রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। ফাইল চিত্র।
রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্য সরকারের সঙ্ঘাত চলছেই। শনিবার রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের বিবৃতি ঘিরে সেই সঙ্ঘাত পর্ব নতুন মাত্রা পেল। পরপর তিনটি টুইট করার পাশাপাশি, একটি দীর্ঘ প্রেস বিবৃতি প্রকাশ করে জানালেন নিজের অবস্থান। সম্প্রতি রাজ্যের সরকারি সব বিশ্ববিদ্যালয়েরই আচার্য পদে মুখ্যমন্ত্রীকে বসাতে বিল পাশ করেছে রাজ্য সরকার। তবে এখনও ওই বিলে রাজ্যপালের স্বাক্ষর হয়নি। ফলে নিয়ম অনুয়াযী বিলটি এখনও আইনে রূপান্তরিত হয়নি। সেই আবহেই বৃহস্পতিবার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য নিয়োগের কথা ঘোষণা করেন রাজ্যপাল। বিবাদ মূলত সেই বিষয়টিকেই নিয়ে। তিনি বলেছেন, ‘রাজ্যপাল তথা আচার্যের পদাধিকার বলে রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি যে উপাচার্য নিয়োগ করেছেন, সেই নিয়ে তৃণমূল মুখপাত্ররা প্রকাশ্যে যে বিবৃতি দিচ্ছেন তা দুর্ভাগ্যজনক।’
বিবৃতিতে ধনখড় বলেছেন, ‘বলা হল রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রী বা শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা না বলেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু ২৪ জুন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু রাজ্যপাল তথা আচার্যের কাছে এ বিষয়ে নোট পাঠিয়েছিলেন।’ এই নিয়োগের পর তৃণমূলের মুখপত্রে যেভাবে রাজ্যপালকে আক্রমণ করা হয়েছে, সেটাও যে তিনি ভাল চোখে দেখেননি, তা নিজের বিবৃতি জানিয়েছেন ধনখড়। কারণ তিনি ‘পদাধিকার বলে’ এখনও ওই বিশ্ববিদ্যালয়-সহ রাজ্যের সমস্ত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য। রাজ্যপাল আরও লিখেছেন, ‘আচার্য হিসেবে জগদীপ ধনখড় রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্য বিভাগের অধ্যাপিকা মহুয়া মুখোপাধ্যায়কে উপাচার্য পদে নিয়োগ করলেন। ১৯৮১ সালের রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় আইনের (১)(বি) ধারা মেনে।’
WB Guv
— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) July 2, 2022
Statement @AITCofficial -VC of Rabindra Bharati University appointment- reveals disconnect with Gov #MamataBanerjee. It is factually incorrect. Hence record set straight. Expect maturity & propriety from ruling party & Gov.Ever available for connect and interaction. pic.twitter.com/CABx4QV4Rt
বৃহস্পতিবার এ প্রসঙ্গে ধনখড় জানিয়েছেন, ২০২২ সালের ৯ জুন একটি বৈঠকে বসেছিল রবীন্দ্রভারতীর সার্চ কমিটি। সেখানেই উপাচার্য পদে নিয়োগের জন্য তিনটি নাম প্রস্তাব করা হয়। সেই তিনটি নাম হল— রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্য বিভাগের অধ্যাপিকা মহুয়া, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের অধ্যাপক সঞ্জীবকুমার দত্ত এবং রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। বিবৃতিতে আবারও সেই সব বিষয়ের পুনরাবৃত্তি করেছেন রাজ্যপাল।
বিল আটকে রাখা নিয়েও তাঁর বিরুদ্ধে বাংলার শাসকদল অভিযোগ করেছে। সেই প্রসঙ্গে রাজ্যপালের জবাব, রাজভবনের বিবেচনায় থাকা কোনও বিল আটকে নেই। কিন্তু বিধানসভার অন্দরে যে আচার্য বদল বিল নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তা অসম্পূর্ণ ভাবে রাজভবনে পাঠানো হয়েছে। প্রয়োজনীয় নথি হাতে পেলেই দ্রুততার সঙ্গে বিলটি ছেড়ে দেওয়া হবে। সঙ্গে তিনি আরও জানিয়েছেন, বিধানসভার সচিবালয়ের ভারতীয় সংবিধানের ২০০ অনুচ্ছেদের অধীনে রাজ্যপালের কাছে পাঠানোর জরুরি। কিন্তু বিলের যাবতীয় নথি অসম্পূর্ণ পাঠানো হয়েছে। তাই যাবতীয় তথ্য রাজভবনকে দেওয়া বাধ্যমূলকও বটে।