Waqf Ammendment Law

ওয়াকফ সংশোধনী আইন ঘিরে উত্তাল রাজ্য-রাজনীতি, বুধবার মুখ্যমন্ত্রীর ইমাম-মোয়াজ্জিমদের নিয়ে সম্মেলনে নজর রাজ্যের

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে রাজ্যের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকে বসতে চলেছেন। ওই বৈঠকের পরিকল্পনা আগেই নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে বৈঠকটি আরও ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ হয়ে উঠেছে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২৫ ১৯:৫৮
tomorrow CM Mamata Banerjee will sit in a meeting with moulanas

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

ওয়াকফ সংশোধনী আইন কার্যকর হওয়ার পর থেকে রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে অসন্তোষের ঢেউ। বিশেষত, সংখ্যালঘু সমাজের একাংশের মধ্যে তৈরি হয়েছে ক্ষোভ। আইনটির প্রতিবাদে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে দেখা গিয়েছে বিক্ষোভ। যার অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু মুর্শিদাবাদ ও মালদহ জেলার বেশকিছু এলাকা। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়েছে যে, মুর্শিদাবাদের বেশ কয়েকটি এলাকায় সংঘর্ষে প্রাণহানিও ঘটেছে। অশান্তি ছড়িয়েছে সুতি, জঙ্গিপুর, সামশেরগঞ্জ এবং ফরাক্কায়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টকে। আদালতের নির্দেশে ওই সব এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী।

Advertisement

এই ‘উত্তাল’ আবহেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে রাজ্যের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের নিয়ে সম্মেলন করতে চলেছেন। যদিও ওই বৈঠকের পরিকল্পনা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটার আগেই করা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে এই সম্মেলন আরও ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ হয়ে উঠেছে। শাসক শিবিরের একাংশ তো বটেই, প্রশাসনিক এবং রাজনৈতিক মহলও মনে করছে, ওই সম্মেলন থেকে মুখ্যমন্ত্রী সংখ্যালঘু সমাজের উদ্দেশে সামগ্রিক ভাবে ‘গুরুত্বপূর্ণ বার্তা’ দিতে পারেন।

সংখ্যালঘু সংগঠনগুলির অভিযোগ, নতুন ওয়াকফ সংশোধনী আইনে তাঁদের ধর্মীয় অধিকার ও ওয়াকফ সম্পত্তির উপর সরকারি ‘হস্তক্ষেপ’ করা হচ্ছে। তাঁদের বক্তব্য, এই আইন সংবিধানসম্মত মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ণ করছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা অবশ্য ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছেন যে, ওই সংশোধিত আইন পশ্চিমবঙ্গে কার্যকর হবে না। তবে পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়ে উঠেছে যে, শুধুমাত্র ঘোষণায় শান্তি ফিরছে না। বিভিন্ন এলাকায় এখনও বিক্ষোভ চলছে, অনেক পরিবার ভিটেছাড়া, যা প্রশাসনের জন্য উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রীর ওই সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন মন্ত্রী ও কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, নাখোদা মসজিদের ইমাম তথা সভার আহ্বায়ক মওলানা শফিক কাসেমি, মওলানা বাকি বিল্লাহ-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের ইমাম, মোয়াজ্জিম এবং মুসলিম বুদ্ধিজীবীরা। মূলত এই বৈঠকের মাধ্যমে সংখ্যালঘু সমাজের আশঙ্কা দূর করার চেষ্টা করবে রাজ্য সরকার।

প্রসঙ্গত, তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র ও ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে ওয়াকফ সংশোধনী আইনটিকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা করেছেন। কেন্দ্রের তরফে এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট ভাবে কোনও বক্তব্য না এলেও রাজ্য-রাজনীতিতে এই বিষয়টি যে আগামী দিনে প্রভাব ফেলবে, তা এখনই স্পষ্ট। এই প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে আয়োজিত বুধবারের সম্মেলন শুধু প্রশাসনিক পদক্ষেপ নয় বরং রাজনৈতিক বার্তাও বহন করবে। রাজ্যের একাংশে সাম্প্রতিক অশান্ত পরিবেশে ওই সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী কী বার্তা দেন, সেই দিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহল।

Advertisement
আরও পড়ুন