Waqf Bill

ওয়াকফ-বিরোধিতায় প্রস্তাব রাজ্যের, পাল্টা প্রশ্ন এক্তিয়ারে

ওয়াকফ বিল নিয়ে আপত্তি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, একটি বিশেষ অংশকে নিশানা করেই এই বিল আনা হয়েছে। এটা কি অন্য ধর্মের ক্ষেত্রে কেন্দ্র করতে পারবে?

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৪:৩০
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

কেন্দ্রের প্রস্তাবিত ওয়াকফ বিলের বিরোধিতা আদালত পর্যন্ত গড়াতে পারে বলে মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিল নিয়ে আপত্তি জানিয়ে তাঁর প্রশ্ন, একটি বিশেষ অংশকে নিশানা করেই এই বিল আনা হয়েছে। এটা কি অন্য ধর্মের ক্ষেত্রে কেন্দ্র করতে পারবে? বিলের বিরোধিতায় সোমবার সরকার পক্ষের আনা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় যোগ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ওই মত জানিয়েছেন। পক্ষান্তরে, রাজ্য এমন প্রস্তাব আনতে পারে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি। তাদের বক্তব্য, বিরোধী-নেত্রী থাকাকালীন মমতাই ওয়াকফ নিয়ে সিবিআই তদন্ত চেয়েছিলেন! রাজ্যের এমন প্রস্তাব সংসদীয় গণতন্ত্রের পরিপন্থী বলেও মন্তব্য করেছেন বিল নিয়ে আলোচনার জন্য তৈরি যৌথ সংসদীয় কমিটির (‌‌জেপিসি) চেয়ারম্যান, বিজেপি সাংসদ জগদম্বিকা পাল।

Advertisement

বিজেপি নেতৃত্বকে নিশানা করে বিধানসভায় এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, ‘আদিবাসী, খ্রিস্টানদের ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতে পারবেন? বুকের পাটা আছে? স্বর্ণমন্দিরের সম্পত্তি দখল করতে পারবেন? তা হলে কেন নির্দিষ্ট একটি ধর্মের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতে চাইছেন?’ তাঁর সংযোজন, ‘ওয়াকফে অনেক হিন্দু পরিবারও দান করেছে। কিন্তু বিলে বলা হয়েছে হিন্দুরা দান করতে পারবেন না। কেন?’ সেই সঙ্গেই, সংবিধান পাল্টাতে দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার দরকার হয়, সে কথা স্মরণ করিয়ে বিজেপির সাংসদ সংখ্যা নিয়েও কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী।

যদিও রাজ্যের এমন প্রস্তাবের এক্তিয়ার নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি। জেপিসি-র চেয়ারম্যান জগদম্বিকা বলেছেন, “পশ্চিমবঙ্গ সরকার ওয়াকফ বিলের বিরুদ্ধে বিধানসভায় প্রস্তাব আনলে তা সংসদীয় গণতন্ত্র ও সংবিধানের মূল নীতিকে আঘাত করে।” বিধানসভাতেও বিজেপির মুখ্য সচেতক শঙ্কর বলেছেন, ‘সংসদে আলোচনা করার বিষয় নিয়ে বিধানসভায় আলোচনা করাটা অযৌক্তিক এবং সময় নষ্ট। জেপিসির আওতাধীন বিষয়ে প্রস্তাব পাশ করার এক্তিয়ারই নেই বিধানসভার। এই মুখ্যমন্ত্রীই বিরোধী-নেত্রী থাকার সময়ে ওয়াকফ সম্পত্তি নিয়ে সিবিআই তদন্ত চেয়েছিলেন।’

এ দিকে, লোকসভায় তৃণমূলের সচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেন্দ্র করে সাম্প্রতিক অতীতে বার বার তেতে উঠেছিল জেপিসি-র বৈঠক। সেই সূত্রেই এ দিন কল্যাণকে জগদম্বিকার পরামর্শ, “কল্যাণ জেপিসি কমিটির সদস্য। তাই ওয়াকফ বিলকে কেন্দ্র করে তাঁর কোনও মন্তব্য থাকলে তা কমিটিতেই বলা উচিত।” প্রসঙ্গত, ওয়াকফ নিয়ে কল্যাণের করা একটি মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বিতর্ক বেধেছে। যদিও তাঁর মন্তব্য বিকৃত করে বিজেপি রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করতে চাইছে বলে অভিযোগ তুলেছেন কল্যাণ। সেই সঙ্গে, নিজের বক্তব্যের সমর্থনে কল্যাণ এ দিন দাবি করেছেন, “সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বলা হয়েছে, মুসলিম মালিকানাধীন কোনও সম্পত্তি বা ওয়াকফের জন্য দান করা ভূ-সম্পত্তিতে নমাজ পড়া হলে, সেটা ওয়াকফ সম্পত্তি হিসেবে গণ্য করা যেতে পারে।”

Advertisement
আরও পড়ুন