Abhishek Banerjee on Shahjahan Sheikh

শাহজাহানকাণ্ডে মুখ খুললেন অভিষেক, ফিরহাদের সঙ্গে তিনি কি একমত? কী কী বললেন তৃণমূল সেনাপতি

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শাহজাহানকাণ্ডকে বিচারাধীন বিষয় বলেছেন। মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম অবশ্য বলেছেন, শাহজাহান যা করেছেন তা অন্যায়। এ বার এ নিয়ে মুখ খুললেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০২৪ ১৯:২৪
Shahjahan Sheikh and Abhishek Banerjee

শেখ শাহজাহান এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

সন্দেশখালিতে শেখ শাহজাহানের বাড়িতে ইডির অভিযান এবং ওই তৃণমূল নেতার ‘পালিয়ে যাওয়া’ নিয়ে মুখ খুললেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো অভিষেকও জানিয়ে দিলেন, বিচারাধীন বিষয় নিয়ে তিনি মন্তব্য করবেন না। তবে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের মতো অভিষেকও জানালেন, গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালিতে যা হয়েছে, তা ঠিক হয়নি।

Advertisement

সোমবার শাহজাহান প্রসঙ্গ উঠতেই অভিষেক বলেন, ‘‘যা হয়েছে, তা অনভিপ্রেত।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমি যেটুকু সংবাদমাধ্যমে দেখেছি, তা দুর্ভাগ্যজনক।’’ যদিও তিনি ওই ঘটনার ‘মূল্যায়ন’ করার মতো কেউ নন বলে জানিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের সংযোজন, ‘‘আমাদের সরকারের তরফে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন যে, আপনি (ইডি) যদি লোকাল পুলিশের সহযোগিতা না চান, তা হলে একটা কনফ্রন্টেশন তৈরির জায়গা তৈরি হতে পারে। তখন কিন্তু আপনি পুলিশকে দায়ী করতে পারেন না এই বলে যে, পুলিশ জানে।’’ পাশাপাশি, ইডির অভিযানের ‘গোপনীয়তা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘‘ইডির পিছন পিছন সংবাদমাধ্যম ক্যামেরা নিয়ে সন্দেশখালি পৌঁছে যাচ্ছে... আমি কোনও ঘটনা সমর্থন করছি না। যা ঘটেছে, সেটা দুর্ভাগ্যজনক এবং অনভিপ্রেত। না হলেই ভাল হত।’’ তাঁর কথায়, ‘‘সন্দেশখালি কলকাতা থেকে ৩ ঘণ্টার রাস্তা। সেখানে আপনি ৮টার সময় পৌঁছচ্ছেন। এমন নয় যে, বেলা ১১টার সময় সংবাদমাধ্যম আসছে। আপনি ৮টায় পৌঁছচ্ছেন, এক মিনিটের মধ্যে সংবাদমাধ্যমও পৌঁছে যাচ্ছে।’’

এর আগে গত ১১ জানুয়ারি নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী শাহজাহানকাণ্ড নিয়ে বিশেষ কোনও মন্তব্য করতে চাননি। অল্প কথায় তিনি বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে। কোনও মন্তব্য করব না।’’ অন্য দিকে, ফিরহাদ বলে দেন, সন্দেশখালিতে ইডি আধিকারিকদের উপর যে আক্রমণ হয়েছে তা অন্যায়। তিনি বলেন, ‘‘আমি গণমাধ্যমে দেখেছি, মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে সরকারি আধিকারিকদের। যেটা করেছে নিশ্চিত করে বলছি, অন্যায় করেছে।’’ অভিষেক প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘‘শাহজাহান কী করেছে? সংবাদমাধ্যমে দেখেছি, ওখানে গন্ডগোল হয়েছে। আমি তো শাহজাহানকে দেখতে পাইনি। তবে সেটা বিচারাধীন বিষয়।’’

এর পর ইডিকে নিশানা করে অভিষেক বলেন, ‘‘আপনাদের উদ্দেশ্যটা কী? আপনি কোথায় যাচ্ছেন, না যাচ্ছেন, সেটা সংবাদমাধ্যম জানবে কী করে? ইডির প্রত্যেক জায়গায় যাওয়ার অধিকার আছে এটাও যেমন ঠিক, তেমনই এই প্রশ্নটাও আমরা তুলছি যে, তারা নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করছে না।’’

আবারও সারদাকাণ্ড নিয়ে ইডি এবং সিবিআইয়ের উদ্দেশে অভিষেক বলেন, ‘‘তখন আপনাদের হাত কে বেঁধে রাখছে? কেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী বা এ রাজ্যের বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না? আমি কাউকে ডিফেন্ড না করে বলছি, যাঁরা দুর্নীতিতে যুক্ত, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা হোক। কিন্তু বিজেপির বেলায় নিয়মের অন্যথা কেন?’’

বস্তুত, সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে শুরু থেকেই ‘অস্বস্তি’তে তৃণমূল। বিরোধী দলগুলি একযোগে এ বিষয়ে তাদের আক্রমণ করে চলেছে। আদালতেও স্বস্তি মেলেনি শাসকদলের। ইডির বিরুদ্ধে পাল্টা যে এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল, তাতে স্থগিতাদেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। রাজ্যের কাছে চাওয়া হয়েছে কেস ডায়েরিও। তবে এত কিছুর পরেও শাহজাহান এখনও নিখোঁজ।

Advertisement
আরও পড়ুন