Bengal Recruitment Case

অভিষেকের আয়ের উৎস জানতে চেয়েছিলেন, সেই মামলা পিছিয়েই গেল বিচারপতি সিংহের বেঞ্চে

অভিষেক ৫,৫০০ পাতার নথি জমা দিয়েছেন শুনে বিচারপতি প্রশ্ন করেছিলেন, ‘‘যে পরিমাণ নথি জমা পড়েছে, তা ইঙ্গিত দিচ্ছে বিপুল সম্পত্তির। অভিষেকের আয়ের উৎস কী, তা খুঁজে দেখেছেন আপনারা?’’

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৬:৫৮

—ফাইল চিত্র।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আয়ের উৎস কী? জানতে চেয়েছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিংহ। এ ব্যাপারে ইডিকে অবিলম্বে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছিলেন তিনি। ইডি রিপোর্ট জমাও দিয়েছিল তাঁর এজলাসে। কিন্তু তার পর থেকে মামলাটির শুনানিই হল না বিচারপতি সিংহের এজলাসে।

Advertisement

বুধবার মামলাটির শুনানি হওয়ার কথা থাকলেও হয়নি। তার পরে বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবারও ওই মামলার শুনানি না হওয়ায় মামলাটির পরবর্তী শুনানির দিন পিছিয়ে গেল অনেকটাই। কবে আবার ওই মামলার শুনানি হবে, তা নিয়েও তৈরি হল অনিশ্চয়তা। কারণ, সোমবার থেকে বড়দিনের ছুটি পড়ে যাচ্ছে আদালতে। তার আগে শনি এবং রবিবারও আদালত বসবে না। শুক্রবারের পর আবার ১১ দিন পর খুলবে আদালত। ফলে এই মামলার শুনানি কবে হবে তা জানা যাবে ছুটি শেষে আদালত খোলার পর।

গত ১২ ডিসেম্বর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আয়ের উৎস জানতে চেয়ে ইডিকে প্রশ্ন করেছিলেন বিচারপতি। অল্প কথায় একটি মুখবন্ধ খামে সেই প্রশ্নের জবাব দিতে বলেছিলেন তিনি। এর পরে ১৪ ডিসেম্বর সেই জবাব জমা পড়ে বিচারপতির এজলাসে। বিচারপতি তখন বলেছিলেন, এ বিষয়ে যা বলার, তা তিনি রিপোর্ট দেখার পরেই বলবেন।

বুধবার, ২০ ডিসেম্বর সেই মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিচারপতির এজলাসে থাকা টেটে সংক্রান্ত অন্য একটি মামলা ডিভিশন বেঞ্চের বিবেচনাধীন হওয়ায় তিনি জানিয়ে দেন ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিলে তবেই তিনি ঠিক করবেন মামলাগুলি বৃহস্পতিবার শোনা হবে কি না। ফলে বুধবার পিছিয়ে যায় মামলা। এর পরে বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবারও মামলার শুনানি হয়নি।

বৃহস্পতিবার দ্বিতীয়ার্ধে মামলাটি শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিচারপতি নিজে দ্বিতীয়ার্ধে এজলাসে বসেননি। শুক্রবারও বিকেল ৪টে নাগাদ এই মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শুক্রবারও বিচারপতি সিংহ দ্বিতীয়ার্ধে এজলাসে না বসায় মামলাটির শুনানি হয়নি। আর তাতেই আপাতত বেশ কিছু দিনের জন্য পিছিয়ে গেল মামলাটি।

প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিষেকের সংস্থা লিপ্‌স অ্যান্ড বাউন্ডস সংক্রান্ত বেশ কিছু তথ্য অনেক আগেই ইডিকে বিশদে জানাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি সিংহ। লিপ‌্স অ্যান্ড বাউন্ডস সংস্থার ছ’জন ডিরেক্টরের নাম, তাঁদের সম্পত্তির পরিমাণ, সংস্থার লেনদেন, তার মূল্য, এই সংস্থায় কারা ক্লায়েন্ট, তাঁদের নাম, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, সংস্থার রোজের কাজ কে দেখতেন, সিইও অভিষেকের সম্পত্তির বিস্তারিত বিবরণ, তাঁর মা লতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পত্তির বিস্তারিত বিবরণ, সংস্থার সব কর্মীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, কারা, কবে সংস্থায় যোগ দিয়েছেন, কেন সংস্থার ঠিকানা পরিবর্তন এবং কার কাছে তদন্ত নিয়ে ইডি সাহায্য চায়, তা জানাতে বলা হয়েছিল হাই কোর্টে।

গত ১২ ডিসেম্বর ইডি বিচারপতিকে জানায়, অভিষেক, তাঁর স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ‘লিপ্‌স অ্যান্ড বাউন্ডস’ সংস্থার ডিরেক্টর নথি জমা দিয়েছেন। এর পরেই বিচারপতি জানতে চান, ২০১৪ সালের পর থেকে সম্পত্তির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে অভিষেকের। তাঁর আয়ের উৎস কী? বিচারপতিকে ইডি জানায়, অভিষেক ৫,৫০০ পাতার নথি জমা দিয়েছেন। তাঁরা এর উত্তর খতিয়ে দেখছেন। ইডির এই জবাব শুনেই বিচারপতি বলেছিলেন, ‘‘যে পরিমাণ নথি জমা পড়েছে, তা ইঙ্গিত দিচ্ছে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির। ওই নথি অনুযায়ী যে সম্পত্তি কেনা বা লেনদেন হয়েছে, তা কি খুঁজে দেখেছেন আপনারা? আদালত যা জানতে চাইছে, তা কি খুঁজে দেখেছেন? আয়ের উৎস খুঁজে দেখেছেন? আইন আপনাদের ক্ষমতা দিয়েছে। এটাই তো আপনাদের তদন্তের মুখ্য বিষয় হওয়া উচিত।’’

আরও পড়ুন
Advertisement