ট্যাব-কাণ্ডে বাড়ল ধৃতের সংখ্যা। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
সরকারের পোর্টাল ‘হ্যাক’ করেই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নম্বর পাল্টে ফেলে টাকা আত্মসাৎ! ট্যাব-কাণ্ডের অন্যতম মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে এমনই দাবি করল পুলিশ। মালদহের হরিশচন্দ্রপুর থানার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন মহম্মদ মোবারক হোসেন নামে এক ব্যক্তি। শুধু মালদহ নয়, উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁর এক স্কুলের ট্যাব কেলেঙ্কারিতে জড়িত এক মহিলাকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আনোয়ারি খাতুন নামে ওই মহিলা উত্তর দিনাজপুরের বাসিন্দা।
হরিশচন্দ্রপুরের কনুয়া ভবানীপুর হাই স্কুলের একাধিক পড়ুয়া ট্যাবের টাকা পায়নি বলে অভিযোগ করেছিল। ঘটনার তদন্তে নেমে এ বার মোরাবককে ধরল ব হরিশচন্দ্রপুর থানার পুলিশ। তাঁর কাছ থেকে ৯৫টি সিম কার্ড, ৬৫টি এটিএম, বেশ কয়েকটি পেনড্রাইভ, দুটি মোবাইল এবং একটি ল্যাপটপ মিলেছে। তদন্তকারীদের অনুমান, বিভিন্ন সিম এবং এটিএম কার্ড ব্যবহার করে জালিয়াতির ফাঁদ পেতেছিলেন অভিযুক্ত।
স্থানীয় সূত্রের খবর, মালদহের তিনটি স্কুল থেকে প্রতারণার অভিযোগ ওঠে। সেই তালিকায় ছিল কনুয়া ভবানীপুর হাইস্কুল। অভিযোগ, ৩৫ জন পড়ুয়ার ট্যাবের টাকা ঢুকে যায় অন্য অ্যাকাউন্টে। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে। অভিভাবকেরা ওই বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক রাজা চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু সে সময় প্রধানশিক্ষক ট্যাবের টাকা গরমিলের দায় পুরোটাই চাপিয়েছিলেন বিদ্যালয়ের করণিকের ঘাড়ে। তবে তদন্তে নেমে উঠে আসে অন্য তথ্য।
পুলিশ সূত্রে খবর, বাংলার শিক্ষা পোর্টাল হ্যাক করে সেখানে পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্ট নম্বর বদলানো হয়েছিল। পোর্টাল খতিয়ে দেখে মোবারকের নাম পায় পুলিশ। উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর থানার সহযোগিতায় অভিযুক্তকে হেফাজতে নেয় হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ। এই ঘটনায় আরও কেউ জড়িত কি না, তা জানার চেষ্টা চলছে।
অন্য দিকে, বনগাঁর কবি কেশবলাল বিদ্যাপীঠের ২২ জন এবং শক্তিগড় হাই স্কুলের ছ’জন ছাত্র-ছাত্রীর ট্যাবের টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে ঢোকে বলে অভিযোগ। এই দুই স্কুলের কর্তৃপক্ষ থানায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন। ঘটনার তদন্তে নেমে বনগাঁ থানার পুলিশ গত বৃহস্পতিবার উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর থেকে মহম্মদ বাহাউদ্দিন নামে এক জনকে গ্রেফতার করেছিল। তাঁকে জেরা করে উঠে আসে আনোয়ারির নাম। সম্পর্কে তিনি বাহাউদ্দিনের বৌদি। এ ব্যাপারে ধৃত আনোয়ারির বাবা জানিয়েছেন, শৌচালয়ের টাকা বলে তাঁর মেয়ের অ্যাকাউন্ট নম্বর দেওয়া হয়েছিল। সেখানে ১০ হাজার টাকা পাঠানো হয়। এই কাজের জন্য আনোয়ারি পেয়েছিলেন পাঁচ হাজার টাকা। এই ঘটনার নেপথ্যে অন্য আর কেউ জড়িত রয়েছে কি না, তা-ও খোঁজ করছে বনগাঁ থানার পুলিশ।