তৃণমূলকে কটাক্ষ শুভেন্দুর, আক্রমণের তির সিপিএমের দিকেও। ফাইল চিত্র।
ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচনের ফলঘোষণার পরেই তৃণমূলের জাতীয় দলের তকমা তুলে নেওয়ার জন্য জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সোমবার সন্ধ্যায় একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কমিশন জানিয়ে দেয় তৃণমূল আর জাতীয় দল নয়। এ বার এই বিষয়েও তৃণমূলকে কটাক্ষ করলেন শুভেন্দু। বুধবার উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জের সভা থেকে বিদ্রুপের সুরে তিনি বলেন, “পয়লা বৈশাখের আগেই দলটা পশ্চিমবঙ্গে সীমাবদ্ধ হয়ে গেল।” তার পরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লব্জ ধার করে তিনি বলেন, “এর জন্য তৃণমূল কংগ্রেসকে আমরা শুভনন্দন জানাই।” এ ছাড়াও স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে রাজ্যে দুর্নীতি প্রসঙ্গে তৃণমূলের উদ্দেশে তোপ দাগেন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক।
তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় এই যে, সম্প্রতি তৃণমূলের অপশাসন এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক দিয়েছিলেন শুভেন্দু। একতার ডাকে সাড়া দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন ‘বামপন্থী বন্ধু’দেরদের প্রতিও। বুধবার অবশ্য তৃণমূলের পাশাপাশি সিপিএমকেও আক্রমণ করেন শুভেন্দু। বলেন, সিপিএম রাজ্যে ২ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ করে চলে গিয়েছিল। তৃণমূল সেটাই বাড়িয়ে ৬ লক্ষ কোটি করেছে।” কালিয়াগঞ্জের সভামঞ্চ থেকে আরও এক বার ‘নো ভোট টু মমতা’র ডাক দিয়ে তৃণমূলকে একটাও ভোট না দেওয়ার আর্জি জানান তিনি। আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটের কথা মাথায় রেখে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের উজ্জীবিত করে শুভেন্দু বলেন, “বুথকেন্দ্র আর গণনাকেন্দ্রের দায়িত্ব আমার। বাকিটা আপনারা বুঝে নিন। চুরি করতে না পারলে সব জায়গাতেই পদ্ম ফুটবে।”
রাজ্যে দুর্নীতি প্রসঙ্গে তৃণমূলের সমালোচনা করে শুভেন্দু জানান, কেন্দ্রের পাঠানো টাকা ডাকাতি করে কেড়ে নিয়ে নিজেদের নামে চালাচ্ছে রাজ্য। তাঁর অভিযোগ, উপভোক্তাদের কাছে কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া সাহায্য পৌঁছে দিচ্ছে না রাজ্য। এমনকি শৌচাগার তৈরি করার টাকাও তৃণমূল লুট করেছে বলে অভিযোগ তোলেন শুভেন্দু। দুর্নীতিতে যুক্ত থাকার অভিযোগে করণদিঘি তৃণমূল বিধায়ক গৌতম পালকেও আক্রমণ করেন তিনি। বিরোধী দলনেতার নিশানা থেকে বাদ পড়েননি উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসকও। বুধবার সকালেই মিড-ডে মিলের টাকা খরচে অনিয়ম নিয়ে সরব হয়ে একটি টুইট করেছিলেন বিরোধী দলনেতা। টুইটে তিনি লেখেন, ‘‘আগেই বলেছিলাম! শিক্ষা মন্ত্রকের জয়েন্ট রিভিউ রিপোর্টে ১৬ কোটি মিড-ডে মিল বাবদ ১০০ কোটির দুর্নীতির অভিযোগ। ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর, ছয় মাসে দুর্নীতি হয়েছে।” শুভেন্দুকে কটাক্ষ করে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘যাঁকে প্রকাশ্য টাকা নিতে দেখা গিয়েছে, যাঁর নাম সিবিআই-এর কাছে আছে, সারদায় সুদীপ্ত সেন জানালেন কত টাকা নিয়েছেন ধমকে চমকে, তিনি বড় বড় কথা বলছেন।’’