Bengal SSC Recruitment Verdict

চাপ কাটাতে তৃণমূল পাল্টা প্রচার চাইছে বসু-জমানা নিয়ে

কসবায় ডিআই অফিসে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের অনেকেই আহত হয়েছেন। সেই ঘটনার সূত্র ধরে তাঁদের বিরুদ্ধে জোড়া মামলাও দায়ের করা হয়েছে। এই অবস্থায় রাজনৈতিক ‘চাপমুক্ত’ হতে বড় আকারে পাল্টা প্রচার চাইছে তৃণমূল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০২৫ ০৫:৫২
সিপিএমকে লাগাতার কাঠগড়ায় তুলেছে তৃণমূল।

সিপিএমকে লাগাতার কাঠগড়ায় তুলেছে তৃণমূল। —ফাইল চিত্র।

দুর্নীতির দায়ে চাকরি বাতিল এবং তার পরে বিপর্যস্ত শিক্ষকদের উপরে পুলিশি নির্যাতনের ঘটনায় চাপে পড়ে পাল্টা প্রচারকে জোরদার করতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্য দলের ওয়ট্সঅ্যাপ গ্রুপে মূলত সিপিএমের জমানায় শিক্ষকদের ‘দুঃসময়’ মনে করিয়ে নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। সাংসদ, বিধায়ক ও দলের সব শাখা সংগঠনের রাজ্য সভাপতিদের সমাজমাধ্যমে সে সব তুলে ধরতে বলা হয়েছে।

কসবায় ডিআই অফিসে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের অনেকেই আহত হয়েছেন। সেই ঘটনার সূত্র ধরে তাঁদের বিরুদ্ধে জোড়া মামলাও দায়ের করা হয়েছে। এই অবস্থায় রাজনৈতিক ‘চাপমুক্ত’ হতে বড় আকারে পাল্টা প্রচার চাইছে তৃণমূল। কোনও ঘটনা নির্দিষ্ট না করলেও তবে বাম জমানাকে ইঙ্গিত করে বলা হয়েছে, ‘সে দিন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে দেখাও করেননি! ব্যাপক লাঠিচার্জ করে আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে নিয়ে গিয়ে রাত্রি আড়াইটার সময় বয়স্ক শিক্ষক শিক্ষিকাদের ছেড়ে দেয়’!

দু’দিন আগে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরামর্শ দিয়েছিলেন, বিকাশ ভট্টাচার্য-সহ বিরোধীদের বক্তব্যের জবাব দিতে সমাজমাধ্যমে আরও সক্রিয় হতে হবে। দলের ওই গ্রুপে বুধবার রাতে প্রচারের বিষয়টি নির্দিষ্ট ও সবিস্তারে জানানো হয়েছে। গ্রুপের সদস্য সব সাংসদ, বিধায়ক ও দলীয় পদাধিকারীদের সমাজমাধ্যমে ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে দিতে বলা হয়েছে। ‘গ্রুপে’র ‘অ্যাডমিন’ লিখেছেন, ‘সিপিএম কমরেড জ্যোতি বসুর নেতৃত্বে তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার (১৯৯২ সাল) এক দিনে অবসরের বয়স ৬৫ থেকে পাঁচ বছর কমিয়ে ৬০ বছর করার কারণে এক দিনেই পশ্চিমবঙ্গে প্রাইমারি, সেকেন্ডারি মিলিয়ে ৭৩ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীকে বেকার করেছিল’!

নিয়োগ-দুর্নীতি মামলায় অন্যতম আইনজীবী ছিলেন সিপিএম সাংসদ বিকাশ। সেই সূত্রেই ‘চাকরিখেকো’ বলে আক্রমণ করে লাগাতার এই পরিস্থিতির জন্য বিকাশ ও তাঁর দল সিপিএমকে লাগাতার কাঠগড়ায় তুলেছে তৃণমূল। সে কথা মনে করিয়ে দিয়েই তৃণমূল চাইছে বাম আমলের কথা তুলে ধরতে। তাই ১৯৯২ সালে বাম সরকারের সিদ্ধান্ত উল্লেখ করে দলের তরফে স্থির করে দেওয়া প্রচারের বিষয়ে বলা হয়েছে, সে দিন অনেকেরই ৫, ৪, ৩ বা এক বছর চাকরি ছিল। বলা হয়েছে, ‘এক কলমের খোঁচায় ৭৩ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীকে অবসর নিতে বাধ্য করা হয়েছিল!

বাম আমলের শেষ দিকে পিটিটিআই আন্দোলন বড় আকার নিয়েছিল। সেই আন্দোলনের নেতা, এখন তৃণমূলের জনপ্রতিনিধি অশোক রুদ্র সে কথা মনে করিয়ে বলেন, ‘‘সরকারের গাফিলতি ও অস্বচ্ছতার কারণে একটা প্রজন্মকে অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছিল সিপিএম। তারা এখন উস্কানি ছড়াচ্ছে।’’ কিন্তু সিপিএমের দায় মনে করিয়ে কী এখনও রাজ্য সরকারের দায় মেনে নিচ্ছে তৃণমূল? দলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহানুভূতিশীল। সিপিএম বা জ্যোতিবাবু তা ছিলেন না। আমরা এটুকুই মনে করিয়ে দিচ্ছি।’’

আরও পড়ুন