Chopra Assault Case

চোপড়ার ‘ক্ষত’ মেরামত! তৃণমূল শোকজ় করল বিধায়ক হামিদুলকে, মন্তব্যের ব্যাখ্যাও তলব

জানা গিয়েছে, শোকজ় নোটিসের জবাব দেওয়ার জন্য হামিদুলকে সাত দিন সময় দেওয়া হয়েছে। হামিদুল জবাব দিলে তা রাজ্য নেতৃত্বকে পাঠাবেন জেলা সভাপতি।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪ ১৮:১১
TMC issued show cause notice to Chopra MLA Hamidul Rahman

(বাঁ দিকে) চোপড়ার তৃণমূল বিধায়ক হামিদুল রহমান। প্রকাশ্যে আসা গণপিটুনির ভিডিয়োর দৃশ্য (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

চোপড়ার ঘটনায় এ বার স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক হামিদুল রহমানেকে শোকজ় করলেন উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূল সূত্রে খবর, দলের এক শীর্ষনেতার নির্দেশেই চোপড়ার বিধায়ককে শোকজ়ের চিঠি পাঠানো হয়েছে। এমনকি, কী মর্মে চিঠি পাঠাতে হবে তা-ও বলে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার উত্তর দিনাজপুরের তৃণমূল জেলা সভাপতি কানাইলাল আগরওয়াল, হামিদুলকে শোকজ়ের চিঠি পাঠিয়েছেন।

Advertisement

জানা গিয়েছে, শোকজ় নোটিসের জবাব দেওয়ার জন্য হামিদুলকে সাত দিন সময় দেওয়া হয়েছে। হামিদুল জবাব দিলে তা রাজ্য নেতৃত্বকে পাঠাবেন জেলা সভাপতি। হামিদুলকে নিয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন রাজ্য নেতৃত্বই। সূত্রের খবর, চোপড়ায় যুগলকে গণপিটুনির ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর হামিদুল যে মন্তব্য করেছিলেন তার ব্যাখ্যাও চাওয়া হয়েছে। তবে শোকজ় সম্পর্কে জানতে হামিদুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি বলেন, ‘‘আমি এখনও চিঠি পাইনি। দলের চিঠি হাতে পেলে অবশ্যই তার জবাব দেব।’’

রবিবার দুপুরে চোপড়ার তৃণমূল নেতা তাজিমুল ওরফে ‘জেসিবি’র একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসে। সেই ভিডিয়োয় দেখা যায় এক তরুণীকে রাস্তার মধ্যে ফেলে এক ছড়া কঞ্চি দিয়ে বেধড়ক মারছেন জেসিবি। মার খেতে খেতে গুটিয়ে যাওয়া মেয়েটিকে চুলের মুঠি ধরে টেনে এনে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলা হচ্ছে। তার পরে আবার শুরু হচ্ছে মার। একই সঙ্গে এক তরুণকেও একই ভাবে মারতে দেখা যায় (ভিডিয়োটির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন )। তবে ওই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পরই শুরু হয়েছিল বিতর্ক। একে একে মুখ খুলতে শুরু করেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলের নেতারা। বিরোধীদের দাবি, অভিযুক্ত তাজিমুল বিধায়ক হামিদুলের ‘ঘনিষ্ঠ’। তার প্রেক্ষিতে হামিদুল গোটা ঘটনা নিয়ে শুরুতে যে বিবৃতি দিয়েছিলেন, তা নিয়ে আপত্তি তুলে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন শঙ্কর। বিজেপি বিধায়কের দাবি, তৃণমূল বিধায়ক তাঁর বক্তব্যে ‘আমাদের মুসলিম রাষ্ট্র’ শব্দবন্ধ ব্যবহার করেছেন।

পুলিশকে দেওয়া অভিযোগপত্রে শঙ্কর লিখেছেন, ‘‘প্রশাসনের কাছে আমি জানতে চাই, তৃণমূল পরিচালিত শাসকদল কবে পশ্চিমবঙ্গকে মুসলিম রাষ্ট্র বলে ঘোষণা করেছেন? বিধানসভার সদস্য হিসাবে আমি যত দূর জানি, ভারতের সংবিধানে কোথাও মুসলিম রাষ্ট্রের কথা বলা নেই।’’ রাজ্যে সম্প্রীতির পরিবেশকে নষ্ট করতেই এ ধরনের বিবৃতি দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করেছেন শঙ্কর। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হামিদুল। গোটা ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘‘যা হয়েছে তা একদমই ঠিক হয়নি। আমি মেনে নিচ্ছি। ওই জায়গায় জাতপাত সংক্রান্ত সমস্যা হলে সালিশি সভা হয়। একে আমি বা আমার দল একেবারেই সমর্থন করি না।’’

এই ঘটনায় পুলিশ ইতিমধ্যেই তাজিমুলকে গ্রেফতার করেছে। অন্য দিকে, চোপড়ার ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যেই আসরে নেমেছেন কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির জাতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা এবং সাংসদ কঙ্গনা রানাউত এই ঘটনার সমালোচনা করেছেন। সমালোচনা করেছেন বালুরঘাটের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement