Rahul Gandhi

এ বার নাম করেই রাহুলের পাশে অভিষেক, কংগ্রেস আর তৃণমূলের সমীকরণ কি বদলাচ্ছে?

২৪ মার্চ, শুক্রবার রাহুলের সাংসদ পদ খারিজ করেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। ওই দিনই রাহুলের নাম না করে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন মমতা এবং অভিষেক।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২৩ ১৭:২৬
TMC leader Abhishek Banerjee backs to Congrss leader Rahul Gandhi from Shahid Minar rally

রাহুলের পাশে অভিষেক। ফাইল চিত্র।

রাহুল গাঁধীর সাংসদ পদ খারিজ নিয়ে এ বার নাম করেই তাঁর পাশে দাঁড়ালেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার শহিদ মিনারের জনসভা থেকে কেন্দ্রের মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়ান তিনি। ২৩ মার্চ, বৃহস্পতিবার সুরতের একটি আদালত ‘মোদী’ পদবি নিয়ে রাহুলের আপত্তিকর মন্তব্যের জন্য দু’বছর জেলের সাজা শোনায়। পরের দিনই রাহুলের সাংসদ পদ খারিজ করেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। ওই দিনই রাহুলের নাম না করে তাঁকে সমর্থন করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দু’জনই টুইট করে রাহুলের সাংসদ পদ খারিজের বিষয়ে বিজেপির সমালোচনা করেছিলেন। মমতা লিখেছিলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর নতুন ভারতে বিরোধী নেতারা বিজেপির প্রাইম টার্গেট। অপরাধের ইতিহাস থাকলেও, মন্ত্রিসভায় আছেন বিজেপি নেতারা। অপরাধের ইতিহাস থেকেই বিজেপি নেতারা মন্ত্রিসভায়, মন্তব্যের জন্য বিরোধী নেতাদের সাংসদ পদ খারিজ’’। অভিষেক টুইটারে লেখেন, ‘‘গণতান্ত্রিক ভারত এখন অলীক।’’

সেই দিন মমতা বা অভিষেক, কারও নাম করেননি। তবে বুধবার শহিদ মিনারের সভায় অভিষেক বলেন, “রাহুল গান্ধীর কথাকে আমি সমর্থন করি না। কিন্তু যে কায়দায় তাঁর লোকসভার সদস্য পদ খারিজ হয়েছে, তা গায়ের জোর ছাড়া আর কিছুই না”। তিনি আরও বলেন, ‘‘মোদী পদবি নিয়ে বলে যদি রাহুল গান্ধী ওবিসি সম্প্রদায়ের ভাবাবেগে আঘাত করে থাকেন, তার জন্য যদি তাঁর দু’বছরের কারাদণ্ড ও সাংসদ পদ খারিজ হয়, তা হলে বিধানসভা ভোটের প্রচারে এসে দেশের প্রধানমন্ত্রী যে আমাদের নেত্রীকে ‘দিদি ও দিদি’ বলে আক্রমণ করেছিলেন, সেটা কি মহিলাদের অসম্মান নয়? তা হলে সেই কারণে দেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ কেন খারিজ হবে না?’’

Advertisement

জাতীয় রাজনীতিতে কংগ্রেসের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখে চলা তৃণমূল রাহুলের সাংসদ পদ খারিজের পর নিজেদের অবস্থানে খানিক বদল এনেছে। ওই ঘটনার পর কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের ডাকা বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূলের দুই সাংসদ জহর সরকার ও প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়।

রাজনীতির কারবারিদের একাংশ মনে করছেন, এই পথে বদলাতে পারে কংগ্রেস ও তৃণমূলের মধ্যের সমীকরণ। কারণ বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সমমনস্ক দলগুলিকে বার বার আহ্বান জানিয়েছে কংগ্রেস। তবে এই মার্চের গোড়াতেই কংগ্রেসের কাছে সাগরদিঘিতে পরাজিত হতে হয়েছে তৃণমূলকে। তার পরেই মুখ্যমন্ত্রী নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে তোপ দাগেন কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। তিনি বলেছিলেন, ‘‘অনৈতিক জোট করে জিতেছে কংগ্রেস।’’ কিন্তু রাজনীতিতে কেউই ‘চিরশত্রু বা বন্ধু নয়’। তাই রাজ্য রাজনীতির কারবারিদের মতে, রাহুলের সাংসদ পদ খারিজের বিষয়কে কেন্দ্র করে আবারও এক মঞ্চে আসতেই পারে কংগ্রেস ও তৃণমূল।

সাংসদ পদ খারিজ নিয়ে শুধু রাহুলের পাশেই দাঁড়াননি অভিষেক, সুরতের ওই রায়ের কপিকে হাতিয়ার করে এ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর জেল ও বিধায়ক পদ খারিজের বিষয়েও উদ্যোগী হওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। জনসভা থেকেই অভিষেক বলেছেন, ‘‘শুভেন্দু অধিকারী তো বিরবাহা হাঁসদাকে বলেছিলেন আমার জুতার তলে থাকে, তাঁর কেন বিধায়ক পদ খারিজ হবে না’’? সুরত থেকে রাহুলের মামলার রায়ের কপি তুলে অভিষেক আগামী এক মাসের মধ্যে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হতে নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূলের আইনজীবী সেলকে।

আরও পড়ুন
Advertisement