেন।

তার পরে কিছু দিন চুপচাপ থাকলেও বর্তমানে ফের জমি-মাফিয়া চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ। কোথাও ভয় দেখিয়ে বা জোর করে বাজার-মূল্যের থেকে কম দামে জমি কিনে নেওয়া হচ্ছে বলে বিরোধীরা অভিযোগ করেছেন। বামেদের অবশ্য দাবি, জমি কারবারের সঙ্গে যারা ‘জড়িত’, তাদের কেউ তৃণমূলের, কেউ বিজেপির। মাঝেমধ্যে দল বদলও করে তারা।

আরও পড়ুন
Advertisement