কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ শুভেন্দু অধিকারী। নিজস্ব চিত্র।
পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরে শুভেন্দু অধিকারীর কনভয়ের একটি গাড়ির ধাক্কায় এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই ঘটনায় সিবিআই তদন্ত চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হলেন বিরোধী দলনেতা। তাঁর দাবি, গোটা ঘটনার তদন্তভার কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হোক। ঘটনাচক্রে, ওই ঘটনার তদন্তভার রবিবারই সিআইডিকে দেওয়া হয়েছে।
আদালত সূত্রে খবর, শুভেন্দুর আবেদনের ভিত্তিতে মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। আদালতে বিরোধী দলনেতার আইনজীবীর বক্তব্য, যে রাস্তা দিয়ে তাঁর মক্কেলের কনভয় যাচ্ছে, সেখানে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করছে না রাজ্য সরকার। শুভেন্দুর আবেদনের ভিত্তিতে আগামী বুধবার এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে উচ্চ আদালতে।
বৃহস্পতিবার রাতে দিঘা-নন্দকুমার ১১৬বি জাতীয় সড়কে পথদুর্ঘটনায় ভৈরবপুর গ্রামের বাসিন্দা শেখ ইসরাফিলের (৩৩) মৃত্যু হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, শুভেন্দুর কনভয়ের সামনের গাড়িটি তাঁকে ধাক্কা দেয়। অভিযোগ, কনভয়টি প্রচণ্ড গতিতে যুবককে ধাক্কা মারার পর ঘটনাস্থলে আর দাঁড়ায়নি। দুর্ঘটনার পরেই সেখান থেকে চলে গিয়েছে কনভয়। গুরুতর জখম অবস্থায় ইসরাফিলকে এড়াশাল গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। শনিবার দুর্ঘটনাস্থলে যায় ফরেন্সিক দল। সেখানে গাড়ির চাকার দাগ এবং সংলগ্ন এলাকার নমুনা সংগ্রহ করে তারা।
কনভয়ের যে গাড়ির ধাক্কায় যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ, তমলুক থানায় রাখা সেই গাড়িটিও পরীক্ষা করে দেখেন রাজ্য ফরেন্সিক দলের সদস্যেরা। গাড়িটির ক্ষতিগ্রস্ত অংশ, চাকা এবং বিভিন্ন যন্ত্রাংশের পরীক্ষা করেন তাঁরা। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার সময় গাড়ির গতিবেগ কত ছিল, জেলা পরিবহণ দফতরের মোটর ভেহিক্যালের আধিকারিকেরা সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখছেন।
যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় শুক্রবার অভিযুক্ত গাড়িচালক আনন্দকুমারকে গ্রেফতার করেছিল চণ্ডীপুর থানার পুলিশ। সেই দিনই তাঁকে তমলুক আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক ১ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। এর পর শনিবার আবার ধৃত গাড়িচালককে আদালতে পেশ করা হয়। সওয়াল-জবাবের পর বিচারক ব্যক্তিগত ৫ হাজার টাকার বন্ডে ধৃতের জামিন মঞ্জুর করেন।
বিরোধী দলনেতার দফতর সূত্রে দাবি, যে গাড়িটির বিরুদ্ধে ধাক্কা মারার অভিযোগ উঠেছে, সেটি বুলেটপ্রুফ গাড়ি। সেই কারণেই সাধারণ গাড়ির তুলনায় সেটি বেশি ভারী। এ ছাড়াও ওই গাড়িটি শুভেন্দুর কনভয়ের থেকে অন্তত দুই থেকে আড়াই কিলোমিটার দূরত্ব বজায় রেখে চলে। গাড়িটি তুলনামূলক ভারী বলেই দুর্ঘটনাগ্রস্ত ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।