একশো দিনের কাজ নিয়ে সঙ্কট চলছেই। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের টাকা কেন্দ্র না দেওয়ায় রাজ্যের অদক্ষ শ্রমিকদের রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতরের কাজ দেওয়ার ঘোষণা করেছিল নবান্ন। কিন্তু সেই কাজের পদ্ধতি ‘সন্তোষজনক’ নয় বলে মনে করছে খোদ নবান্নই। সেই ‘অসন্তোষ’ প্রকাশ করে ইতিমধ্যেই রাজ্যের সব জেলাশাসককে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। কী ভাবে ওই কাজ করতে হবে, সে বিষয়ে কিছু নির্দেশও দেওয়া হয়েছে ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
কেন্দ্রীয় সরকার ঠিক মতো ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের প্রাপ্য টাকা রাজ্যকে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ তৃণমূলের। অন্য দিকে, কেন্দ্র এবং বিজেপির অভিযোগ— রাজ্য ঠিকমতো হিসাব জমা দিতে পারেনি। এমন পরিস্থিতিতে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প প্রায় বন্ধ হতে বসেছে। তবে গ্রামের অদক্ষ শ্রমিকদের বিকল্প কাজ দেওয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু সেই কাজও সঠিক ভাবে হচ্ছে না বলেই মনে করছে নবান্ন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে অদক্ষ শ্রমিকদের কাজ না মেলাটা শাসকদলের পক্ষে ‘রাজনৈতিক সঙ্কট’ তৈরি করতে পারে বলে মনে করছেন নবান্নের কর্তারা। এমনই পরিস্থিতিতে মুখ্যসচিবের বিজ্ঞপ্তি। তাতে জব কার্ড বিলি নিয়ে কড়া নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
মুখ্যসচিবের পাঠানো ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন দফতরের প্রকল্পে শুধু মাত্র তাঁদেরই কাজ দিতে হবে, যাঁদের কাছে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের জব কার্ড রয়েছে। কাজ বিলির ব্যাপারে যে সব কর্মী নিযুক্ত রয়েছেন, তাঁদের এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে বলেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে দেওয়া নির্দেশে আরও বলা হয়েছে, যাঁরা কাজ পাচ্ছেন অথচ জব কার্ড নেই, তাঁদের ক্ষেত্রেও সতর্ক হতে হবে এই মর্মে যে, সকলেই যেন জব কার্ড পেয়ে যান।
একই সঙ্গে সকলের নাম পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এই সংক্রান্ত পোর্টালে নথিভুক্ত করতে হবে। প্রত্যেক দফতরকে একজন করে নোডাল অফিসার নিয়োগ করতে হবে, যাঁরা জব কার্ড বিলি ও পোর্টালে নাম তোলার বিষয়ে নজরদারি করবেন। সবার উপরে এই কাজের তদারকি করতে হবে সংশ্লিষ্ট জেলার জেলাশাসকদের।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার যখন নবান্ন জেলায় জেলায় এই নির্দেশ পাঠিয়েছে, তখন একই দিনে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফেও একটি চিঠি পেয়েছে রাজ্য। নবান্নে সেই চিঠি পাঠিয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের ডিরেক্টর ধর্মবীর ঝা। নবান্ন সূত্রে খবর, রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন সচিবকে দেওয়া সেই চিঠিতে কেন্দ্র স্পষ্ট বলেছে, ১০০ দিনের কাজ নিয়ে ওঠা অভিযোগ এবং তার প্রেক্ষিতে রাজ্যের ‘অ্যাকশন টেকন রিপোর্ট’ নিয়ে খুশি নয় দিল্লি। ১৫টি জেলার রিপোর্ট নিয়ে মূলত প্রশ্ন তোলা হয়েছে। নবান্নও ওই ১৫ জেলাকে আগামী ১৪ নভেম্বরের মধ্যে সংশোধিত ‘অ্যাকশন টেকন রিপোর্ট’ পাঠাতে বলেছে।