ব্রাত্য বসু। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-এর তৈরি খসড়া নিয়ে রিপোর্ট দিল রাজ্য সরকার গঠিত আট সদস্যের কমিটি। ইউজিসির খসড়ার ১০টি বিষয় নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে তারা। কমিটির বক্তব্য, বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে তিন জন নয়, পাঁচ জনের কমিটি গঠন করা উচিত। রাজ্য সরকার গঠিত কমিটি যে রিপোর্ট দিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করে তা ইউজিসির কাছেও পাঠানো হবে বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
ইউজিসির খসড়াকে ‘অগণতান্ত্রিক’ বলেও মন্তব্যে করেছেন ব্রাত্য। তিনি বলেন, ‘‘ওই খসড়ায় যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে অবমাননা করা হয়েছে। শিক্ষা যুগ্ম তালিকাভুক্ত। মুখ্যমন্ত্রী এক জন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। তাঁর প্রতিনিধিকেই সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। ইচ্ছে করে কতগুলি রাজ্যকে নিশানা করছে কেন্দ্রীয় সরকার।’’ শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য, উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে যে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করার কথা বলা হচ্ছে, তাতে আচার্য, ইউজিসি এবং সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি থাকবেন। রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিনিধিও থাকবেন। কারণ জমি দেওয়া থেকে বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ সবটাই রাজ্যের তত্ত্বাবধানে হয়ে থাকে।
রাজ্যের কমিটি যে রিপোর্ট দিয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, উপাচার্য নিয়োগের জন্য ‘এলিজিবিলিটি এবং সিলেকশন’ কমিটি গঠন করা জরুরি। রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিনিধিত্ব থাকতে হবে। উত্তরপ্রদেশের ইলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়েও মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের প্রতিনিধি থাকা উচিত। একই ভাবেবিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়েও এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিনিধি থাকা দরকার। আবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে ইউজিসি এবং রাজ্যপালের প্রতিনিধিত্ব থাকতে হবে।
ইউজিসির খসড়া প্রস্তাবে নিয়োগ কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে খোদ উপাচার্যকে। তা নিয়েও আপত্তি তুলেছে রাজ্যের কমিটি। তাদের বক্তব্য, নিয়োগ কমিটির শীর্ষে উপাচার্য থাকতে পারেন না। পাশাপাশি কমিটির বক্তব্য, সহকারী অধ্যাপক নিয়োগের ক্ষেত্রে ডক্টরেট ডিগ্রি বাধ্যতামূলক করা উচিত নয়। এ ছাড়া লাইব্রেরিয়ান এবং ফিজ়িক্যাল ইনস্ট্রাক্টরদের শিক্ষকের পদমর্যাদা দেওয়ারও দাবি তুলেছে কমিটি।
রাজ্যের কমিটির সদস্য ওমপ্রকাশ মিশ্র বলেন, ‘‘পাঁচ সদস্যের কমিটিতে যদি ওরা সহমত না হয়, তা হলে বিকল্প হিসাবে যে বিশ্ববিদ্যালয়ে যে আইন রয়েছে, সেই আইনকে মান্যতা দিতে হবে উপাচার্যের নিয়োগের ক্ষেত্রে। তা এই খসড়াতেই উল্লেখ করা হয়েছে। রিপোর্ট রাজ্য সরকারকে আজ জমা দেওয়া হল।’’