Suvendu Adhikari

বিজেপি নেতাকে ‘গ্রেফতার’ কেন? রাতেই মারিশদা থানায় শুভেন্দু, দিয়ে এলেন ‘অপহরণের মামলা’র হুমকি

পুলিশকে রীতিমতো ধমকের সুরে সুপ্রিম কোর্টের একাধিক নির্দেশ ও আইনের বিভিন্ন ধারার উল্লেখ করে বিজেপি নেতার গ্রেফতারিকে ‘বেআইনি’ বলে দাবি করেন বিরোধী দলনেতা।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
মারিশদা শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২৩ ২৩:২০
An image of Suvendu Adhikari

থানায় বসে রয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। —নিজস্ব চিত্র।

বিজেপির এক যুব নেতাকে মিথ্যা অভিযোগে ‘গ্রেফতার’ করা হয়েছে! এই অভিযোগ তুলে শনিবার রাতে পূর্ব মেদিনীপুরের মারিশদা থানায় গিয়ে পুলিশের সঙ্গে বিতণ্ডায় জড়ালেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পুলিশকে তাঁর হুঁশিয়ারি, ধৃত নেতার স্ত্রীকে দিয়ে তিনি অপহরণের অভিযোগে মামলা দায়ের করাবেন। প্রয়োজনে কলকাতা হাই কোর্টে রিট পিটিশনও করবেন তাঁরা। মামলাটি তিনি অনেক দূর নিয়ে যাবেন বলে জানিয়ে পুলিশকে ধমকানোর অভিযোগ উঠেছে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে। যদিও এই ঘটনা নিয়ে পুলিশের তরফে সরকারি ভাবে এখনও কিছু বলা হয়নি।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে দাবি, পূর্ব মেদিনীপুরেরই খেজুরি থেকে শনিবার বিকেল ৪টে নাগাদ বিজেপির এক যুব নেতাকে সাদা পোশাকে গ্রেফতার করে মারিশদা থানার পুলিশ। এই ঘটনার খবর পেয়ে রাত প্রায় সাড়ে ১০টা নাগাদ দাসপুর থেকে কাঁথির বাড়ি ফেরার পথে মারিশদা থানায় ঢুকে পড়েন শুভেন্দু। কর্তব্যরত ডিউটি অফিসারের কাছে দলীয় নেতার গ্রেফতারির ‘অ্যারেস্ট মেমো’ দেখতে চান তিনি। এর পরেই পুলিশের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়তে দেখা যায় তাঁকে। সেই সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন খেজুরির বিজেপি বিধায়ক শান্তনু প্রামাণিক-সহ ধৃত বিজেপি নেতার পরিজন ও একঝাঁক দলীয় সমর্থক। শুভেন্দু আসার খবরে মারিশদা থানার বাইরে ক্রমশ ভিড় জমাতে থাকেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা।

পুলিশকে রীতিমতো ধমকের সুরে সুপ্রিম কোর্টের একাধিক নির্দেশ ও আইনের বিভিন্ন ধারার উল্লেখ করে বিজেপি নেতার গ্রেফতারিকে ‘বেআইনি’ বলে দাবি করেন বিরোধী দলনেতা। তিনি সরাসরি পুলিশ আধিকারিককে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “আপনি সুপ্রিম কোর্টের আইন অমান্য করে ক্রিমিনাল প্রসিডিওর ভায়োলেট করেছেন। আমি ওঁর (বিজেপি নেতার) স্ত্রীকে দিয়ে এখনই কিডন্যাপের (অপহরণ) অভিযোগ দায়ের করাব।” সেই সময়েই পিছন থেকে এক পুলিশকর্মী কিছু বলতে গেলে তাঁকে থামিয়ে শুভেন্দুর মন্তব্য, “ডোন্ট ডিকটেট মি, ডিউটি অফিসার আমাকে বলুন। সিভিল ড্রেসে গিয়ে বাড়ির লোকের সই ছাড়া তুলে এনেছে। অ্যারেস্ট করেছে ৪টের সময়, এখন রাত সাড়ে ১০টা বাজে। আমি অ্যারেস্ট মেমো চেয়েছি। সেটা দিতে সাড়ে ছ’ঘণ্টা লাগে নাকি! ডিউটি অফিসার আর ওসির বিরুদ্ধে মামলা করব।”

শুভেন্দু থানার বাইরের বেঞ্চে বেশ কিছু সময় বসে থাকেন ‘অ্যারেস্ট মেমো’ হাতে পাওয়ার দাবিতে। তবে পুলিশের তরফে কোনও কাগজ না পেয়ে অবশেষে রাত ১১টার আগেই তিনি মারিশদা থানা থেকে বেরিয়ে যান। যাওয়ার আগে পুলিশকে তাঁর হুঁশিয়ারি, “আপনারা আইপিসি-সিআরপিসি মানেন না। আপনাদের সঙ্গে তা হলে আদালতেই আমার দেখা হবে। এই মামলাটি অনেক দূর যাবে।”

পরে বাইরে বেরিয়ে শুভেন্দু বলেন, “বাশগোড়াতে সভা ছিল। তার আগে বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানকার মন্ডল কমিটির সম্পাদক যুব নেতা রবীন মান্নাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে যে কাজ করা হয়নি আইন অমান্য করা হয়েছে। একেবারে সাদা পোষাকে তুলে নিয়ে গেল তাঁকে। দীর্ঘ ৫ ঘন্টা তাঁর কোনও খোঁজ মেলেনি। সব শেষে রাত্রি প্রায় ১০টা নাগাদ মারিশদা থানায় থাকা কয়েক জন বিজেপির শুভানুধ্যায়ী আমাকে ম্যাসেজ করে জানান, এই থানায় রবীন মান্নাকে রাখা হয়েছে। আমি থানায় ঢুকে যেতেই ডিউটি অফিসার থরথর করে কাঁপছেন। এদের বিরুদ্ধে আমরা অবশ্যই আদালতে যাব।” তাঁর সংযোজন, “আমি রবিবার কাঁথি আদালতে কিডন্যাপের মামলা দায়ের করব ধৃত নেতার স্ত্রীকে দিয়ে। সোমবার হাই কোর্ট খুললে সেখানে আমি রিট পিটিশন দাখিল করব।” আগামী সোমবার খেজুরি বন্ধের ডাকও দিয়েছেন শুভেন্দু।

আরও পড়ুন
Advertisement