Online Transfer Portal

২৮ মাস বন্ধ থাকার পর ফের চালু হচ্ছে ‘উৎসশ্রী’ পোর্টাল, আপাতত শুধু পারস্পরিক বদলিই হবে

২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে বন্ধ ছিল শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীদের বদলি সংক্রান্ত অনলাইন পোর্টাল উৎসশ্রী। ২০২৫ সালের শুরু থেকেই ওই পোর্টালের মাধ্যমে পারস্পরিক বদলি শুরু হল।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২৫ ১৬:২৫
অনলাইনে শিক্ষক-শিক্ষিকার বদলির পোর্টাল চালু হল প্রায় আড়াই বছর পর।

অনলাইনে শিক্ষক-শিক্ষিকার বদলির পোর্টাল চালু হল প্রায় আড়াই বছর পর। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

প্রায় আড়াই বছর বন্ধ থাকার পরে অবশেষে আবার চালু হচ্ছে রাজ্য সরকারের উৎসশ্রী পোর্টাল। শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীদের বদলি সংক্রান্ত এই পোর্টাল ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে বন্ধ রাখা হয়েছিল। ২০২৫ থেকেই ওই পোর্টাল চালু করে দেওয়া হল। তবে সব ধরনের বদলিতে এখনই সায় দেয়নি রাজ্য সরকার। চালু করা হয়েছে কেবল পারস্পরিক বদলি (মিউচুয়াল ট্রান্সফার)। সাধারণ (জেনারেল ট্রান্সফার) এবং বিশেষ (স্পেশাল ট্রান্সফার) বদলি বন্ধই থাকছে। ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত এই নির্দেশিকা কার্যকর থাকবে। তার পর আবার নতুন নির্দেশিকা জারি করা হতে পারে স্কুল শিক্ষা দফতর থেকে।

Advertisement

রাজ্যের শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের বদলির জন্য উৎসশ্রী পোর্টাল চালু করা হয়েছিল ২০২১ সালে। এই পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনেই রাজ্যের যে কোনও প্রান্তে বদলির আবেদন করতে পারেন সরকারি কর্মীরা। দু’জন কর্মী পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে নিজেদের কর্মস্থান বদল করতে চাইলে তাকে বলা হয় ‘পারস্পরিক বদলি’। এই বদলির ফলে কর্মীদের ইচ্ছাও পূরণ হয়, আবার সরকারি প্রতিষ্ঠানে কোনও আসনও খালি হয় না। সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী, আপাতত শুধু এই ধরনের বদলিই করা যাবে উৎসশ্রী পোর্টালের মাধ্যমে।

কোনও প্রার্থী সাধারণ ভাবে কর্মস্থান বদলের আবেদন জানালে বা বিশেষ কোনও কারণে (শারীরিক, বৈবাহিক বা অন্য কোনও কারণ) বদলি চাইলে তাঁর বর্তমান প্রতিষ্ঠানে আসন ফাঁকা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এই দুই বদলি আপাতত বন্ধই থাকছে। স্কুল শিক্ষা দফতরের পাশাপাশি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদও একই নির্দেশিকা জারি করেছে গত ৩১ ডিসেম্বর। ১ জানুয়ারি থেকেই উৎসশ্রী পোর্টাল পারস্পরিক বদলির জন্য চালু হয়ে গিয়েছে। প্রাথমিক স্তর থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত সরকারি শিক্ষক-শিক্ষিকারা পোর্টালের মাধ্যমে বদলির আবেদন কার্যকর করতে পারবেন।

সাধারণ বা বিশেষ বদলি কেন চালু করা হল না? সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, উচ্চ প্রাথমিকে পার্শ্বশিক্ষকদের নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে। চলছে কাউন্সেলিংও। নিয়োগ সংক্রান্ত সমস্যার কারণেই আপাতত এই দু’ধরনের বদলি বন্ধ রাখার আবেদন জানানো হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সেন্ট্রাল স্কুল সার্ভিস কমিশন (ডব্লিউবিসিএসএসসি) থেকে। এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত হবে আগামী জুন মাসে।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালে যখন উৎসশ্রী পোর্টাল বন্ধ হয়েছিল, সেই সময় থেকেই সাধারণ, পারস্পরিক এবং বিশেষ বদলির অনেক আবেদন পোর্টালে জমা পড়ে আছে। সাধারণ বা বিশেষ বদলি চালু না-হওয়ায় সেই সংক্রান্ত আবেদনগুলি অফলাইন মাধ্যমে সমাধানের দাবি জানাচ্ছেন কর্মীরা। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘আমরা অনেক দিন ধরেই এসএসসি এবং শিক্ষা দফতরের কাছে মিউচুয়াল ট্রান্সফার চালু করার দাবি করছি। কারণ, এতে শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী বা প্রতিষ্ঠানের কোনও ক্ষতি হয় না। গত আড়াই বছর ধরে এটা আটকে রাখা হয়েছে। অবশেষে তা চালু হচ্ছে জেনে আনন্দিত হলাম। তবে পোর্টালে যে সব জেনারেল ট্রান্সফারের আবেদন জমা পড়ে আছে, অফলাইনে সেগুলির সমাধানের জন্য শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাচ্ছি।’’

প্রধান শিক্ষক সংগঠনের সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, ‘‘মিউচুয়াল ট্রান্সফার চালু হয়েছে, এতে আমরা খুশি। বৈধ-অবৈধ তালিকা, যা সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন, সেই তথ্য যেন সরকারের কাছে সঠিক ভাবে থাকে, যাতে মিউচুয়াল ট্রান্সফারের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বজায় থাকে।’’

Advertisement
আরও পড়ুন