State Education Policy

নতুন ‘রাজ্য শিক্ষানীতি’র গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারি হয়ে গেল! কী কী বদল, এক নজরে স্কুল থেকে কলেজ

রাজ্যের শিক্ষানীতিতে বলা হয়েছে, চিকিৎসকদের ক্ষেত্রে যেমন গ্রামে গিয়ে চিকিৎসা করা বাধ্যতামূলক, ঠিক তেমনই গ্রামীণ এলাকায় শিক্ষকতা করতে হবে শিক্ষকদের।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৩:৩০
photo of students.

—ফাইল চিত্র।

লক্ষ্য, রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল বদল। সেই লক্ষ্যপূরণ করতে রাজ্যের নতুন শিক্ষানীতি নিয়ে গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হল। শনিবার সকালে স্কুল শিক্ষা দফতরের পোর্টালে রাজ্যের নয়া শিক্ষানীতি সংক্রান্ত তথ্য আপলোড করা হল। ১৭৮ পাতার নির্দেশিকা প্রকাশ করা হয়েছে। ২০৩৫ সালের মধ্যে শিক্ষাব্যবস্থায় আমূল বদল ঘটানোর লক্ষ্য নিয়ে তৈরি করা হয়েছে এই শিক্ষানীতি। জাতীয় শিক্ষানীতির কিছু প্রস্তাব যেমন গ্রহণ করা হয়েছে, তেমনই নিজেদের তৈরি করা কমিটিতে আলোচনা করে কিছু পদক্ষেপ করা হয়েছে এই শিক্ষানীতিতে। শিক্ষাবিদদের নিয়ে তৈরি করা কমিটিতে সব প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার পরই রাজ্যের নতুন শিক্ষানীতি তৈরি করা হয়েছে।

Advertisement

এক বছরের প্রি-প্রাইমারি ক্লাস এবং চার বছরের প্রাথমিকের ক্লাসের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এর পর পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাসের কথা বলা হয়েছে। নবম-দশম শ্রেণির শেষে থাকছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। অষ্টম শ্রেণি থেকেই ধাপে ধাপে সেমেস্টার পদ্ধতি চালু করা যেতে পারে। একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় সেমেস্টার পদ্ধতি চালু করতে চলেছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে যে সব পড়ুয়া একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হবে, তারা এই নিয়মের আওতায় পড়বে। সেমেস্টার পদ্ধতিতে মূল্যায়ন করে প্রথম ফলাফল ঘোষণা হবে ২০২৬ সালে। দ্বাদশ শ্রেণির প্রথম সেমেস্টার, যা নভেম্বরে হবে, তাতে এমসিকিউয়ের মাধ্যমে মূল্যায়ন করার ভাবনা রয়েছে সংসদের। স্কুলে গ্র্যাজুয়েশন সেরেমনির করার ভাবনা।

মাতৃভাষাকে আরও গুরুত্ব দিতে চাইছে রাজ্য সরকার। পাশাপাশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে ইংরেজিকেও। শিক্ষানীতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলা এবং ইংরেজি পড়তেই হবে পড়ুয়াদের। তৃতীয় ভাষা হিসাবে বাংলা, হিন্দি এবং সংস্কৃতকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে রাজ্যের শিক্ষানীতিতে। প্রথম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বাংলা পড়াতে হবে। সেই অনুযায়ী পাঠ্যক্রম তৈরি করতে হবে। এই প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেছিলেন, ‘‘যেখানে যে যেটা প্রথম ভাষা নিতে চায়, সে সেটাই পারবে। কলকাতায় কেউ প্রথম ভাষা বাংলা নিতে চাইলে, তা পারে। দার্জিলিঙে কেউ নেপালি প্রথম ভাষা নিতে চাইলে, নিতে পারে। আবার কেউ যদি উর্দু, অলচিকি বা রাজবংশীকে প্রথম ভাষা করতে চায়, তা হলে সেটাও সে করতে পারে। দ্বিতীয় বা তৃতীয় ভাষার ক্ষেত্রে স্থানীয় জনজাতির প্যাটার্নের উপর নির্ভর করবে, তারা কী ভাষা নেবে।’’

photo of state education policy

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

সকল পড়ুয়ার জন্য একটি ‘ইউনিক আইডেন্টেটি কার্ড’ তৈরি করা হবে। ওই কার্ডের সঙ্গে থাকবে মেমোরি চিপ। তাতে তৃতীয় শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পডুয়াদের পরীক্ষার ফলাফল নথিবদ্ধ করা থাকবে। রাজ্যের শিক্ষানীতিতে বলা হয়েছে, চিকিৎসকদের ক্ষেত্রে যেমন গ্রামে গিয়ে চিকিৎসা করা বাধ্যতামূলক, ঠিক তেমনই গ্রামীণ এলাকায় শিক্ষকতা করতে হবে শিক্ষকদের। শিক্ষক নিয়োগের সময়ই এই নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জন্য প্রমোশনের ভাবনাও রয়েছে সরকারের। কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন জাতীয় শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই সরব হয়েছিল তৃণমূল সরকার। জাতীয় শিক্ষানীতিকে ‘তুঘলকি’ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী। তবে জাতীয় শিক্ষানীতির কিছু প্রস্তাব গ্রহণ করেছে রাজ্য। ইতিমধ্যেই চার বছরের স্নাতক পাঠক্রম চালু হয়েছে রাজ্যে।

আরও পড়ুন
Advertisement