মৃত তৃণমূল নেতা আবুল নাসার। —ফাইল চিত্র।
এক সপ্তাহেও কাটল না ধন্দ। ময়না তদন্তের রিপোর্ট চূড়ান্ত নয়। তাই উত্তর ২৪ পরগনার আমডাঙার তৃণমূল নেতা আবুল নাসার আত্মহত্যা করেছেন, না তাঁকে খুন করা হয়েছে, তা স্পষ্ট নয় বলে আদালতে জানাল পুলিশ। আদহাটা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সুরাইয়া পারভিনের স্বামী আবুলকে খুনের অভিযোগে ধৃত আতাউর মণ্ডল এবং তনুশ্রী মুখোপাধ্যায়কে শুক্রবার আর হেফাজতেও চায়নি পুলিশ। দু’জনকেই জেল হেফাজতে পাঠিয়েছে কাঁথি মহকুমা আদালত।
গত ২০ ডিসেম্বর মন্দারমণির রিসর্টে আবুলের দেহ উদ্ধার হয়।তাঁর মায়ের দায়ের করা খুনের অভিযোগের ভিত্তিতে আবুলেরসঙ্গী আতাউর ও তনুশ্রীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তনুশ্রী পুলিশের কাছে দাবি করেন, তিনি শৌচাগারে গিয়েছিলেন। তখনই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন আবুল। যদিও সে সময় আতাউর কী করছিলেন, তা স্পষ্ট নয়।
পুলিশ হেফাজতের মেয়াদ শেষে, শুক্রবার ধৃতদের আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। মামলার কেস ডায়েরি আদালতে জমা দেয় পুলিশ। ধৃতদের জামিনের আবেদন করে আইনজীবী শেখ ইকবাল হোসেন দাবি করেন, আবুল আত্মহত্যা করেছেন। জামিনের বিরোধিতা করে সরকারি কৌঁসুলি বলেন, ময়না তদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট আসেনি। তাই জামিন দেওয়া ঠিক হবে না। ধৃতদের ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয় আদালত।
পুলিশ সূত্রের খবর, ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে আত্মহত্যার উল্লেখ রয়েছে। তবে চূড়ান্ত রিপোর্ট এলে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হবে। তত দিনে ভিসেরা-পরীক্ষার রিপোর্টও আসার কথা। তখন প্রয়োজনে, ফের ধৃতদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হতে পারে।
এ বিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশের ডেপুটি সুপারিন্টেন্ডেন্ট (ডিসিপ্লিন অ্যান্ড ট্রেনিং) আবু নুর হোসেন বলেন, ‘‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষ। ময়না তদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট এলে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক হবে। যাঁদের নাম এফআইআরে রয়েছে বা যাঁরা ঘটনাস্থলে ছিলেন তাঁদের ভূমিকা দেখা হচ্ছে।’’
আবুলের স্ত্রী সুরাইয়া এ দিনও দাবি করেন, ‘‘আমরা নিশ্চিত, ওকে খুন করা হয়েছে। পুলিশ কী তদন্ত করছে বুঝছি না।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘আমাদের সঙ্গে এখনও মন্দারমণি উপকূল থানার পুলিশ যোগাযোগ করেনি। আর আতাউর মণ্ডলকে আমি পাঠিয়েছিলাম। পুলিশ তাঁকে ফাঁসিয়েছে।’’
ডিএসপি (ডি অ্যান্ড টি) অবশ্য বলেন, ‘‘অভিযোগকারিণীর সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। আবুলের পরিবারের আইনজীবীর সঙ্গে একাধিক বার যোগাযোগ করা হয়েছে। প্রয়োজনে, ফের যোগাযোগ করা হবে।’’