—প্রতীকী চিত্র।
আসন্ন লোকসভা ভোটের এখনও মাস দশেক বাকি। তবে তার প্রস্তুতি শুরু করেছে দিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। শনিবার পশ্চিমবঙ্গের সব জেলাশাসক এবং জেলাস্তরের অন্য নির্বাচনী আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন কমিশনের কর্তারা। প্রাথমিক ভাবে ইলেকট্রনিক ভোট যন্ত্রের (ইভিএম-ভিভিপ্যাট) প্রশিক্ষণ এবং ভোটার তালিকা সংশোধনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে এ দিন। এই প্রশিক্ষণকেই প্রস্তুতির সূচনা বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকদের অনেকে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর, আগামী ১৯ অগস্ট রাজ্যে আসতে পারেন তিন জন ডেপুটি নির্বাচন কমিশনার। লোকসভা নির্বাচনের আগে সামগ্রিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখাই লক্ষ্য। ১ অগস্ট থেকে রাজ্যে শুরু হবে ইলেকট্রনিক ভোট যন্ত্রের প্রথম পর্যায়ের যাচাইয়ের কাজও। সেখানে কমিশনের স্বীকৃত সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত থাকবেন।
প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকেরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, অতীতে ইভিএম নিয়ে বিস্তর অভিযোগ তুলেছিলেন বিরোধীরা। কমিশনের সিদ্ধান্তে গত বিধানসভা ভোট থেকে আরও আধুনিক (ভিভিপ্যাট) যন্ত্রের ব্যবহার শুরু হয়েছে। এতে এক জন ভোটার কোন দলকে ভোট দিলেন, ভোটদানের পরে অল্প কিছু ক্ষণ তা দেখতে পারবেন। সেই প্রমাণ জমা পড়বে যন্ত্রের নির্দিষ্ট জায়গায়। ভোট গণনার সময় ইভিএম-এ প্রাপ্ত ভোটের সঙ্গে তা মিলিয়ে দেখা হয়।
কমিশন সূত্র জানাচ্ছে, এ বার একশো শতাংশ জায়গায় এই যন্ত্রের ব্যবহার হবে। তাই প্রশিক্ষণ নিবিড় হওয়া প্রয়োজন।
এ দিন ভোটার তালিকা সংশোধনের উপরেও জোর দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, সেই তালিকা ত্রুটিমুক্ত করতে কী করণীয়, জেলা কর্তাদের তা-ও জানানো হয়েছে। ছিলেন জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ইভিএমের বিশেষজ্ঞ আধিকারিক বি সি পাত্রও।
কমিশন সূত্র জানাচ্ছে, ভোটার তালিকায় অনেক মৃত মানুষের নাম এখনও রয়ে গিয়েছে। বিবাহিত মহিলাদের অনেকেরই পিত্রালয় এবং শ্বশুরবাড়ি, দু’জায়গাতেই নামরয়েছে। সেগুলি সংশোধনের পাশাপাশি ভোটার তালিকায় নাম তোলার পদ্ধতি আরও সরল করা হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ শুরু হওয়ার কথা। ১ জানুয়ারি তা চূড়ান্ত হবে। ৫ জানুয়ারি চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ পাওয়ার কথা।
রাজ্যে এখন বুথের সংখ্যা প্রায় ৭৯ হাজার। প্রতি বছরের মতো এ বছরও ভোটার সংখ্যা বাড়বে বলেই মনে করছে কমিশন। তাদের নিয়ম অনুযায়ী একটি বুথে সর্বাধিক ১৫০০ ভোটার থাকতে পারেন। ফলে চূড়ান্ত ভোটার সংখ্যার নিরিখে বুথ বিভাজনের কাজও করতে হবে।
প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের অনেকে মনে করছেন, আইনশৃঙ্খলা এবং ভোট ব্যবস্থাপনার উপর আরও কড়া নজরদারি রাখবে কমিশন। সদ্য সমাপ্ত পঞ্চায়েত ভোটের তথ্য, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি—সবই আসবে আতশকাচের তলায়। এমনকি, বিডিওদের একাংশের ভূমিকা যে ভাবে প্রশ্নের মুখে পড়েছে, তা-ও নজরে রাখতে পারে দিল্লির নির্বাচন সদন। নভেম্বর নাগাদ রাজ্যে আসতে পারেন জাতীয় নির্বাচন কমিশনারেরা।