বুধবার তাঁর বসিরহাট এসপি অফিস অভিযানে উত্তপ্ত হয়েছিল গোটা এলাকা। বৃহস্পতিবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের যাওয়ার কথা সন্দেশখালিতে। তার আগেই মঙ্গলবার রাত পৌনে ১২টা থেকে সন্দেশখালি ২ নম্বর ব্লকের ১৯টি জায়গায় জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা। এর মধ্যেই বিজেপির রাজ্য সভাপতির অভিযান ঘিরে সতর্ক রয়েছে পুলিশও। টাকিতে একটি হোটেলে রাত্রিবাস করেছেন সুকান্ত। সেই হোটেলের সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সেই হোটেলে সরস্বতী পুজোর আয়োজন করেছেন সুকান্ত, বলে খবর। সন্দেশখালির কয়েক জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি হওয়ার খবর লিখিত ভাবে সুকান্তকেও জানানো হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সুকান্ত কি সন্দেশখালি যাওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করবেন, নাকি অশান্ত এলাকায় যাবেন, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।
বুধবার ছিল বিজেপির বসিরহাটের এসপি অফিস ঘেরাও কর্মসূচি। সড়কপথে গেলে পুলিশ আটকে দিতে পারে, সেই আশঙ্কায় উত্তর ২৪ পরগনার হৃদয়পুর স্টেশন থেকে হাসনাবাদ লোকালে করে সুকান্ত পৌঁছে যান বসিরহাট। স্টেশন থেকে কিছুটা বাইকে, তার পর হেঁটে পৌঁছে যান এসপি অফিসের কাছাকাছি। তার পরেই শুরু হয় ধুন্ধুমার। পুলিশ বাধা দিলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। লাঠিচার্জ করে পুলিশ, পাল্টা ইট ছোড়ার অভিযোগ বিজেপি কর্মী, সমর্থকদের বিরুদ্ধে। গোটা দিন গোলমাল চলে। তার পর মধ্যরাতে সুকান্তকে বন্ডে সই করিয়ে মুক্তি দেয় পুলিশ। রাত্রিবাস করতে সুকান্তকে নিয়ে যাওয়া হয় টাকির একটি হোটেলে। বুধবার সকালে সেই হোটেল থেকে বেরিয়েই সন্দেশখালি যাওয়ার কথা ছিল সুকান্তের। কিন্তু ১৪৪ ধারা জারি হওয়ায় তাঁর যাত্রা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে সুকান্তের হোটেলের সামনে অতিরিক্ত পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। প্রশাসনের তরফ থেকে লিখিত ভাবে তাঁকে সন্দেশখালি না যাওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে। সেই চিঠি নিয়ে হোটেলে অপেক্ষা করছেন প্রশাসনের এক কর্মী। এ দিকে জানা যাচ্ছে, যে হোটেলে সুকান্তেরা আছেন, সেখানেই সরস্বতী পুজোর আয়োজন করা হয়েছে। সুকান্তের পুজো করার কথা। তার পর তিনি সন্দেশখালির দিকে রওনা হতে পারেন বলে জানা যাচ্ছে। যদিও তিনি আদৌ প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সন্দেশখালি যাবেন কি না, তা এখনও পরিষ্কার নয়। বুধবার সকাল থেকে বিজেপির তরফেও এ নিয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হয়নি। ওই হোটেলে উপস্থিত বিজেপি নেত্রী ফাল্গুনী পাত্র বলেন, ‘‘আমরা সন্দেশখালি গিয়ে মা, বোনেদের দুঃখের কথা শুনব ঠিক ছিল। কিন্তু দেখছেন কেমন করে পুলিশ ঘিরে রেখেছে। বিদ্যার দেবীর আরাধনার দিন আমাদের এ ভাবে আটকে দেওয়া হচ্ছে। প্রশাসন আমাদের গৃহবন্দি করে রেখেছে। কিন্তু আমরা ভেদাভেদ করব না। সুকান্ত দা নিজে পুজোয় থাকবেন। আমরা পুজোর পর প্রসাদ পুলিশের হাতে তুলে দেব।’’